Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

যানবাহনের জটে স্ট্র্যান্ড রোড, নিত্য ভোগান্তি

ফেয়ারলি প্লেসের সামনে স্ট্র্যান্ড রোডে দাঁড়িয়ে একের পর এক বাস। আশপাশের গলিতেও দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য গাড়ি। অভিযোগ, গা়ড়ির ধোঁয়া এবং হর্নের শব্দে নিত্য নাজেহাল হচ্ছেন যাত্রীরা। এই যানজটের কারণে ফেয়ারলি প্লেস থেকে হাওড়া স্টেশন পৌঁছতে লেগে যায় প্রায় এক ঘণ্টা।

চেনা ছবি। —নিজস্ব চিত্র।

চেনা ছবি। —নিজস্ব চিত্র।

সুপ্রিয় তরফদার
শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৩৯
Share: Save:

ফেয়ারলি প্লেসের সামনে স্ট্র্যান্ড রোডে দাঁড়িয়ে একের পর এক বাস। আশপাশের গলিতেও দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য গাড়ি। অভিযোগ, গা়ড়ির ধোঁয়া এবং হর্নের শব্দে নিত্য নাজেহাল হচ্ছেন যাত্রীরা। এই যানজটের কারণে ফেয়ারলি প্লেস থেকে হাওড়া স্টেশন পৌঁছতে লেগে যায় প্রায় এক ঘণ্টা। নিত্যযাত্রীরা জানান, প্রতি বার ইঞ্জিন চালু করায় যে পরিমাণ ধোঁয়া (কার্বন মনোক্সাইড) বেরোয় তাতে বায়ুদূষণের মাত্রা অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পায়। এর ফলে চোখ জ্বালা, শ্বাসকষ্ট, কাশির সমস্যায় জেরবার হতে হয়। পাশাপাশি, টানা হর্নের শব্দে পরিস্থিতি আরও অসহনীয় হয়ে ওঠে।

পিছিয়ে নেই ব্রেবোর্ন রোডও। রাস্তার ধারের দোকানগুলি কার্যত রাস্তায় এসে পড়ে। ফলে সকাল দশটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত এখানে গাড়ি চালানো বা হাঁটা দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। নিত্যযাত্রীরা জানাচ্ছেন, ফেয়ারলি প্লেস পর্যন্ত বাস স্বাভাবিক ছন্দে এলেও এর পর থেকে থেমে থেমে চলে। যাত্রীদের অভিযোগ, সন্ধ্যা সাতটা থেকেই তা তীব্র আকার নেয়। অথচ ব্রেব্রোর্ন রোডের ব্রিজের নীচ দিয়ে গেলে দেখা যাবে রাস্তা যথেষ্টই ফাঁকা। ফেয়ারলি প্লেসের পর থেকে দু’পা এগিয়েই বাস দাঁড়িয়ে যায়।

কেন এই যানজট? যাত্রীরা জানান, ভূতল পরিবহণের লঞ্চ পরিষেবা চালু থাকে রাত আটটা পর্যন্ত। তাই ডালহৌসি ফেরত যাত্রীরা লঞ্চঘাটে যেতে এই রাস্তা ব্যবহার করেন। অন্য দিকে, বেহালা, টালিগঞ্জ, রবীন্দ্র সদন, ক্যামাক স্ট্রিট বা ধর্মতলা থেকে হাওড়াগামী যাত্রীদের ফেরারও অন্যতম পথ স্ট্র্যান্ড রোড। ফলে এই রাস্তার উপরে ওই সময়ে গাড়ির চাপ থাকে যথেষ্ট।

অভিযোগ, কোনও স্টপেজ না থাকা সত্ত্বেও ভিড়ে ঠাসা বাসে যাত্রী তোলার হিড়িকে চালকেরা বাসের গতি কমিয়ে দেন। পিছনের গাড়ি অনবরত হর্ন দিলেও বিশেষ লাভ হয় না। স্ট্র্যান্ড রোডের যানজট এড়াতে ডালহৌসি ফেরত অধিকাংশ নিত্যযাত্রী হেঁটেই লঞ্চঘাটে পৌঁছন।

এ সবের জন্য অভিযোগের আঙুল উঠছে অনিয়ন্ত্রিত ট্রাফিক ব্যবস্থার দিকে। যাত্রীদের দাবি, ওখানে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কর্তব্যরত পুলিশ অপ্রতুল। একের পর এক ঠেলা গাড়ি, বেআইনি পার্কিং, গতি কমিয়ে গাড়ি চালানো এই সব কিছুকেই উপেক্ষা করে ট্রাফিক পুলিশ।

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাচ্ছেন জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটস এর সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘বাস রাস্তা থেকেই যাত্রী তুলবে। যানজট এর জন্য হয় না। রাস্তার ধারে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকার জন্য হয়। পুলিশ তাদের থেকে তোলা তোলে। ওখান থেকে পার্কিং সরালে সমস্যা মিটবে।’’

যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে কলকাতা পুলিশের এক অফিসার বলেন ‘‘অভিযোগ ভিত্তিহীন। সিসিটিভি –তে সমস্ত কিছুর নজরদারি চলে। রাস্তার ধারে কিছুটা জায়গায় বৈধ পার্কিং রয়েছে। এ ছাড়া অন্য জায়গায় গাড়ি দাঁড় করালে নিয়মিত জরিমানা করা হয়। প্রয়োজনে তা আরও বাড়ানো হবে।’’

পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘যানজট যত বাড়বে ততই দূষণ বাড়বে। স্ট্র্যান্ড রোড দিয়ে গেলে মনে হয় কোনও মেঘের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আসলে সেই মেঘ গাড়ির কালো ধোঁয়া। এই নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে একটি মামলাও চলছে। ’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Traffic Jam sufferings Strand Road
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE