Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Social Media

সোশ্যাল মিডিয়ার গণ্ডি পেরিয়ে সবুজের বিনিময়

গাছের পরিচর্যার পদ্ধতি জানার গ্রুপের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় গড়ে উঠেছে গাছ বিনিময়ের গ্রুপও।

প্রকৃতিপ্রেমী: শহরের এক পার্কে চলছে গাছ বিনিময়। নিজস্ব চিত্র

প্রকৃতিপ্রেমী: শহরের এক পার্কে চলছে গাছ বিনিময়। নিজস্ব চিত্র

মধুমিতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:২৬
Share: Save:

সবুজের টানে তাঁরা জড়ো হয়েছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। আবার সেই সবুজের টানেই তাঁরা করোনার সময়েও পৌঁছে যাচ্ছেন কলকাতা ছাড়িয়ে জেলায়।

গাছের পরিচর্যার পদ্ধতি জানার গ্রুপের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় গড়ে উঠেছে গাছ বিনিময়ের গ্রুপও। শুধু গ্রুপে আলোচনা নয়, বিনামূল্যে গাছ বিনিময়ের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় প্রায়ই দেখা করেন সদস্যেরা। করোনার সময়েও তা থমকে যায়নি। স্বাস্থ্য-বিধি মেনেই অনেকে এক জায়গায় জড়ো হয়েছেন গাছ বিনিময়ের জন্য। কখনও আবার কুরিয়রের মাধ্যমে পছন্দের গাছের বীজ পৌঁছে গিয়েছে সংশ্লিষ্ট সদস্যদের বাড়িতে।

এমনই বেশ কয়েকটি গ্রুপের সদস্য মীনাক্ষী রায়। গড়িয়ার বাসিন্দা মীনাক্ষী জানান, তিনি আদতে জলপাইগুড়ির মেয়ে। তাঁর বাবা বাড়িতে অনেক গাছ লাগাতেন। তার মধ্যে গোলাপ গাছই ছিল বেশি। ছোট থেকেই তাই গাছের প্রতি তাঁর ভালবাসা। এখন মীনাক্ষী থাকেন গড়িয়ায়। বাড়িতে কিছুটা জায়গা রয়েছে। স্বামী শুভও গাছপ্রেমী। তাই বাড়িতেই তৈরি করেছেন ছোট বাগান। আগেও অনেকের সঙ্গে গাছ বিনিময় করেছেন। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপের দৌলতে সেই কাজটাই অনেক সোজা হয়ে গিয়েছে। দুষ্প্রাপ্য বা অন্য রকম গাছের সন্ধানও মিলছে গ্রুপের অন্য সদস্যদের দৌলতে। তিনি জানালেন, করোনার সময়েও তিনি প্রায় ৯০ জনকে গাছ দিয়েছেন।

পেশাগত ব্যস্ততার মধ্যেই বাগান করার শখ বাঁচিয়ে রাখেন টালিগঞ্জের বাসিন্দা, পেশায় গ্রাফিক ডিজ়াইনার পিঙ্কি রায়। তিনি বলেন, ‘‘এমন গ্রুপ থেকে ছোটবেলায় দেখা অনেক গাছের সন্ধান পাই। অনেক গাছপ্রেমীর সঙ্গে পরিচয় হয়। বিনিময়ের মাধ্যমে যে গাছ হয়তো কখনও পাব না ভেবেছিলাম, তা-ও পেয়ে যাই।’’ গড়িয়ার আর এক বাসিন্দা ধৃতি দাস। শারীরিক কারণে কিছু দিন আগে চাকরি ছেড়েছেন তিনি। তিনি জানালেন, দিনের অনেকটা সময় তাঁর কাটে গাছেদের সঙ্গে। বাড়ির জানলা থেকে ছাদ— সব জায়গাই গাছে ভরা। মূলত পাতাবাহারের গাছ বসানো তাঁর শখ। এই গাছ বিনিময়ের মাধ্যমে তরতরিয়ে বেড়ে চলেছে তাঁর সংগ্রহ। ধৃতি বলেন, ‘‘শুধু যে নিজে গাছ পাই তা নয়, অন্যদেরও দিতে পারি।’’

এমনই একটি গ্রুপ ফেসবুকে তৈরি করেছিলেন গোবরডাঙার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ রায়। এখন সেই গ্রুপের সদস্যেরা ছড়িয়ে রয়েছেন পৃথিবীর প্রায় ২৭টি দেশে। গাছ বিনিময়ের জন্য সদস্যদের প্রথম সাক্ষাৎটি হয়েছিল তাঁর বাড়িতেই। গত রবিবারও দমদমে করোনা-বিধি মেনে বসেছিল গাছ বিনিময়ের আসর। সদস্যেরা যে যার সবুজের ঝাঁপি খুলে দিয়েছিলেন অন্যদের জন্য। বিশ্বজিৎ জানান, তাঁর বাবা সেনাবাহিনীতে থাকার সুবাদে দেশের বহু দুর্গম জায়গায় যেতেন। ফিরে আসতেন নানা প্রজাতির গাছ নিয়ে। সেই থেকে গাছের শখ তাঁরও। তিনি বলেন, ‘‘নিজের সংগ্রহ থেকে অন্যকে দিলে সবুজের প্রসার হয়। একটি মাত্র গাছের যত্ন নিতে নিতে বহু গাছ বসান অনেকে। বাঁচে পরিবেশ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Social Media Plantation and maintenance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE