—প্রতীকী ছবি।
পার্কের দায়িত্ব তাদের। অথচ সেই উদ্যান দফতরই জানতে পারছিল না কখন, কাদের পার্ক ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কোনও অনুষ্ঠানের পরে পার্ক নোংরা হয়ে থাকলে বা পার্কের কিছু হলে সব দায়িত্ব এস পড়ছিল তাদের ঘাড়েই। এমনই এক অদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল কলকাতা পুরসভায়।
সেই পরিস্থিতি শুধরানোর জন্য এ বার কিছুটা ‘ব্যতিক্রমী’ পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন পুর কর্তৃপক্ষ। নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দেওয়া হল, উদ্যান ছাড়া অন্য কোনও দফতর বা কোনও আধিকারিক পার্ক ভাড়া দেওয়া সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। কিন্তু কিসের ভিত্তিতে অন্য দফতর বা আধিকারিক এত দিন পার্ক ভাড়া সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে আসছিলেন, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে উঠে গিয়েছে সেই প্রশ্ন। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘এ তো অদ্ভুত পরিস্থিতি। উদ্যান দফতরই জানতে পারছে না কে, কখন কোন পার্ক ভাড়ার অনুমতি দিয়ে দিচ্ছে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, শহরে তাদের অধীনস্থ পার্কের সংখ্যা প্রায় ৭০০। নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিভিন্ন সংস্থা, এজেন্সি বা ক্লাব নানা অনুষ্ঠানের জন্য পুরসভার থেকে পার্ক ভাড়া চায়। আবেদন বিবেচনা করে পুরসভা পার্ক ভাড়াও দেয়। তা থেকে পুর প্রশাসনের ভাঁড়ারে টাকাও আসে। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে দেখা যাচ্ছিল, উদ্যান দফতরের অজান্তেই পার্ক ভাড়া দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দফতরের কাছে সে সংক্রান্ত কোনও তথ্য থাকছে না। অন্য বরো অফিস বা কোনও আধিকারিক পার্ক ভাড়ার অনুমতি দিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি, তা সময় মতো জানানোও হচ্ছিল না উদ্যান দফতরকে। ফলে ওই একই পার্ক আবার ভাড়া দেওয়ার জন্য উদ্যান দফতরের তরফে আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছিল। এককথায়, এ যেন পার্কের ‘ভ্রান্তিবিলাস’! সেই বিভ্রান্তি রুখতেই সম্প্রতি পুর কর্তৃপক্ষ কড়া ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, উদ্যান দফতর ছাড়া আর কেউ যেন এ ব্যাপারে মাথা না ঘামায়।
প্রসঙ্গত, এর আগেও পার্ক নিয়ে শোরগোল পড়েছিল পুরসভায়। যখন মাস পাঁচেক আগে যেখানে-সেখানে পার্ক তৈরির ক্ষেত্রে রাশ টেনেছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। সে ক্ষেত্রেও তাঁরা খেয়াল করেছিলেন, নিজেদের ওয়ার্ডে পার্ক তৈরির জন্য রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্সিলরদের একাংশের মধ্যে। আর তাঁদের ‘চাপে’ পড়ে বরো অফিস থেকেই পার্ক তৈরির অনুমতি দেওয়া হচ্ছিল। তার পরেই ঠিক হয়, কোথাও পার্ক হবে কি না সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় পুর ভবন সিদ্ধান্ত নেবে। সেখান থেকে ছাড়পত্র পেলে তবেই এ বিষয়ে এগোনো যাবে। পার্ক তৈরির ব্যাপারে বরো অফিস থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।
তখন অবশ্য আইনি জটিলতার কারণ দেখিয়েছিল পুরসভা। উদ্যান দফতরের তরফে জানানো হয়েছিল, হঠাৎ করে যে সমস্ত জমিতে পার্ক গজিয়ে উঠছে, তার অনেকগুলিই ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। ফলে সেখানে পার্ক তৈরির অনুমতি দেওয়া হলে আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়ছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘এর আগে পার্ক তৈরি নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করা গিয়েছিল। এ বার পার্ক ভাড়া দেওয়া নিয়ে দূর করা হল। দেখা যাক এর পরে কী দাঁড়ায়।’’
এ বিষয়ে উদ্যান দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘বেশ কয়েকটি অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে। কোনও পার্ক ভাড়া হয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু সেটা আমার দফতর জানতে পারছিল না। সে কারণেই কেন্দ্রীয় ভাবে জানিয়ে পার্ক ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy