—প্রতীকী চিত্র
ডেঙ্গি প্রচারে কাউন্সিলরদের উপরে আর দায়িত্ব ছাড়তে নারাজ কলকাতা পুরসভা। তাই এ বার পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদেরই মশার আঁতুড়ঘর খুঁজতে পাঠানো হচ্ছে। সম্প্রতি জারি করা পুরসভার নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রতি সপ্তাহে নিয়ম করে পুর স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের ‘ফিল্ড ভিজিট’ করতে যেতে হবে। সেই রিপোর্ট তৈরি করতে হবে।
ডেঙ্গি প্রচারে কাউন্সিলরদের আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে বলে গত বছরই জানিয়েছিল পুর স্বাস্থ্য দফতর। দফতরের তরফে কাউন্সিলরদের নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল সারা বছর ধরে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ডেঙ্গি সচেতনতার প্রচার করতে। যুক্তি ছিল, কোন এলাকার কোথায় জঞ্জাল জমে আছে, কোথায় জল জমে থাকছে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলরই সব থেকে ভাল জানবেন। কিন্তু তার পরেও দেখা গিয়েছে যে, সচেতনতা প্রচারে কাউন্সিলরদের একাংশের সক্রিয় ভূমিকাই নেই। এমনকি, ডেঙ্গি-পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে চলতি বছরে বরোভিত্তিক যে বৈঠক শুরু করেছে পুরসভা, সেখানেও কাউন্সিলরদের বড় অংশ গরহাজির থাকছেন। এ দিকে শহরে ডেঙ্গির মৃত্যুর ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই ‘উদ্বিগ্ন’ পুর প্রশাসনের একাংশ।
তাই এ বছর সরেজমিনে ডেঙ্গি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কাউন্সিলরদের উপরে ভরসা না করে পুর স্বাস্থ্যকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রতি সোমবার পুর স্বাস্থ্যকর্তাদের স্পষ্ট করে জানাতে হবে, কোথায় কোথায় তাঁরা যাচ্ছেন। ‘ফিল্ড ভিজিট’ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য বিস্তারিত ভাবে বলতে হবে।
পুর আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, ডেঙ্গি সচেতনতা প্রচারে নির্দেশিকা দেওয়া সত্ত্বেও যে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে তা বুঝতে পারছেন কর্তৃপক্ষ। কাউন্সিলরেরা তো বটেই, স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরাও ঠিক মতো কাজ করেছেন কি না, তার উপরেও নজরদারির একটা অভাব বোধ হচ্ছিল। তাই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, মুখ্য পতঙ্গবিদ থেকে বরোস্তরের সব কর্তাদের সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়েছে। এক পুর স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘এক দিক থেকে ভালই হয়েছে। আমরা গেলে তবু একটু চাপ থাকে। কর্মীরাও বাড়তি উৎসাহে কাজ করেন। প্রতিদিনই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দু’তিন ঘণ্টা ফিল্ড ভিজিট হচ্ছে। সে অনুযায়ী রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে।’’
পু্র প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, এত দিন প্রয়োজনভিত্তিতে পুর স্বাস্থ্যকর্তারা মশার আঁতুড়ঘরের উৎস সন্ধানে যেতেন। কিন্তু এ বার তা বাধ্যতামূলক হল। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘কাউন্সিলরদের একাংশ এখনও ডেঙ্গি সচেতনতা প্রচারে নামেননি। অনেক বলেও তাঁদের থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি। এ ভাবে চললে ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। কারণ, ডেঙ্গির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মূল কথাই হল সচেতনতা।’’ পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, ‘‘এটা তো খুবই ভাল উদ্যোগ। মশার আঁতুড়ঘর ধ্বংস করতে হবে যে ভাবেই হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy