Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta High Court

জামিন বিতর্কে আইনজীবী

অভিযুক্ত চার জনকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। না হলে পুলিশকে দিয়ে গ্রেফতার করানোর নির্দেশ দেন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:৫৮
Share: Save:

মক্কেলের দেওয়া ওকালতনামা ছাড়াই অভিযুক্তের জামিন করানোর অভিযোগ উঠল। অভিযোগ আনলেন হাইকোর্টের আইনজীবী মানস বর্মণ। ওই আইনজীবীর অভিযোগ, তাঁর মক্কেলের নাম করে কোনও ওকালতনামা ছাড়াই মীমাংসা হয়ে যাওয়ার ভুয়ো পিটিশন দাখিল করে অভিযুক্তদের জামিন করিয়েছেন এক আইনজীবী।

ঘটনার সূত্রপাত গত ১৫ অগস্ট। ওই দিন সকালে নারকেলডাঙা থানা এলাকায় মহম্মদ মেহমুদ ওরফে গাঁজা মেহমুদ নামে এক দুষ্কৃতী তার দলবল নিয়ে ওয়াহিদ ও সাহিদ হোসেন–সহ বেশ কয়েক জনের উপরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। সাহিদ নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে গেলে তাঁর বাঁ হাতের আঙুল কেটে বেরিয়ে যায়। তাঁকে আরও কয়েক জন বাঁচাতে আসেন। তাঁদের উপরেও ওই দুষ্কৃতীরা চড়াও হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওয়াহিদ। পাল্টা অভিযোগ দায়ের হয় ওয়াহিদ হোসেন-সহ বাকিদের বিরুদ্ধে।

ওই ঘটনায় পুলিশ মহম্মদ আলিশান, মহম্মদ দানিশ, রিয়াজ় ওরফে চাপড় রিয়াজ় এবং মহম্মদ ওমর ওরফে হাতি রাজা, এই চার জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের আদালতে হাজির করা হলে ২৪ অগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

কিন্তু অভিযোগ, পরের দিনই ২৫ অগস্ট প্রবীর মুখোপাধ্যায় নামে এক আইনজীবী মানস বর্মণের মক্কেলের হয়ে ভুয়ো পিটিশন তৈরি করে অভিযুক্তদের হয়ে জামিনের আবেদন করেন। তাতে তিনি জানান, আদালতের বাইরে দু’পক্ষের মীমাংসা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু যা সত্যি নয় বলে দাবি মানসবাবুর। তাঁর আরও দাবি,

৩২৬ ধারার অভিযুক্তদের জামিন ম্যাজিস্ট্রেট দিতে পারেন না। কিন্তু কী করে সেই জামিন হয়ে গেল, এই প্রশ্ন তুলে ফের ২৬ তারিখে তিনি এসিজেএমের দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত পঞ্চম বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে জামিনের নির্দেশ প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু তা গ্রাহ্য হয়নি। আর সেই আবেদনের ভিত্তিতে তিনি অতিরিক্ত জেলা বিচারক জীমূতবাহন বিশ্বাসের আদালতে ওই জামিনের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেন।

মানসবাবু জানান, সেখানেই খারিজ হয়ে যায় চার জনের জামিনের নির্দেশ। অতিরিক্ত জেলা বিচারক নির্দেশ দেন দু’দিনের মধ্যে

অভিযুক্ত চার জনকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। না হলে পুলিশকে দিয়ে গ্রেফতার করানোর নির্দেশ দেন। বিচারক শিয়ালদহের এসিজেএম-কে একইসঙ্গে বিচারবিভাগীয় নথি জালিয়াতি করার জন্য ও আদালতে মিথ্যে বলার জন্য অপরপক্ষের আইনজীবী প্রবীরবাবু এবং অন্যদের বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় তদন্তের

নির্দেশ দেন।

কিন্তু দু’দিনে অভিযুক্তেরা আত্মসমর্পণ না করায় এসিজেম ওয়ারেন্ট জারি করেছেন বলে মানসবাবু জানিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওই চার জনকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করতে হবে। একই সঙ্গে জিআরও-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনারকে(গোয়েন্দা) বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী।

ঘটনার কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়ে প্রবীরবাবু বলেন, ‘‘একটা ভুল হয়েছিল। আমাকে একটি সূত্র থেকে ওই দিন কোর্টে দাঁড়াতে বলা হয়। ওই দিনের জন্য আবেদন করেছিলাম। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court Lawyer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE