বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই চলছে দিন গুজরান। নিজস্ব চিত্র।
হিন্দু হস্টেল ইস্যুতে সরকারের কোর্টেই বল ঠেললেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া। গত চার দিন ধরে উত্তাল প্রেসিডেন্সি ক্যাম্পাস। হস্টেলের দাবিতে আজও বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।
শনিবার এ নিয়ে উপাচার্য বলেন, “পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা যে দিন হস্টেল সারিয়ে দেবেন, সে দিনই পড়ুয়াদের হিন্দু হস্টেল ফিরিয়ে দেওয়া হবে। ৪ থেকে ৫ মাসের মধ্যে হস্টেলের সংস্কার হয়ে যাবে বলে ওঁরা জানিয়েছেন। আমার আশা আরও তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে।” যদিও পড়ুয়ারা তাঁদের দাবিতেই অনড়। যত দিন না তাঁরা হস্টেল পাচ্ছেন, তত দিন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান বিক্ষোভ চলবে।
গত চার দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই স্নান, খাওয়াদাওয়া করছেন আন্দোলনরত পড়ুয়ারা। এমনকি, রাতে তাঁরা বিছানা-বালিশ নিয়ে ওখানেই ঘুমাচ্ছেন। হস্টেল না পাওয়া পর্যন্ত এ ভাবেই আন্দোলন চলবে বলে সাফ জানিয়ে দিলেন তাঁরা। তিন বছর হয়ে গেলেও এখনও সংস্কার শেষ হয়নি ঐতিহ্যবাহী হিন্দু হস্টেলের। সেখানে মোট তিনটি ব্লক। তার মধ্যে একটি ব্লকের কাজ শেষ হতে এখনও কম করে তিন মাস লাগবে। বাকি দু’টি ব্লকে কবে সংস্কার হবে, কেউ জানেন না। হস্টেলের ভিতরের মাঠ দেখলে আঁতকে ওঠার জোগাড়। আগাছায় ভর্তি। কোথাও বালি পড়ে রয়েছে তো কোথাও ইট-কাঠ-পাথর।
আরও পড়ুন: প্রিয়ায় আগুনের উৎস কোথায়, তা নিয়ে ধন্দ কাটছে না
দোহাই! থাকতে দিন হিন্দু হস্টেলে
হিন্দু হস্টেলের চলছে সংস্কার। নিজস্ব চিত্র।
এই অবস্থায় এখনই হিন্দু হস্টেল ছাত্রদের ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালেয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া। তিনি বলেন, “এমন নয় যে ওদের হস্টেলের ব্যবস্থা করা হয়নি। সরকারি সমস্ত সুযোগসুবিধা-সহ তাঁদের জন্য রাজারহাটে হস্টেলের বন্দবস্ত করা হয়েছে। এমনকি, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে গাড়িরও ব্যবস্থা রয়েছে। আমরাও চাইছি, দ্রুত যাতে হস্টেলের সংস্কার হয়।”
দেখুন ভিডিয়ো
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে আন্দোলন তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। এ দিনও পড়ুয়ারা তাঁদের দাবি থেকে সরে আসতে রাজি হননি। সংস্কারের জন্য ২০১৫ সালে খালি করা হয়েছিল শতাব্দী প্রাচীন এই হস্টেল। গত ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। সময়ে কাজ শেষ না হওয়াতেই শুক্রবার বেলা ৩টে থেকে প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রশাসনিক ভবনে ডিন অব স্টুডেন্ট-সহ অন্য আধিকারিকদের ঘেরাও করেন পড়ুয়ারা। অবস্থান চলছে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের অফিসের সামনেও।
সংস্কারের কারণে পড়ুয়ারা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজারহাট হস্টেলে রয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছে। তার পরেও সংস্কারের কাজ এগোয়নি। উল্টে উপাচার্য বলছেন, সময় লাগবে।’’
পড়ুয়াদের অভিযোগ, হস্টেল এবং প্রেসিডেন্সি ক্যাম্পাসের মধ্যে যাতায়াতের জন্য বাসের বন্দোবস্ত আছে। কিন্তু সেই বাস চলে নির্দিষ্ট সময়ে। বেলা ১টায় ক্লাস শেষ হয়ে গেলে হস্টেলে ফেরার জন্য বিকেল ৪টের বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এ ভাবে সময়ের অপচয় হচ্ছে। তাঁদের দাবি, ‘‘পানীয় জল ও খাবারের ব্যবস্থা আমরা বাইরে কোথাও করে নেব। হস্টেলে থাকার ব্যবস্থাটুকু আগে করা হোক।’’
কলকাতার এই মুহূর্তের শিরোনাম কী - জানতে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy