গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
লকডাউনের মরসুমে নিত্যনতুন কায়দায় অনলাইন প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। কখনও সিম বদলে প্রতারণা, কখনও আবার নামকরা ই-কমার্স সংস্থার নাম ভাঁড়িয়ে প্রতারণা। সেই তালিকায় এ বার যোগ হল রেস্তরাঁর নাম করে লোক ঠকানো। পার্ক স্ট্রিটের একটি নামী রেস্তরাঁর নাম করে প্রায় ৩২ হাজার টাকার প্রতারণার ঘটনা ঘটল শহরে।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতারিত হয়েছেন নেতাজিনগর থানা এলাকার বাসিন্দা জয়ন্ত মজুমদার। সোমবার তিনি নেতাজিনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে অভিযোগ, এক শীর্ষ পুলিশ কর্তা কলকাতা পুলিশের এক কর্তাকে ফোন করে সুপারিশ করার পরই তাঁর অভিযোগ নেয় থানা। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর কাছে একটি মেসেজ এসেছিল যেখানে, পার্ক স্ট্রিটের একটি নামী রেস্তরাঁ হোম ডেলিভারি করছে বলে উল্লেখ ছিল। তা দেখে তিনি শনিবার রাত পৌনে ১১টা নাগাদ ওই নম্বরে ফোন করেন। যে ব্যক্তি ফোন ধরেন তিনি নিজেকে রেস্তরাঁর ম্যানেজার বলে পরিচয় দেন। ম্যানেজার তাঁকে জানান, লকডাউন থাকলেও তাঁদের রেস্তরাঁ থেকে খাবার হোম ডেলিভারি হচ্ছে। জয়ন্তবাবু খাবার অর্ডার দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাঁকে জানানো হয়, অর্ডার দেওয়ার পরের দিন খাবার ডেলিভারি করা হবে। কিন্তু তার আগে গ্রাহককে ১০ টাকা দিয়ে পরের দিনের অর্ডার বুক করতে হবে।
জয়ন্তবাবু রাজি হয়ে যান। ফোনের ও পারের ব্যক্তি তখন তাঁকে জানান যে, একটি লিঙ্ক পাঠানো হবে। সেই লিঙ্কে ক্লিক করে ১০ টাকা দিয়ে বুকিং করতে হবে। জয়ন্তবাবুর দাবি, সেই লিঙ্কে ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ২ হাজার টাকা ডেবিট হয়ে যায়। দু’হাজার টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে বেরিয়ে যেতে দেখে সঙ্গে সঙ্গে তিনি ‘ম্যানেজার’কে ফোন করেন। জয়ন্তবাবু বলেন, ‘‘ম্যানেজার দাবি করেন ভুল করে ওই টাকা কাটা হয়েছে। ফেরত দেওয়া হবে ওই দু’হাজার টাকা। ওরা আরও একটি লিঙ্ক পাঠায়।” এর পর জয়ন্তবাবু সেই লিঙ্ক ক্লিক করলে টাকা ফেরতের বদলে আরও ৩০ হাজার টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে বেরিয়ে যায়। এর পরই ব্যাঙ্কের রিলেশনশিপ ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন জয়ন্তবাবু এবং তাঁর পরামর্শে তাঁর ডেবিট কার্ড ব্লক করে দেন।
আরও পড়ুন: বড়বাজারে বেড়ে চলেছে সংক্রমণ, চিন্তিত রাজ্য
ব্যাঙ্ক সূত্রে তিনি জানতে পারেন যে, টাকা পেটিএমের মাধ্যমে কাটা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতা পুলিশের ব্যাঙ্ক প্রতারণা দমন শাখা এই ঘটনার তদন্ত করছে। শুধু জয়ন্তবাবু নন, এ রকম আরও কয়েক জন একই কায়দায় প্রতারিত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ‘মন কি বাত-এর পরে আমাদের কথা আর মনে নেই মোদীজির!’
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, পেটিএম প্রতারণার ক্ষেত্রেও যেমন লিঙ্কের মাধ্যমে একটি বিশেষ অ্যাপ প্রতারিতের মোবাইলে ডাউনলোড করিয়ে মোবাইলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় প্রতারকরা, সেই একই কায়দা ব্যবহার করা হয়েছে এ ক্ষেত্রেও। তবে তদন্তকারীদের এক জন বলেন, ‘‘পার্ক স্ট্রিট এখন কনটেনমেন্ট জোন। রেস্তরাঁ সম্পূর্ণ বন্ধ। গ্রাহকরা এই সমস্ত বিজ্ঞাপন দেখে রেস্তরাঁয় এক বার ফোন করলে প্রতারণা ঠেকানো যায়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy