—প্রতীকী ছবি।
নিয়ম মেনে স্কুলে মাস্টার অব এডুকেশনের সার্টিফিকেট জমা দিয়েছিলেন এক শিক্ষিকা। ওই সার্টিফিকেট দেখে সন্দেহ হয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষের। তাঁরা তা জানান ওই শিক্ষিকাকে। তিনি প্রতারকের পাল্লায় পড়েছিলেন, এটা বুঝতে পেরে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে একটি আন্তঃরাজ্য জাল মার্কশিট-সার্টিফিকেট চক্রের সন্ধান মিলেছে। ওই চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করা হলেও অন্যতম এক পান্ডা পলাতক।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম সৌরভ পাল। তার বাড়ি কসবা এলাকায়। তাকে গ্রেফতার করেছে গড়িয়াহাট থানার তদন্তকারীরা। ওই বাড়িতে ছিল চক্রের অফিস।
সেখানে তল্লাশি চালিয়ে তদন্তকারীরা ভিন্ রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচুর ভুয়ো মার্কশিট এবং সার্টিফিকেট উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া, উদ্ধার করা হয়েছে ওই সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের রবার স্ট্যাম্পও। একটি কম্পিউটার এবং ল্যাপটপও উদ্ধার করা হয়েছে তাদের থেকে। ধৃতকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, ভবানীপুরের বাসিন্দা ওই মহিলা দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা। ২০১৭ সালে স্কুলের নির্দেশ মতো করেসপন্ডেন্সে মধ্যপ্রদেশের বিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার অব এডুকেশন পাশ করে ওই সার্টিফিকেট জমা দেন স্কুলে। পুলিশ জেনেছে, ওই শিক্ষিকা যখন প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, তখন তাদের অফিস ছিল গড়িয়াহাট থানা এলাকায়। কিন্তু পরে খোঁজ করতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, ওই অফিসের কোনও অস্তিত্বই নেই। সেখান থেকে অন্য জায়গায় গুটিয়ে নেওয়া হয়েছিল অফিসটি।
এক তদন্তকারী অফিসার জানান, বিভিন্ন সূত্র থেকে তাঁরা জেনেছেন, কসবা এলাকায় ওই রকম এমএ, বিএড কিংবা এমবিবিএস পাশ করিয়ে দেওয়ার একটি চক্র অফিস খুলে বসেছে। সেই সূত্রের খোঁজে তল্লাশি চালাতেই সোমবার রাতে সন্ধান মেলে ওই অফিসে। গ্রেফতার করা হয় সৌরভকে। সেখান থেকে মেলে তামিলনাড়ু, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিটেকের। এ রাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়েরও সার্টিফিকেট মিলেছে বলে পুলিশের দাবি।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ভুয়ো মার্কশিট-সার্টিফিকেট চক্রের সদস্যেরা কলকাতাতেই নকল পরীক্ষার ব্যবস্থা করত। যা দেখে কোনও সন্দেহ জাগত না পরীক্ষার্থীদেরও। ওই পরীক্ষার জন্য কয়েক লক্ষ টাকা দিতে হত তাঁদের। পরে প্রতারকেরা সেই মার্কশিট বা সার্টিফিকেট ছাপিয়ে তা পরীক্ষার্থীর কাছে তুলে দিত। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ধৃতেরা প্রায় দশ বছর ধরে ওই ব্যবসা করছিল। পুলিশের দাবি, কয়েক হাজার পরীক্ষার্থী তাদের কাছ থেকে সার্টিফিকেট নিয়েছেন বলে জেরায় জানিয়েছে ধৃত সৌরভ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy