ঢাকঢোল পিটিয়ে বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধা হল ঠিকই। তবে সময়কালে সে ঘণ্টা বাজবে কি না, সেই প্রশ্ন তুলে দিলেন মেয়র স্বয়ং। প্রসঙ্গ, শহরে নতুন ট্যাক্সিস্ট্যান্ড।
রাজ্য পরিবহণ দফতরের উদ্যোগে কলকাতা পুলিশ এবং পুরসভার সহায়তায় শহরের ২২৬টি পার্কিং লটে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে চালু হতে চলেছে ওই স্ট্যান্ডগুলি। সেখানে প্রায় কয়েক হাজার ট্যাক্সি রাখা যাবে। পুলিশ ও পুরসভার দাবি, শহরবাসীর সহজে ট্যাক্সি পাওয়া নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ। তবে ২৪ ঘণ্টাই সেখানে ট্যাক্সি মিলবে কি না, তার জবাবে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় নিজেই বলছেন, ‘‘সে ভরসা আমরা দিচ্ছি না। স্ট্যান্ড করে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে কোন সময়ে ট্যাক্সি থাকবে, তা কী করে জানব! ট্যাক্সি তো আমাদের নয়।’’
বুধবার পুরসভায় পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্পেশাল পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্রের সঙ্গে বৈঠক করেন মেয়র। পরে শোভনবাবু জানান, মানুষের ট্যাক্সি পেতে অসুবিধা হয়। বিশেষত বিভিন্ন হাসপাতালের সামনে ভীষণ সমস্যায় পড়তে হয়। তাই কয়েকটি বড় হাসপাতাল চত্বর-সহ শহরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় স্ট্যান্ড হচ্ছে। সেখানে সহজেই ট্যাক্সি মিলবে। পুলিশ ও পুরসভার দাবি, লাক্সারি ট্যাক্সির পরিষেবার সঙ্গে এ বার পাল্লা দেবে কলকাতার ট্যাক্সি। পুর-পার্কিং দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘লাক্সারি ট্যাক্সি মানুষের দরজায় পৌঁছয়। তাই খদ্দেরও বেশি পায়। আর ট্যাক্সির জন্য মানুষকে দাঁড়াতে হয় বহুক্ষণ।’’ তাঁর দাবি, এ বার নির্দিষ্ট জায়গায় গেলেই ট্যাক্সি মিলবে।
শহরে ট্যাক্সির জন্য এমন স্ট্যান্ড হওয়াকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেন পরিবহণ সচিব। আলাপনবাবু বলেন, ‘‘এত কাল ট্যাক্সিকে যাত্রী খুঁজতে অযথা ঘোরাফেরা করতে হতো। এ বার একটা জায়গা মিলবে। লাক্সারি ট্যাক্সির সঙ্গে অর্থনৈতিক অসম প্রতিযোগিতা কমে যাবে।’’
কিন্তু লাক্সারি ট্যাক্সি যাত্রীর বাড়ির সামনে পৌঁছে যায়। সেই পরিষেবা না দিলে তাদের টেক্কা দেওয়া যাবে কি? নয়াদিল্লিতে অনেক ট্যাক্সিস্ট্যান্ডের ফোন নম্বর থাকে। ফোন করলে ট্যাক্সি নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে যায়। পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর অসীম বসু বলেন, ‘‘বৈঠকে তেমন কোনও পরিষেবার কথা জানানো হয়নি।’’ তবে রাতবিরেতে লাক্সারি ট্যাক্সিই যে ভরসা, তা মানছেন একাধিক পুরকর্তাও।
মেয়র পারিষদ (পার্কিং) দেবাশিস কুমার জানান, শহরে সাধারণ গাড়ির পার্কিং লটগুলিতেই জায়গা বার করে ট্যাক্সিস্ট্যান্ড হচ্ছে। ১৮ অগস্ট থেকে সেই জায়গা চিহ্নিত করা শুরু হবে। প্রতিটি স্ট্যান্ডে বড় করে লেখা থাকবে স্ট্যান্ডের নাম। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্ট্যান্ডগুলি চালু হয়ে যাবে বলে জানান দেবাশিসবাবু।
একই সঙ্গে সাধারণ গাড়ির পার্কিংয়ে গাড়ি রাখার সময় নিয়ে নানা অভিযোগ ওঠে। গাড়ি কতক্ষণ পার্কিংয়ে থাকছে, তা মাপতে এ বার যন্ত্র বসানো হবে। পার্কিং ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতেই ওই ব্যবস্থা বলে জানান মেয়র শোভনবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy