Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বদলাচ্ছে পুরবাজার, অন্য বাজার এখনও তিমিরেই

আলোর পাশেই অন্ধকার। ভাঙাচোরা চেহারা ছেড়ে কলকাতা পুরসভার অধীন বেশ কয়েকটি বাজার সেজে উঠছে। পাশাপাশি নোংরা, ঘিঞ্জি, পলেস্তরা খসা, জমা জল আর বৈদ্যুতিক তারের ঘেরাটোপে রয়ে গিয়েছে অধিকাংশ ব্যক্তিমালিকানাধীন বাজার। এই বিপরীত ছবি প্রসঙ্গে পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, ব্যক্তিমালিকানাধীন বাজার সংস্কারের দায়িত্ব পুরসভার নয়। নানা কারণে এই বাজারগুলি সংস্কারেও উদ্যোগী নয় মালিকেরা।

সংস্কারের পরে সখেরবাজার। ছবি: অরুণ লোধ।

সংস্কারের পরে সখেরবাজার। ছবি: অরুণ লোধ।

জয়তী রাহা
শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৫ ০০:৩৩
Share: Save:

আলোর পাশেই অন্ধকার। ভাঙাচোরা চেহারা ছেড়ে কলকাতা পুরসভার অধীন বেশ কয়েকটি বাজার সেজে উঠছে। পাশাপাশি নোংরা, ঘিঞ্জি, পলেস্তরা খসা, জমা জল আর বৈদ্যুতিক তারের ঘেরাটোপে রয়ে গিয়েছে অধিকাংশ ব্যক্তিমালিকানাধীন বাজার। এই বিপরীত ছবি প্রসঙ্গে পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, ব্যক্তিমালিকানাধীন বাজার সংস্কারের দায়িত্ব পুরসভার নয়। নানা কারণে এই বাজারগুলি সংস্কারেও উদ্যোগী নয় মালিকেরা।

কলকাতা পুরসভা গত দু’বছরে ৪৬টি পুর-বাজারের মধ্যে ২৪টি পুর-বাজারের সংস্কার করেছে। মোট খরচ হয়েছে ৫ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা। মেটিয়াবুরুজের লালার মাঠ বাজার, কসবার রামলাল বাজার, বেহালার শখের বাজার, পার্কসার্কাস বাজার, বেলেঘাটার গুরুদাস মার্কেট, এন্টালি বাজার-সহ বেশ কয়েকটি বাজারের ছাদ ও পিলার থেকে খসে পড়ছিল পলেস্তারা। বিপজ্জনক ভাবে ছড়িয়ে ছিল বৈদ্যুতিক তারের জট। বাজার পরিষ্কারের জন্য জলের অভাব ছিল। ভ্যাট না থাকায় সংলগ্ন রাস্তার যেখানে-সেখানে আবর্জনা ফেলা থাকত। কোথাও আবার ছাদের নীচে মাটিতে বসেই কেনা-বেচা চলত। জমা জলে দাঁড়িয়েই বাজার করতে হত ক্রেতাদের। এ বার সেই ছবিটি পাল্টাতে শুরু করেছে।

পুরসভা সূত্রে খবর, সম্প্রতি নতুন রূপে উদ্বোধন হল বেহালার শখের বাজার। উদ্বোধনের অপেক্ষায় মেটিয়াবুরুজের লালার মাঠ বাজার। কসবার রামলাল বাজারের কাজ শেষ। পার্কসার্কাস বাজারের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ চলছে। প্রায় ৮৫ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। এন্টালি বাজার ঐতিহ্যবাহী বিল্ডিংয়ের তালিকায় থাকায় কাঠামোগত কোনও পরিবর্তন না করেই ভিতরের সংস্কার হয়েছে। মাছ, সব্জির বাজারের অংশে কাজ শেষ হয়েছে। বাকি অংশের সংস্কার হচ্ছে। খারাপ অবস্থায় ছিল বেলেঘাটার গুরুদাস বাজার। সংস্কার হয়েছে সেটিরও। হগ মার্কেটের আংশিক সংস্কার হয়েছে।

বাজারগুলিতে কয়েকটি ধাপে সংস্কার চলেছে। ভেঙে পড়া অংশের মেরামতি করে সাদা-নীল রঙ করা হয়েছে। চাতালগুলিতে পাথর, টাইলস বসানো হয়েছে। পাথওয়েতে টাইলস বসেছে। পরবর্তী পর্যায়ে বাজার পরিষ্কারের জন্য প্রয়োজনীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাজার দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, বেশিরভাগ বাজারগুলিতে জলের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে বকুলতলা, গোবরা, ম্যান্টন, যাদবগড়, সখেরবাজার, পার্কসার্কাস-সহ বেশ কয়েকটি পুর-বাজারে। বাজারের জলাধারে জমা জল পাইপের মাধ্যমে সরবরাহ হচ্ছে। সব বাজারেই জলের এই ব্যবস্থা চালু হবে। যদিও ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, বৈদ্যুতিক মিটার এখনও বসেনি বেশিরভাগ বাজারে। পুরসভা সূত্রের খবর, বিদ্যুতের কাজ চলছে ধাপে ধাপে। দু’ একটি পুর-বাজারকে বহুতল করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

কিন্তু ব্যক্তিমালিকানাধীন বাজারগুলির পরিকাঠামোর পরিবর্তন কেন হচ্ছে না? পুর-কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, পুরসভা নিজস্ব বাজার সংস্কারে দায়বদ্ধ। ব্যক্তিমালিকানাধীন বাজারগুলির সংস্কার করতে পারে না। যগুবাবুর বাজার অধিগ্রহণের চেষ্টা মালিকানা সমস্যায় আটকে গিয়েছে। হাতিবাগান বাজারে আগুন লাগার পরে পুরসভার বিশেষ উদ্যোগে সরকার বাজার, মানিকতলা বাজার, মল্লিকবাজার, ছাতুবাবুর বাজার, শ্রীমানী বাজার, রাজা কাটরা-সহ কয়েকটি নিজস্ব বাজারে সিইএসসি মিটার বসিয়েছে। আগে এগুলি খোলা অবস্থায় থাকায় শট সার্কিট থেকে আগুন লাগার আশঙ্কা ছিল। শ্যামবাজার ও যগুবাবুর বাজারের ছাদে থাকা বিজ্ঞাপন বোর্ড সরানো হয়েছে। কারণ এগুলির ভারে যে কোনও দিন ছাদ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jayati raha bazar KMC park circus Behala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE