মেট্রোর দরজায় সজলবাবুর আটকে থাকার সেই সিসিটিভি ফুটেজ।
মেট্রোর দরজায় হাত আটকে মৃত্যুর ঘটনায় ‘গাফিলতি’ কি শুধু যাত্রীরই ছিল? তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরে উঠে গিয়েছে এই প্রশ্ন।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে যাত্রী-সুরক্ষার পরিকাঠামোয় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বদল আনার সুপারিশ করা হয়েছে। ফলত প্রশ্ন উঠেছে, যদি দোষ যাত্রীর হয়ে থাকে, তবে এত সুপারিশের কারণ কী? তবে কি সজল কাঞ্জিলালের ঘটনায় মেট্রোর তরফেই সুরক্ষা সংক্রান্ত ফাঁকফোকর ছিল? তা নিয়ে মন্তব্য না করে মেট্রো কেন সজলবাবুকে শুধুমাত্র কাঠগড়ায় তুলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁর আত্মীয়েরা। তাঁদের বক্তব্য, কোন মানসিক পরিস্থিতিতে সজলবাবু পাদানিতে দাঁড়িয়ে পড়েন, তা ভেবে দেখা প্রয়োজন।
সজলবাবুর আত্মীয় সুব্রতকুমার দাস মেট্রোর তদন্ত রিপোর্টকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওই রিপোর্ট একতরফা। মেট্রো নিজেদের গাফিলতির দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। সজলবাবু দায়ী হলে সুরক্ষা নিয়ে এত সুপারিশ কেন? এ নিয়ে আগেই পুলিশে অভিযোগ হয়েছে। প্রয়োজনে মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আমরা আদালতে যাব।’’
মাস দু’য়েক আগের ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করে মেট্রো সার্কলের সেফটি কমিশনার জরুরি ভিত্তিতে যাত্রীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বেশ কিছু সুপারিশ করেন। যার মধ্যে যাত্রীদের ওঠানামা স্পষ্ট ভাবে চালক এবং গার্ডের গোচরে আনতে মেট্রো স্টেশনগুলিতে আয়না বসানো-সহ অন্যান্য ব্যবস্থা রয়েছে। পার্ক স্ট্রিটের প্ল্যাটফর্মে আলোর পরিমাণ ও সিসি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানো হয়। প্ল্যাটফর্মের সামনে এবং পিছন দিক ছাড়া মাঝখানেও রক্ষী মোতায়েন হয়। সুপারিশ মেনে ট্রেনের দরজা বন্ধের সময়ে অ্যালার্মের শব্দের তীব্রতা বাড়ানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
ওই সব ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে দুর্ঘটনার পরে তদন্তে ধরা পড়া ফাঁকফোকরের ভিত্তিতে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, নিজেদের তরফে এত খামতি সত্ত্বেও কেন রিপোর্টে শুধু সজলবাবুকেই দায়ী করা হল? তাঁর আত্মীয়দের প্রশ্ন, এক জন যাত্রী কামরার বাইরের পাদানিতে ঝুলে থাকা সত্ত্বেও গার্ড এবং রক্ষীদের তা নজরে পড়ল না কেন? তাঁদের প্রশ্ন, দুর্ঘটনার আগেই কেন দরজার সেন্সরের পরিসর অতি কম ব্যবধানে সক্রিয় করার কথা ভাবা হয়নি?
সেফটি কমিশনারের রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার দিন পার্ক স্ট্রিট স্টেশন থেকে ট্রেনটি যখন ছাড়ে, ওই সময়ই সজলবাবু এসে ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করেন। দুর্ঘটনা ঘটে তার ৩২ সেকেন্ড পরে। দরজা বন্ধ হওয়ার সময়ে মেট্রোয় ওঠার চেষ্টা করাতেই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে রিপোর্টে পরোক্ষ ইঙ্গিত করা হয়েছে।
রিপোর্ট পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে এক মেট্রোকর্তা বলেন, ‘‘তদন্তকারী সংস্থা অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের অধীন। তারা মেট্রোর কাছে দায়বদ্ধ নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy