কার্টুন: শৌভিক দেবনাথ
রাত ১১ টা। চাঁদনি থেকে ইলেক্ট্রিক সরঞ্জাম কিনে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে তিলজলার বাসিন্দা সন্তু রায়। ট্যাক্সির দেখা নেই। যদিও বা একটা ট্যাক্সি এসে দাঁড়াল, হাতে মালপত্র দেখে চালক বললেন, যেতে পারি। কিন্তু ভাড়ার থেকে ৫০ টাকা বেশি লাগবে।
একই রকমের অভিজ্ঞতা অভিজিৎ রায়ের। শোভাবাজার মেট্রো থেকে বেরিয়ে ট্যাক্সি থামালেন যাবেন সল্টলেকে। সাধারণত বাসেই যান। অফিসে দ্রুত পৌঁছতে হবে। ঠিক সময় পৌঁছেও দিয়েছিলেন চালক। বিপত্তি ঘটল, ভাড়া মেটাতে গিয়ে। প্রিন্টার মিটার থেকে বিলই বেরোচ্ছে না। কারণ জানতে চাইলেন অভিজিৎ। চালকের জবাব, কাগজ নেই দাদা।
যাত্রীদের বরাবরই অভিযোগ, ভাড়া বাড়ছে। কিন্তু পরিষেবা দেওয়ার সময় নানান সমস্যার মুখে পড়তে হয়। একটু রাত হলেই হলুদ ট্যাক্সির চালকেরা যেতে চান না। কখনও বলেন, ‘গ্যারেজ গাড়ি’ যাবে না। কখনও যেতে চাইলেও ভাড়ার থেকে বেশি দাবি করেন। হাতে বেশি মালপত্র নিয়ে উঠলে চাহিদা আরও বেড়ে যায়। প্রিন্টার মিটার সব ট্যাক্সিতেই লাগানো হয়েছে। যদিও অধিকাংশ চালকই বিল দিতে চান না। কাগজ নেই বলে দায় সেরে ফেলেন।
সম্প্রতি ফের বেড়েছে ট্যাক্সি ভাড়া। উঠলেই এখন ৩০ টাকা। পরিবহণ দফতর চালক, মালিকদের দাবি মেনে ভাড়া বাড়িয়েছে। তার সঙ্গে ট্যাক্সি সংগঠনগুলিকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে, রাস্তায় ট্যাক্সি বের করলে যাত্রী প্রত্যাখ্যান করা যাবে না। বেশি ভাড়াও চাওয়া যাবে না। যাত্রীদের বিল দিতে হবে। পরিষেবা নিয়ে কোনও অভিযোগ উঠলে তদন্ত হবে।
আরও পড়ুন: ভিডিয়োয় ভয়ঙ্কর মুহূর্ত, পাইথনের ফাঁসে বনকর্মী
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, যাত্রীদের সুবিধার জন্য টোল ফ্রি ১৮০০৩৪৫৫৯২ নম্বর চালু করা হচ্ছে। ছুটির দিন ছাড়া সকাল ১১ থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চালু থাকবে। এছাড়াও আর একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর৮৯০২০১৭১৯১ রয়েছে, এই নম্বরটি ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকবে।
আরও পড়ুন: কৃত্রিম পা নিয়েই কাজে সার্জেন্ট
এই দু’টি নম্বর গাড়িতে লিখে রাখতে হবে। পরিষেবা নিয়ে কোনও সমস্যা হলেই, যাত্রীরা ফোন করে জানাতে পারবেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলেই চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। প্রথম অভিযোগ প্রমাণ হলে, তিন মাস লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত হতে পারে। পরবর্তী ক্ষেত্রে ৬ মাস। তিন বারের বেশি হলে গুরুত্ববুঝে লাইসেন্স বাতিলও করা হতে পারে।
নম্বর চালুর আগে বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন, ওয়েস্ট বেঙ্গল ড্রাইভার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন, প্রগ্রেসিভ ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন, ক্যালকাটা ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা। তারা সরকারের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত হয়েছে।বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিমল গুহ বলেন, “অভিযোগ পেলে এতদিন আমার নিজেরাই ব্যবস্থা নিতাম। অথবা মোটর ভেহিকলস দফতরকেও বিষয়টি জানাতাম। এবার সরকারের দেওয়া দু’টি নম্বরও গাড়িতে থাকবে। আমরাও চাই যাত্রীরা ভাড়া দিয়ে গাড়িতে উঠে ভাল পরিষেবাও পান।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy