Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
State news

১০০ ঘণ্টা পার! মেডিক্যালের এমার্জেন্সিতে শুয়েও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন হবু ডাক্তার

এক, দুই করে একশো ঘণ্টা অতিক্রান্ত! শনিবার দুপুরে শেষ পর্যন্ত তাঁর ঠাঁই হল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এমার্জেন্সি বিভাগে।

এমার্জেন্সিতে চিকিৎসা চলছে হবু ডাক্তারের। —নিজস্ব চিত্র।

এমার্জেন্সিতে চিকিৎসা চলছে হবু ডাক্তারের। —নিজস্ব চিত্র।

সোমনাথ মণ্ডল
শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৮ ১৯:১৪
Share: Save:

ধীরে ধীরে শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছিল। তাতেও দাঁতে-দাঁত চেপে অনশন চালিয়ে যাচ্ছিলেন হবু ডাক্তার আপন সামন্ত। এক, দুই করে একশো ঘণ্টা অতিক্রান্ত! শনিবার দুপুরে শেষ পর্যন্ত তাঁর ঠাঁই হল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এমার্জেন্সি বিভাগে।

এমার্জেন্সিতে শুয়েও হস্টেলের দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন আপন। তাঁর মতোই সৌমদীপ রায়, সমীর দলুই, অর্ণব সাহা, অয়ন মণ্ডল, অনিকেত চট্টোপাধ্যায়রাও অনশনরত। তাঁদের শারীরিক অবস্থাও খুব একটা ভাল নয়। উৎকণ্ঠায় রয়েছেন সহপাঠীরা। তবুও তাঁরা আন্দোলন থেকে সরে আসতে চাইছেন না।

যদিও কলেজ কর্তৃপক্ষ নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড়। এখনও পর্যন্ত জট কাটার কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। অধ্যক্ষ উচ্ছ্বল ভদ্রের বক্তব্য, এমসিআই (মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া)-এর নিময় মেনেই নতুন ভবনে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের হস্টেল দেওয়া হয়েছে। সেখানে অন্য কোনও বর্ষের পড়ুয়ারা থাকতে পারবেন না। র‌্যাগিং রুখতেই প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের আলাদা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দায়িত্ব পালন করুন’, সুরঞ্জনকে ত্রিপাঠী

পাল্টা যুক্তি রয়েছে আন্দোলনকারীদেরও। তাঁদের বক্তব্য, সাম্প্রতিককালে র‌্যাগিং নিয়ে কোনও ঘটনা কি সামনে এসেছে? অধ্যক্ষের কাছে কেউ অভিযোগ করেছেন?

এমবিবিএস-এর ছাত্র সায়ন্তন মুখুটি বলেন, ‘‘প্রাক্তন অধ্যক্ষ আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, নতুন বিল্ডিং তৈরি হলে সেখানে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে। দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ বর্ষের ছাত্রদের হস্টেল নেই। ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে হয়। কোথাও ৫ হাজার, কোথাও ৭ হাজার টাকা ভাড়া। হস্টেল পেলে গরিব পড়ুয়াদের সুবিধাই হবে। এটাই আমাদের দাবি। এত সহজ বিষয় হাসপাতল কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারছেন না।’’

ইতিমধ্যে মেডিক্যাল কলেজের আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন যাদবপুরের পড়ুয়ারা। সরব হয়েছে এপিডিআর-এর মতো মানবাধিকার সংগঠনগুলিও। গত পাঁচ দিন ধরে মেডিক্যাল কলেজে শান্তিপূর্ণ ভাবে চলছে পড়ুয়াদের অবস্থান।

আরও পড়ুন: দেহ না দেখেই শংসাপত্র লিখে দেন ডাক্তার!

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ইডেন বিল্ডিংয়ে হস্টেলের অবস্থাও খুবই শোচনীয়। এই অবস্থায় নতুন বিল্ডিয়ে এক দিনের নোটিসে জোর করে প্রথম বর্ষের ছাত্রদের ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শুধু হস্টেলের ক্ষেত্রেই এমসিআইয়ের নিয়ম মানা হচ্ছে। অন্য বিষয়ে সেই নিয়মের তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। সায়ন্তন মুখুটি বলেন, “আমাদের কথা শুনছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলেও, আন্দোলন থেকে সরে আসছি না।”

এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যের কথায়: “ওঁদের পাশে আমরা প্রথম থেকেই রয়েছি। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলের নেতাদের মদতে শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Medical College Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE