লোকারণ্য: মহালয়ার আগে কেনাকাটার ভিড়। রবিবার, নিউ মার্কেটে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
প্রবল ভিড়ের মধ্যে ধর্মতলার বাট্রাম স্ট্রিটে দাঁড়িয়ে নিউ মার্কেট থানার পুলিশ ভ্যান! অভিযোগ পেলেই ধরে তাতে বসিয়ে রাখছেন পুলিশকর্মীরা। ধৃতদের বেশির ভাগই ধর্মতলা চত্বরের হকার। সন্ধ্যা ৭টার পরে ভ্যানের ভিতর থেকে এক জন প্রবল চেঁচাতে শুরু করলেন, ‘‘আর মাত্র দু’ঘণ্টা বাকি স্যর। একটু ব্যবসা করতে দিন। আজই তো শেষ! এ রকম করবেন না।’’
ধমক দিয়ে থামিয়ে পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘মহিলাকে ধাক্কা মারার সময়ে মনে ছিল না! দরদাম করা কি অপরাধ?’’ হাতজোড় করে বন্দির আকুতি, ‘‘মাথার ঠিক ছিল না স্যর। ভিড়টা চলে যাবে। এ বারের মতো ছেড়ে দিন।’’
দেবীপক্ষ শুরুর আগের শেষ রবিবার এ রকমই একাধিক খণ্ডচিত্র দেখা গেল শহরের বাজারগুলিতে। সকাল থেকে পথে নামা জনতার ঢল বিকেল পেরোতেই যেন জনসমুদ্র। তার প্রভাব পড়ল রাজপথেও।
উত্তরের উল্টোডাঙা মেন রোড, গ্রে স্ট্রিট, বিধান সরণি থেকে মধ্য কলকাতার এস এন ব্যানার্জি রোড, দক্ষিণের গড়িয়াহাট মোড়ের আশপাশে দেখা গেল গাড়ির লম্বা লাইন। কেনাকাটা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ভোগান্তি হয় অনেকেরই।
বাড়তি ভিড়ের কথা মাথায় রেখে বিধান সরণিতে হাতিবাগান বাজারের কাছে ব্যারিকেড করে দেয় পুলিশ। ব্যারিকেডের দু’পাশে ক্রেতারা আর মাঝখান দিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। দুপুরের পরে সেই ব্যারিকেডও ভেঙে পড়ে। হাতিবাগানের উত্তরা মার্কেট, শ্রী মার্কেটে তখন তিল ধারণের জায়গা নেই। শ্রী মার্কেটে ঢোকার মুখে সাজের জিনিসের দোকান স্বপন হাজরার। তিনি বললেন, ‘‘বেশি ভিড়ে লাভ নেই। লোক বেশি হলে ধাক্কা মেরে পিছনের লোক সামনের জনকে বার করে দেন।’’
শহরের বড় বাজারগুলির মতো না হলেও অন্য দিনের তুলনায় বাড়তি ভি়ড় ছিল শপিং মলগুলিতেও। প্রবল ব্যস্তভাবে পোশাক দেখতে দেখতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া সুলগ্না দত্তবণিক বলছিলেন, ‘‘কথা বলতে পারছি না। সময় বাকি নেই। যা করার আজ, আর কাল মহালয়া। তার পরে তো পুজো!’’
শেষ মুহূর্তের কেনাকাটার মধ্যেই মানিকতলার সুমিতা বিশ্বাসের আবার মনে পড়েছে রাত পোহালেই মহালয়া শুনতে হবে। হগ মার্কেটে তাই ভিড়ের মাঝে জমে উঠল রেডিয়োর দাম নিয়ে দরাদরিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy