ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো স্টেশনের করিডরে বসেছে এমনই ঘড়ি। নিজস্ব চিত্র
ঘড়ি নির্মাণ এবং সেই ঘড়ির সময়ানুবর্তিতার জন্য সারা পৃথিবীতেই সুইৎজারল্যান্ডের কদর আলাদা।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় এ বার সেই সুইস সময়ানুবর্তিতা আমদানি করছেন কর্তৃপক্ষ। কন্ট্রোল রুমে মেট্রোর নিজস্ব ঘড়ি এবং প্ল্যাটফর্মের ঘড়ি ছুটবে একই তালে, নিঁখুত সময় মেনে। বড় ডায়ালে কালো হরফে লেখা সংখ্যা আর কাঁটার উপস্থিতি মনে পড়াবে ‘বিগ বেন’-এর মতো অ্যানালগ ঘড়ির রাজকীয়তা।
নির্মীয়মাণ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ছ’টি স্টেশনের প্রত্যেকটিতেই তিনটি করে বড় ডায়ালের ওই অ্যানালগ ঘড়ি ঝুলছে। সেগুলির সামনে এবং পিছন— দু’দিক থেকেই সময় দেখা যাচ্ছে। দু’টি ঘড়ি পিঠোপিঠি বসালে যেমন দেখতে লাগে, এ ক্ষেত্রেও তেমনই লাগবে বলে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রের খবর। প্রতিটি স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে পৌঁছনোর আগে সাধারণ পরিসর বা কমন এরিয়ায় ওই ঘড়ি থাকবে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রতিটি স্টেশনে তিনটি করে অ্যানালগ ঘড়ি এবং চারটি করে ডিজিটাল ঘড়ি থাকছে। কমন এরিয়ায় অ্যানালগ ঘড়ি থাকলেও প্ল্যাটফর্মে অবশ্য টাইমার-সহ ডিজিটাল ঘড়ি থাকছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রের খবর, প্ল্যাটফর্মে স্ক্রিন-ডোর থাকায় যাত্রীদের পক্ষে কখন ট্রেন আসছে, তা বোঝা সম্ভব নাও হতে পারে। যাত্রীদের সুবিধার জন্য প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা চারটি ডিজিটাল ঘড়ি ট্রেন আসার সময় জানাবে। পাশাপাশি, ট্রেন আসার ঠিক এক মিনিট আগে আপনা থেকেই ওই ঘড়ির সঙ্গে থাকা টাইমার চালু হবে। এর ফলে যাত্রীরা ট্রেন আসার সময় সম্পর্কে আগাম সচেতন হয়ে প্ল্যাটফর্মের স্ক্রিন ডোরের সামনে দাঁড়াতে পারবেন। পৃথিবী জুড়ে বিমানবন্দর এবং রেল স্টেশনে ব্যবহারের উপযোগী বড় ঘড়ি তৈরি করে, এমন একটি সুইস সংস্থা ওই অ্যানালগ এবং ডিজিটাল ঘড়িগুলি সরবরাহ করছে।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রের খবর, মেট্রোর কন্ট্রোল রুমের মূল ঘড়ির সঙ্গে সব ক’টি ঘড়ি জিপিএস প্রযুক্তিতে যুক্ত থাকছে। ফলে কখনওই সময়ের হেরফের হবে না। মেট্রোর সিগন্যালিং ব্যবস্থা, টিকিট কাউন্টার এবং স্টেশনে প্রবেশের পথে টোকেন যাচাই করার গেট— সব কিছুই এক সময় মেনে চলবে।
হাওড়া স্টেশনের বড় ঘড়ির সঙ্গে এখন আর সে ভাবে কেউ হাতঘড়ির সময় মেলান না। তবে স্টেশন চত্বরে দেখা করার নির্দিষ্ট জায়গা হিসেবে বড় ঘড়ির এখনও অপরিহার্য। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নতুন ঘড়িগুলি চেহারায়-আঙ্গিকে অনেকটা বড় ঘড়ির মতোই। তবে তাতে সময়ও নিখুঁত পাওয়া যাবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নির্মাণসংস্থা, কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশেনের রোলিং স্টক বিভাগের ডিরেক্টর অনুপকুমার কুণ্ডু বলেন, ‘‘ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটাতেই বড় আকারের ঘড়িগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে। বড় ডায়ালের ঘড়ি স্টেশনের সাজ-সজ্জাকে অন্যমাত্রা দেবে।’’
ভারতীয় রেলের সঙ্গে সুইস প্রযুক্তির যোগাযোগ অধুনা অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে এসেছে। এক সময়ে ট্রেনের কামরা এবং বাষ্পচালিত ইঞ্জিন সুইস প্রযুক্তিতেই তৈরি হতো। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নতুন ঘড়িগুলি সেই পুরনো যোগাযোগকেই আরও একবার টাটকা করে তুলবে বলে মত মেট্রো কর্তৃপক্ষের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy