Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বাড়ির দোতলায় পুরোদস্তুর অস্ত্র কারখানার খোঁজ

পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতে নাদিয়াল থানার ওয়ারিশ নগরের চার নম্বর গলির একটি বাড়ির দোতলায় তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় বেআইনি পিস্তল, পিস্তলের দু’টি ম্যাগাজিন ও অস্ত্র তৈরির বহু সরঞ্জাম।

উদ্ধার হওয়া অস্ত্র। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার হওয়া অস্ত্র। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২০ ১১:০০
Share: Save:

এলাকার অধিকাংশ ঘরে কাজ বলতে থান কেটে জামাকাপড় সেলাই আর শাড়িতে চুমকি বসানো। তাই একটি বাড়িতে ত্রিপল টাঙিয়ে কী কাজ হচ্ছে, দেখার ফুরসত পাননি স্থানীয়েরা। কিন্তু সেই দোতলার ঘর থেকেই যখন পাওয়া গেল অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির একাধিক সরঞ্জাম, চোখ কপালে উঠল তাঁদের! এত দিন বেআইনি অস্ত্র তৈরির কারখানার হদিস মিলছিল শহরতলিতে। এ বার তার খোঁজ পাওয়া গেল খোদ কলকাতা পুলিশের এলাকায়।

পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতে নাদিয়াল থানার ওয়ারিশ নগরের চার নম্বর গলির একটি বাড়ির দোতলায় তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় বেআইনি পিস্তল, পিস্তলের দু’টি ম্যাগাজিন ও অস্ত্র তৈরির বহু সরঞ্জাম। পুলিশের অভিযোগ, ওই ঘর ভাড়া নিয়ে অস্ত্র তৈরি করত আদতে মুঙ্গেরের বাসিন্দা আব্দুল কায়ুম ওরফে মুন্না নামে এক যুবক। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তল্লাশির সময়েও বছর ছাব্বিশের ওই যুবক অস্ত্র তৈরি করছিল বলে অভিযোগ।

তদন্তকারীরা জানান, আব্দুলের হেফাজত থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একটি বন্দুকের ব্যারেল, ইস্পাতের পাতলা চাদর, লোহার রড, হাতুড়ি, করাত, ব্লেড, স্প্রিং এবং অস্ত্র তৈরির আরও কিছু সরঞ্জাম। সম্প্রতি লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখার গোয়েন্দারা খবর পান, মুঙ্গের থেকে আসা এক যুবক নাদিয়ালের ওয়ারিশ নগর ও আয়ুবনগর এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে অস্ত্র তৈরি করছে। ওই যুবক ও তার ডেরা সম্পর্কে আরও নির্দিষ্ট খবর পাওয়ার জন্য কিছু দিন অপেক্ষা করেন তাঁরা। দিন কয়েক আগে সাহায্য চাওয়া হয় নাদিয়াল থানার অফিসারদেরও।

সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ ‘সোর্স’-কে নিয়ে ওয়ারিশ নগরের চার নম্বর গলির ওই ঘরে হানা দেন গুন্ডা দমন শাখার গোয়েন্দারা ও নাদিয়াল থানার অফিসারেরা। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক জেরায় আব্দুল জানিয়েছে, তার বাড়িওয়ালা ও তাঁর সঙ্গীরাও অস্ত্র তৈরির কাজে যুক্ত। তবে তাঁদের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি।

পুলিশ সূত্রের খবর, জেরায় আব্দুল আরও জানিয়েছে, তার বাড়ি মুঙ্গের জেলার তারাপুর থানা এলাকার রামপুর গ্রামে। সেখানেই সে অস্ত্র তৈরির কাজ শিখেছে। বছরখানেক আগে বেশি টাকা রোজগারের আশায় সপরিবার নাদিয়াল এলাকায় এসে আয়ুবনগরে ঘর ভাড়া নেয়। পরে ওয়ারিশ নগরের চার নম্বর গলিতে দোতলা একটি বাড়ির উপরের তলা ভাড়া নিয়ে যন্ত্রপাতি বসিয়ে অস্ত্র তৈরি শুরু করে।

ধৃত যুবককে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলা হয়েছিল। সরকারি কৌঁসুলি জানান, মুঙ্গের থেকে কারা কোন চুক্তিতে অভিযুক্তকে কলকাতায় নিয়ে এসেছে, কোথায় বেআইনি অস্ত্র বিক্রি করা হত, কারা সেই অস্ত্র কিনত— এ সব কিছু জানার জন্য তদন্তকারীরা আব্দুলকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার আবেদন জানিয়েছেন। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করুক। বিচারক আবেদন মঞ্জুর করে অভিযুক্তকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Ammunition Factory Kolkata Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE