অকুস্থল: শ্যামনগর রোডের প্রকল্প এলাকায় এখানেই হামলা চালায় সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। বুধবার, দমদমে। নিজস্ব চিত্র
প্রোমোটারের দাবি, তিনি কোনও তোলাবাজের হুমকি ফোন পাননি। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বলছেন, তোলাবাজি হতেও পারে, তবে প্রকল্প এলাকায় ঢুকে ভাঙচুর, শূন্যে গুলি চালনার ঘটনার সঙ্গে সিন্ডিকেট যোগ কোনও ভাবেই নেই। বুধবার ভোরে দমদমের শ্যামনগর রোডে গুলিচালনার পিছনে তবে কী কারণ রয়েছে, আপাতত এই প্রশ্নের উত্তরই খুঁজছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন ভোরে তিন যুবক বাইকে চড়ে শ্যামনগর রোডের প্রকল্প এলাকায় ঢোকে। তখন সেখানে কাজ করছিলেন প্রায় ৩০ জন ঠিকা শ্রমিক। আচমকা সশস্ত্র যুবকেরা ঢুকে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয়। প্রকল্পে উপস্থিত নির্মাণকারী সংস্থার ম্যানেজার ও ঠিকা শ্রমিকদের ভয় দেখাতে ইট মেরে ভাঙা হয় কার্যালয়ের কাচ। প্রকল্প এলাকার বাইরে একটি গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। সেটির কাচও ভাঙা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল ছাড়ার আগে দুষ্কৃতীরা শূন্যে চার রাউন্ড গুলি চালিয়ে জানায় দমদম পার্ক এলাকার দুষ্কৃতী বাবু নায়েক তাদের পাঠিয়েছে।
এর আগে দমদম পার্কে শাগরেদ পাঠিয়ে এক প্রোমোটারকে গুলিবিদ্ধ করার আগে বাবুর হুমকি ফোন গিয়েছিল সেই প্রোমোটারের কাছে। এ দিনের ঘটনায় প্রোমোটার সুবাই ঘোষ জানান, তিনি কোনও হুমকি ফোন পাননি। যুবকেরা কোনও টাকা চেয়েছে কি না, সে কথাও বলছেন না তিনি। তা হলে দুষ্কৃতী হানার কারণ কী? পুলিশ সূত্রের খবর, ওই প্রকল্প এলাকায় ইমারতি সামগ্রীর বরাত যে সকল সিন্ডিকেট পেয়েছে, তার মধ্যে অন্য ওয়ার্ডের কিছু সিন্ডিকেট রয়েছে। যার প্রেক্ষিতে ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের একটি সিন্ডিকেটের রোষের জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে এখনই এ বিষয়ে নিশ্চিত নন তদন্তকারীরা। স্থানীয় তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন যে প্রকল্প এলাকায় গুলি চলেছে, সেখানে জলাভূমি নিয়ে একটি বিতর্ক ছিল। কোটি টাকার প্রকল্পে কারা ইমারতী সামগ্রী সরবরাহ করবে, তা নিয়ে আলোচনাও কম হয়নি। তৃণমূলের একটি অংশের বক্তব্য, বাবু নায়েকের নাম ভাঙিয়ে দলের অভ্যন্তরে রেষারেষির জেরে এই ঘটনা কি না, তা খতিয়ে দেখা উচিত।
যদিও প্রোমোটার বলেন, ‘‘সিন্ডিকেট নিয়ে আমার প্রকল্পে কোনও সমস্যা নেই। পাড়ার ছেলেরাই বরাত পেয়েছেন।’’ স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অঞ্জনা রক্ষিতও বলেন, ‘‘ওয়ার্ডের ছেলেরাই সামগ্রী সরবরাহ করছেন। তোলাবাজির ঘটনা ঘটতে পারে, তবে সিন্ডিকেটের কোনও বিষয় নেই।’’ ঘটনাস্থলের কাছেই বাড়ি দক্ষিণ দমদমের পুরপ্রধানের। তিনি বলেন, ‘‘দু’রকম ব্যাখ্যাই কানে এসেছে। পুলিশ প্রশাসন নিশ্চয়ই দোষীদের খুঁজে বার করবে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, সব সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে তদন্তের কাজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy