ছেলের সামনেই মাকে কটুক্তি,শারীরিক হেনস্থা। নিজস্ব চিত্র।
অটোতে পর্যাপ্ত যাত্রী হয়নি। তাই ছাড়তে দেরি হবে। অন্য দিকে ছেলের পরীক্ষা। স্কুলে পৌঁছতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। মা তাই ছেলেকে নিয়ে অটো থেকে নেমে, একটা বাসে ওঠার চেষ্টা করেন। বাসটা ধরতে পারেননি শেষ পর্যন্ত। কিন্তু এই বাস ধরতে যাওয়ার ফল যে এমন হতে পারে, কল্পনাও করেননি তিনি...।
অটো থেকে নেমে বাস ধরতে যাওয়ার ‘অপরাধে’ এর পর মা আর ছেলেকে পর পর অটোতে উঠতে বাধা দেওয়া হল। একটার পর একটা অটো আসছে, কিন্তু উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। শুধু বাধা দেওয়াই নয়, রীতিমত ধাক্কাও মারা হল তাঁকে। অভিযোগ, ছেলের সামনেই মাকে বিশ্রী কটূক্তি করেন অটো চালকরা। তাঁকে শারীরিক ভাবেও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে যাদবপুর এইট-বি বাসস্ট্যান্ডে।
অভিযোগ, অন্য অটোচালকদের সামনে ঘটনা ঘটলেও, তাঁরা প্রতিবাদ করা দূরে থাক উল্টে অভিযুক্ত অটো চালকদের মদত দিয়েছেন। অটোতে উঠতে না পেরে যখন সেই মহিলা রীতিমত কান্নাকাটি করছেন, তখন বাকি যাত্রীরাও মহিলার দিকে ফিরেও তাকাননি বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: ‘এ ভাবে প্রাণটা চলে গেল?’, ডুকরে উঠলেন মনীষার মা
যাদবপুরের নস্করপাড়ার বাসিন্দা এই মহিলা সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ এইট-বি অটো স্ট্যান্ডে পৌঁছন। তাঁর ছেলে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের রামমোহন মিশন স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।
নিগৃহীত মহিলা বলেন, “আজ ছেলের অঙ্ক পরীক্ষা ছিল। সওয়া সাতটা থেকে পরীক্ষা। তাই তাড়াহুড়ো ছিল। অটোতে ওঠার পর দেখলাম কোনও যাত্রী নেই। মিনিট খানেক বসার পর দেখি পেছনে একটা ১বি রুটের বাস আসছে। তাই অটো থেকে নেমে সেই বাসে উঠতে চেষ্টা করি।”
কিন্তু তিনি সেই বাস ধরার আগেই বাস ছেড়ে দেয়। ফিরে এসে অটোতে উঠতে যান মহিলা। আর তখনই শুরু হয় বচসা। নিগৃহীতার দাবি, “আমি অটোতে উঠতে যেতেই অটোর চালক আমাকে উঠতে না করেন। আমি প্রতিবাদ করে ওঠার চেষ্টা করতেই আমাকে ধাক্কা মারেন সেই অটো চালক।” শুধু সেই অটো নয়। অভিযোগ, এর পর আরও চারটি অটোতে ওঠার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু কোনও অটোতে উঠতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। মহিলা বলেন, “অটো চালকরা আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। উঠতে গেলে আমাকে বুকে ধাক্কা মেরে পর্যন্ত বাধা দেয়।
এই সময়ে আরও অনেকে ছিলেন অটো স্ট্যান্ডে। কিন্তু সবাই সবার মত নিজের নিজের গন্তব্যে রওনা হয়ে গিয়েছেন। কেউ এই মহিলাকে সাহায্যের চেষ্টাও করেননি বলে অভিযোগ। নস্করপাড়ার বাসিন্দা এই মহিলা টেলিফোনে বলেন, “ছেলের দেরি হয়ে যাচ্ছিল। আমি হাত জোড় করে অনুরোধ করছিলাম সবাইকে। আমি অপমানে আতঙ্কে কেঁদে ফেলেছিলাম। তখন এক তরুণ অটোচালক আমাকে জায়গা দেন। পরীক্ষা শুরু হওয়ার মিনিট দুয়েক আগে কোনও মতে পৌঁছতে পারি স্কুলে।”
দেখুন ভিডিয়ো
দমদম মিউনিসিপ্যাল হাসপাতালের কর্মী এই মহিলা স্কুল থেকে ফেরার পরে অভিযোগ জানিয়েছেন যাদবপুর থানায়। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁরা তদন্ত শুরু করেছেন। কিন্তু কেন এমন ঘটল? যাত্রীর অটো থেকে নেমে যাওয়ার অধিকারও অটোচালকরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন কি না, সেই প্রশ্নের কোনও জবাব এখনও পাওয়া যায়নি অটো ইউনিয়নগুলির তরফ থেকে। তাঁরা বলেছেন, তাঁরা খোঁজ নিয়ে দেখছেন।
আরও পড়ুন: ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল বৃদ্ধের
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy