শোভন চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
তিনি জানেন না, অথচ তাঁর নাম ব্যবহার করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন পুরসভার কোনও কোনও কাউন্সিলর। এ বার তাই বিজ্ঞপ্তি জারি করে তাঁর নাম ব্যবহার করতে বারণ করে দিলেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। ওই নোটিস অনুযায়ী, কলকাতার কোনও তৃণমূল কাউন্সিলর নিজের কোনও অনুষ্ঠানে মেয়রের নাম ব্যবহার করতে পারবেন না। লাগানো যাবে না মেয়রের ছবিও। যদি তা করতে হয়, তবে আগেভাগে মেয়র বা তাঁর অফিস থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে এমনই একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেয়রের অনুমতি ছাড়াই ওই অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে তাঁর নাম ব্যবহার করা হয়। যা নিয়ে মেয়রের দফতর থেকে সতর্কও করা হয় অনন্যাকে।
সেই ঘটনার কয়েক দিন পরেই কাউন্সিলরদের নোটিস দিয়ে মেয়রের দফতর জানায়, তাঁর লিখিত সম্মতি ছাড়া কাউন্সিলরেরা কোনও বেসরকারি অনুষ্ঠানে শোভনের নাম ব্যবহার করতে পারবেন না। এ বিষয়ে মেয়রের দাবি, ‘‘বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর আসছে যে, নানা ভাবে আমার নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। এর সঙ্গে বিশ্বাসযোগ্যতার প্রশ্ন জড়িত। সব কিছুর দায়িত্ব নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এটা শৃঙ্খলার বিষয়। কেউ কেউ না জানিয়েই নাম ব্যবহার করছেন। তাই ওই নোটিস দেওয়া হয়েছে। আলাদা কোনও ব্যক্তিবিশেষের কথা ভেবে নয়।’’ মেয়রের কথার সূত্র ধরেই অনন্যার প্রতিক্রিয়া, ‘‘শুধু আমাকে নয়, সকলকেই নোটিস দেওয়া হয়েছে। এটার সঙ্গে আমাকে আলাদা করে মেলানো ঠিক নয়।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, কিছু দিন আগে মেয়রকে না জানিয়েই তাঁর অফিসের ঠিকানায় আসা একটি সফটওয়্যার সংস্থার চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করেছিলেন অনন্যা। যা নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভও প্রকাশ করেছিলেন মেয়র।
নাম ব্যবহারে মেয়রের আপত্তির পিছনে অবশ্য আর্থিক দায়বদ্ধতাও একটি বড় কারণ। তাঁর যুক্তি, ‘‘সরকারি বা পুরসভার অনুষ্ঠান হলে কোনও ক্ষতি নেই। কিন্তু কোন কাউন্সিলর ব্যক্তিগত উদ্যোগে কী অনুষ্ঠান করছেন, তা তো অনেক সময়ে জানতেই পারি না। কী ভাবে টাকা আসছে, তা-ও জানা যায় না। সেখানে আমার নাম জড়ালে ওই অনুষ্ঠানের আর্থিক দায়বদ্ধতাও আমার উপরে বর্তায়। আমি চাই না, ইচ্ছেমতো যে কেউ আমার নাম জড়িয়ে অনুষ্ঠান করুক।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের উদ্যোগে নানা অনুষ্ঠান হয়। সে আম উৎসবই হোক বা পিঠেপুলি মেলা। সঙ্গে থাকে নাচ-গান ও বিনোদনের আসরও। এই সবে খরচও কম হয় না। কিন্তু কোথা থেকে টাকা আসে, তা কেউ জানে না। অথচ, প্রায় সবেতেই মধ্যমণি হিসেবে মেয়রের নাম রাখা হয়।
পুরসভার জারি করা ওই নোটিসে মেয়রের তরফে তাঁর ওএসডি জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত উদ্যোগের কোনও অনুষ্ঠানে মেয়রের নাম দিতে হলে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। তা হলে কি এত দিন তা নেওয়া হত না? মেয়রের অফিস সূত্রে জানানো হয়েছে, অনেকেই মুখে বলে যেতেন ‘আপনাকে যেতে হবে’। ব্যস, ওইটুকুই। তার পরেই দেখা যেত, একটি কার্ড চলে এসেছে। তাতে ‘চিফ পেট্রন’ বা উদ্বোধক হিসেবে মেয়রের নাম লেখা। মঞ্চে মেয়রের ছবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy