Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ, ধুন্ধুমার বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতালে

চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে ই এম বাইপাসে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর চালালেন রোগীর পরিবারের সদস্যরা। ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৪:৩৮
Share: Save:

চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে ই এম বাইপাসে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর চালালেন রোগীর পরিবারের সদস্যরা। ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ চিকিৎসারত রোগীর পরিবারের লোকজন হাসপাতালে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। বাধা দিতে গেলে পুলিশের উপর পাল্টা হামলা চালায় তারা। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ইটের আঘাতে আনন্দপুর থানার ওসি-সহ তিন পুলিশকর্মী আহত হন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৩ সেপ্টেম্বর মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন পিকনিক গার্ডেনের বাসিন্দা অশোককুমার রায়। তিনি বর্তমানে আইটিইউ-এ ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ বাইকে করে একশোরও বেশি যুবক হাসপাতালে ঢুকে পড়ে ভাঙচুর চালায়। অশোকবাবুর পুত্র রাহুল রায় জানান, ৩ সেপ্টেম্বর ভোরবেলায় দোতলা বাড়ির সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর চোট পান তাঁর বাবা। ওই দিন বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতালে সকালে অস্ত্রোপচার হয়। রাহুলবাবুর অভিযোগ, ‘‘৫ তারিখে রাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানান, বাবার মাথার খুলি কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে। ওই খুলি শনিবার রাতে আমাদের হাতে দেওয়া হয়। আমাদের বক্তব্য, অস্ত্রোপচারের সঙ্গে সঙ্গে কেন ৩ তারিখে আমাদের হাতে কাটা খুলি দেওয়া হল না? নিয়ম অনুযায়ী, অস্ত্রোপচারের সঙ্গে সঙ্গে কাটা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ রোগীর পরিবারের হাতে দিতে হবে।’’ রাহুলবাবুর দাবি, ভুল অস্ত্রোপচার হওয়াতেই বাবা ভেন্টিলেশনে চলে গেল। এর জন্য চিকিৎসার গাফিলতিই সম্পূর্ণরূপে দায়ী।

ওই বেসরকারি হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশনস) শুভাশিস দত্তকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘মাথার খুলি বাদ দেওয়া হয়েছে কি না সে বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’’ তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘রোগীর পরিবারের লোকেরা শনিবার রাতে হাসপাতালের দোতলায় ঢুকে কর্তব্যরত চিকিৎসককে হুমকি দেন। বেশ কয়েক জন হাসপাতালের কর্মীকে মারধর করেন তারা। এর পর তারা নীচে রিসেপশনের কাচ, টিভি, কম্পিউটার ও টেলিফোন বোর্ডে ভাঙচুর করেন।’’

খবর পেয়ে আনন্দপুর থানার পুলিশ পরিস্থিতি সামলাতে এলে উত্তেজিত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুঁড়তে থাকে। ইটের আঘাতে আনন্দপুর থানার ওসি দেবজিৎ ভট্টাচার্যের বুকে চোট লাগে। ইটের আঘাতে জখম হন আরও তিন পুলিশকর্মী। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ১৫টি মোটরবাইক। ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মীকে কাজে বাধাদান, অবৈধ জমায়েত ও গোলমাল-সহ একাধিক মামলা রুজু করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় আরও কয়েক জন অভিযুক্ত রয়েছে। হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE