Advertisement
১১ মে ২০২৪

দম্পতি-খুনে ব্যক্তিগত আক্রোশ, ধারণা পুলিশের

মঙ্গলবার সকালে নরেন্দ্রপুর থানার তিউরিয়ায় একটি বাগানবাড়ির শৌচাগারে রাখা দু’টি সুটকেস থেকে উদ্ধার হয় প্রদীপ বিশ্বাস (৫৫) ও আল্পনা বিশ্বাস (৪৫) নামে ওই দম্পতির দেহ।

সরেজমিন: ঘটনাস্থলে তদন্তে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। বুধবার, নরেন্দ্রপুরে। নিজস্ব চিত্র

সরেজমিন: ঘটনাস্থলে তদন্তে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। বুধবার, নরেন্দ্রপুরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৯ ০১:৫৯
Share: Save:

নরেন্দ্রপুরের বাগানবাড়িতে দম্পতি খুনের ঘটনার তদন্তে পুলিশ এখনও অন্ধকারে। বুধবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। কে বা কারা খুন করতে পারে, সে ব্যাপারেও কার্যত অন্ধকারে তদন্তকারীরা। এ দিন ওই বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। পুলিশ সূত্রের খবর, শৌচাগারে কিছু জায়গায় কাদামাখা পায়ের ছাপ মিলেছে। মিলেছে আঙুলের ছাপও।

মঙ্গলবার সকালে নরেন্দ্রপুর থানার তিউরিয়ায় একটি বাগানবাড়ির শৌচাগারে রাখা দু’টি সুটকেস থেকে উদ্ধার হয় প্রদীপ বিশ্বাস (৫৫) ও আল্পনা বিশ্বাস (৪৫) নামে ওই দম্পতির দেহ। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রদীপবাবুকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। তাঁর শরীরে অন্য আঘাতের চিহ্ন নেই। আল্পনাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হলেও তাঁর মাথায় ক্ষত রয়েছে। ওই ঘর থেকে মিলেছে রক্তমাখা কাঁচি ও লোহার ছোট রড। খুন করার পরে দেহগুলি দুমড়ে সুটকেসে ঢোকানো হয়েছিল। দু’টি দেহ লোপাট করার ছক ছিল বলে ধারণা পুলিশের।

তদন্তকারীদের আরও অনুমান, খুনের পিছনে ব্যক্তিগত আক্রোশ কাজ করেছে। ঘটনার পর থেকে উধাও একটি টিভি এবং ওই দম্পতির মোবাইল। পুলিশ মনে করছে, লুটের উদ্দেশ্যে খুন, এই তত্ত্ব সাজাতে ওই দু’টি জিনিস নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আততায়ী এক না একাধিক, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে তদন্তকারীরা জেনেছেন, একটি নম্বরে প্রদীপ ও আল্পনা ঘন ঘন কথা বলতেন। সেই নম্বরের মালিকের খোঁজ মিলেছে। ওই নম্বরে কল তালিকার রেকর্ড পরীক্ষা করা হচ্ছে।

পুলিশের অনুমান, আততায়ী সম্ভবত বিশ্বাস পরিবারের পূর্ব-পরিচিত। খুন করে পালানোর আগে বাড়ির সব দরজা ও মূল গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। প্রায় সাড়ে তিন বিঘা জমি নিয়ে ওই বাগানবাড়ি। বাগানের এক পাশে বাড়িটি। ফলে রাতে চিৎকার-চেঁচামেচি হলে সেই শব্দ আশপাশের লোকের কানে যাওয়ার কথা নয়।

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই বাগানবাড়ির মালিক দীপঙ্কর দে ও তাঁর দাদা তীর্থঙ্কর দে। তাঁরা ১৯৯৭ সালে বাড়িটি কেনেন। সেটি দেখাশোনার দায়িত্ব দীপঙ্কর দিয়েছিলেন তাঁর শ্যালিকা আল্পনা এবং ভায়রা প্রদীপকে। কসবায় তীর্থঙ্করের ছেলে সমুদ্রের একটি কারখানা রয়েছে। সম্প্রতি তিনি কারখানাটি ওই বাগানবাড়িতে স্থানান্তরিত করার পরিকল্পনা করেছিলেন। বাড়ি দেখভালের জন্য প্রদীপ প্রতি মাসে টাকা পেতেন। আল্পনা যুক্ত ছিলেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে।

তদন্তকারীদের দাবি, রবিবার রাতে সম্ভবত দম্পতিকে খুন করা হয়। কারণ, সোমবার সকাল থেকে ফোনে তাঁদের সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি দীপঙ্করের ভাইপো সমুদ্রকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এ দিন ঘটনাস্থলে যান ডিআইজি (প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ) রাজেশ যাদব। নরেন্দ্রপুর থানায় তদন্তকারীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার রশিদ মুনির খান বলেন, ‘‘জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। খুনের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Police Investigation Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE