Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Panihati Crematorium

চিমনি বসানোর লোক অমিল, তিন মাস বন্ধ পানিহাটি শ্মশান

ওই শ্মশানের উপরে বারাসত, মধ্যমগ্রাম, নিউ ব্যারাকপুর, বিশরপাড়া, বিলকান্দা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ নির্ভরশীল।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২০ ০৩:৪৩
Share: Save:

রোগটা প্রায় তিন মাসের পুরনো। কিন্তু বহু খোঁজখবর করেও তার ওষুধ মিলছে না। আমপানের পর থেকে এমনই হাল পানিহাটি শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লির। নতুন চিমনি বসাতে দু’বার টেন্ডার ডাকা হলেও কেউ তাতে অংশগ্রহণ করেননি। অগত্যা আশপাশের পুরসভাগুলির কাছে চিমনি সারানোর মিস্ত্রি খোঁজার পাশাপাশি ফের টেন্ডার ডেকেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সমাধান মিলবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

পানিহাটি পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে, গঙ্গার ধারের শ্মশানে দু’টি বৈদ্যুতিক চুল্লি রয়েছে। ১৯৭৭ সালে প্রথম বৈদ্যুতিক চুল্লিটির শিলান্যাস করেছিলেন তৎকালীন‌ পূর্তমন্ত্রী ভোলানাথ সেন। ১৯৮১ সালে সেটি চালু হয়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় চুল্লিটি চালু হয়। দু’টি চুল্লির জন্যই ১০০ ফুট উচ্চতার ‘মাইল্ড স্টিল’-এর তৈরি ওই চিমনিটি ছিল। আমপানের তাণ্ডবে চিমনিটি উপড়ে গিয়ে রাস্তায় পড়ে। অভিঘাতে দুমড়েমুচড়ে যায় পুরো চিমনিটি। সেই দিন থেকেই পানিহাটি শ্মশানের পরিষেবা বন্ধ রয়েছে।

ওই শ্মশানের উপরে বারাসত, মধ্যমগ্রাম, নিউ ব্যারাকপুর, বিশরপাড়া, বিলকান্দা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ নির্ভরশীল। সৎকারের জন্য এখন তাঁদের যেতে হচ্ছে বরাহনগর, আড়িয়াদহ কিংবা খড়দহে। সব চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে পানিহাটি এলাকার করোনায় মৃতদের দেহ দাহ করতে। প্রাক্তন কাউন্সিলর সুদীপ রায় বলেন, ‘‘কোভিডে আক্রান্ত হয়ে যাঁদের মৃত্যু হচ্ছে তাঁদের দেহ সৎকারের জন্য জেলার অন্যান্য শ্মশানের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, নতুন চিমনি বসাতে খরচ ধরা হয়েছে ১১ লক্ষ টাকা। সেই প্রকল্পের বিস্তারিত রিপোর্ট (ডিপিআর) কেএমডিএ অনুমোদনও করেছে। তার পরেই গত ১৩ জুলাই প্রথম টেন্ডার ডাকা হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও কেউ তাতে অংশ নেননি। এর পরে ৩ অগস্ট ফের টেন্ডার ডাকা হলেও একই সমস্যা দেখা দেয়।

পানিহাটির পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য সোমনাথ দে বলেন, ‘‘১২ অগস্ট ফের টেন্ডার ডাকা হয়েছে। ১৯ তারিখ শেষ দিন। ২২ অগস্ট টেন্ডার খোলার পরে বোঝা যাবে কত জন অংশ নিলেন। আশা করছি এ বার লোক মিলবে।’’ কিন্তু কেউ টেন্ডারে অংশগ্রহণ করছেন না কেন? পুর কর্তাদের মতে, লকডাউনের ফলে অধিকাংশ ঠিকাদারই এখন নতুন কাজে অংশ নিতে দ্বিধায় আছেন। কারণ, প্রথমে তাঁকে ১১ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে কাজ করতে হবে। তার পরে পুরসভায় বিল জমা দিলে তিনি ওই টাকা ফেরত পাবেন। তাতে বেশ কিছু মাস লাগতে পারে। সেই ঝুঁকি অনেকেই নিতে চাইছেন না। সব মিলিয়ে আপাতত সংশয়ে পা‌নিহাটি শ্মশানের চুল্লির ভবিষ্যৎ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panihati Crematorium Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE