Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

দৃষ্টিহীনতার বাধা পেরিয়ে মাধ্যমিকে সফল শুভদীপ

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পড়ুয়াদের মধ্যে শুভদীপই প্রথম বলে দাবি তার স্কুলের। নরেন্দ্রপুর ব্লাইন্ড বয়েজ অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ ঘোষের কথায়, ‘‘মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে এখনও কিছু জানানো হয়নি।

লড়াকু: গান নিয়েও উৎসাহী শুভদীপ।  ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

লড়াকু: গান নিয়েও উৎসাহী শুভদীপ। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৯ ০০:২৯
Share: Save:

সামনে শুধুই আঁধার। তবুও তা কখনও বাধা হয়নি তার কাছে। যার ফলস্বরূপ দুর্গাপুরের বাসিন্দা, নরেন্দ্রপুর ব্লাইন্ড বয়েজ অ্যাকাডেমির ছাত্র শুভদীপ মণ্ডল এ বার মাধ্যমিকে ৬৬৩ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হল।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পড়ুয়াদের মধ্যে শুভদীপই প্রথম বলে দাবি তার স্কুলের। নরেন্দ্রপুর ব্লাইন্ড বয়েজ অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ ঘোষের কথায়, ‘‘মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে এখনও কিছু জানানো হয়নি। তবে আমরা যেটুকু জেনেছি, শুভদীপই দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে।’’ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানান, এ বছর ১৮৫ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৭৫ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। পাশের হার ৯৪.৫৯ শতাংশ।

শুভদীপের বাবা আদিত্য মণ্ডল ও মা তনুশ্রী মণ্ডল দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের সি-জোনের শান্তিপথের বাসিন্দা। আদিত্যবাবু দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টের (ডিএসপি) কর্মী। তাঁদের মেয়ে সুষমা বায়োমেডিক্যাল ল্যাবরেটরি সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে স্নাতকোত্তর পড়ছেন। আদিত্যবাবুরা জানান, জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন শুভদীপ। দুর্গাপুরে দৃষ্টিহীনদের পড়াশোনার তেমন ব্যবস্থা নেই। তাই তাকে নরেন্দ্রপুরের ওই অ্যাকাডেমিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। প্রথম শ্রেণি থেকে সেখানেরই ছাত্র শুভদীপ।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

আদিত্যবাবু জানান, বরাবরই ভাল ফল করেছে শুভদীপ। পড়াশোনার পাশাপাশি গানেও আগ্রহী সে। শুভদীপ বলে, ‘‘টিভি-তে বিভিন্ন গানের অনুষ্ঠান শুনে আমার গানের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। প্রতিযোগীদের গান শুনে মনে হয়, আমিও যদি
ওদের মতো গাইতে পারতাম!’’ বড় হয়ে তাই গায়ক হওয়ার স্বপ্নটাকে জিইয়ে রাখতে চায় সে।

এ দিন বাবার সঙ্গে নরেন্দ্রপুরে মাধ্যমিকের মার্কশিট আনতে আসে শুভদীপ। সে বলে, ‘‘হার না মানার মানসিকতা গড়ে দিয়েছে আমাদের স্কুলই। গান নিয়েও স্কুল বরাবর উৎসাহ দিয়েছে আমাকে।’’ আদিত্যবাবুর সহকর্মী সৌরভ দত্ত বলেন, ‘‘ছোট্ট শুভদীপকে নরেন্দ্রপুরে রেখে এসে খুব মন খারাপ করে থাকত গোটা পরিবার। আজ ওঁদের চোখে আনন্দের জল।’’ এমনই আরও খুশির মুহূর্তের প্রতীক্ষায় থাকতে চায় গোটা পরিবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE