বন্ধ হয়েই পড়ে রয়েছে আন্তর্জাতিক টার্মিনালের এই অংশটি। নিজস্ব চিত্র
উৎসবের মরসুমে লাফিয়ে বাড়ছে বিমান-যাত্রীর সংখ্যা। বুধবার রাতে কলকাতা থেকে ৫,৯৮০ জন আন্তর্জাতিক যাত্রী অন্য দেশে উড়ে গিয়েছেন। এই সংখ্যাটা আগে চার হাজারের আশপাশে থাকত। সব মিলিয়ে কলকাতা থেকে এখন দিনে ৩৬-৩৭ হাজার যাত্রী অন্য শহরে উড়ে যাচ্ছেন।
এরই মধ্যে বুধবার রাতে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে মহিলাদের জন্য রাখা একটি ‘ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেক্টর’ আচমকাই খারাপ হয়ে যায়। কাজ করছিল বাকি একটি। এর ফলে মহিলাদের দেহ তল্লাশির লাইনে এক সময়ে ৪০০-র বেশি যাত্রী অপেক্ষা করতে শুরু করেন। শুরু হয়ে যায় গন্ডগোল।
কলকাতা থেকে বুধবার রাতে ইন্দোনেশিয়ার বালি যাচ্ছিলেন পায়েল সেনগুপ্ত। তিনি বৃহস্পতিবার বালি থেকে ফোনে বলেন, ‘‘দেহ তল্লাশির লাইনে আমাকে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। আমার উড়ান নেহাত এক ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে। ফলে আমার তাড়া ছিল না। কিন্তু অনেকেই অন্য উড়ানের জন্য লাইন ভেঙে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁদের উড়ান ছেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। সে কারণে এক সময়ে হই-হট্টগোল শুরু হয়ে যায়।’’
বিমানবন্দরের খবর, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে পুরুষ যাত্রীদের জন্য ছ’টি এবং মহিলাদের জন্য মাত্র দু’টি মেটাল ডিটেক্টর ডোর রয়েছে। বুধবার ওই দু’টির মধ্যেই একটি খারাপ হয়ে যায়। পায়েল জানিয়েছেন, কিছু লোক সেই মেশিনটি সারানোর চেষ্টা করেও পারেননি। পায়েলের স্বামীর দেহ তল্লাশি প্রায় এক ঘণ্টা আগে হয়ে গিয়েছিল। পুরুষ যাত্রীরা সবাই দেহ তল্লাশি শেষ করে পরিবারের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। শেষে ডোমেস্টিক থেকে মহিলাদের জন্য একটি মেটাল ডিটেক্টর ডোর এনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সিআইএসএফ। সিআইএসএফ সূত্রের খবর, রাতে দশটার পরে কলকাতা থেকে বেশির ভাগ আন্তর্জাতিক উড়ান ছাড়ে। তখনই শুরু হচ্ছে ভিড়। বুধবার রাতে বালির উড়ান ছাড়াও পরপর বিভিন্ন বিমান সংস্থার ব্যাঙ্কক ও হংকংয়ের উড়ান ছাড়ার কথা ছিল। যাত্রীদের চাপ বাড়তে শুরু করে।
এখন যেখানে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, সেই জায়গাটির পরিসর তুলনায় ছোট। ফলে রাতের দিকে একটু বেশি যাত্রী এসে গেলেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে। অথচ এর পাশেই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আরও একটি যে বেষ্টনী রয়েছে, সেটি পড়ে রয়েছে বন্ধ অবস্থায়। কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য এ দিন জানিয়েছেন, দ্বিতীয় ওই বেষ্টনী চালু করার জন্য কর্তৃপক্ষের হাতে পর্যাপ্ত এক্স-রে মেশিনও রয়েছে। কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে অভিবাসন দফতর এবং সিআইএসএফের লোকবল নিয়ে।
কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘লোকবল বাড়ানোর জন্য অভিবাসন ও সিআইএসএফ-কে আমরা বেশ কয়েক বার চিঠি দিয়েছি। ওঁরা লোকবল না বাড়ালে এই বেষ্টনী খোলা সম্ভব নয়। যে হারে আন্তর্জাতিক যাত্রী-সংখ্যা বাড়ছে, তাতে খুব তাড়াতাড়ি এই বেষ্টনী খোলার প্রয়োজন হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy