Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পুজোর কাজে এ বার অফিসও

শহরের পুজোয় কর্পোরেটের ছোঁয়া বেশ কয়েক বছর ধরেই লেগেছে। তা সে প্রতিযোগিতার জন্য ‘এজেন্ট’ হোক কিংবা হোক ‘ব্র্যান্ডিং’-বিপণনের পেশাদার নিয়োগ, ইতিমধ্যেই তার সাক্ষী হয়েছে শহর।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:১৪
Share: Save:

শহরের পুজোয় কর্পোরেটের ছোঁয়া বেশ কয়েক বছর ধরেই লেগেছে। তা সে প্রতিযোগিতার জন্য ‘এজেন্ট’ হোক কিংবা হোক ‘ব্র্যান্ডিং’-বিপণনের পেশাদার নিয়োগ, ইতিমধ্যেই তার সাক্ষী হয়েছে শহর। তাতেই জুড়েছে আরও একটি পালক। পুজোর জন্য আস্ত অফিস তৈরি করে ফেলেছেন টালা পার্কের একটি পুজো কমিটির কর্তারা। সেখানে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে মাসিক বেতনের বিনিময়ে কাজ করছেন কয়েক জন কর্মী।

গত কয়েক বছরে বাজেট বাড়িয়ে শহরের পুজো মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে টালার এই পুজোটি। সেই জায়গা আরও পোক্ত করতে এ বার অফিস বানিয়ে আনা হচ্ছে পেশাদার ছোঁয়া। সেখানে এখন কাজ করছেন পাঁচ জন। এক জন কো-অর্ডিনেটর, দু’জন রয়েছেন বিপণন বিভাগে। এক জন অ্যাকাউট্যান্ট ও এক জন ডিজাইনারও রয়েছেন অফিসে। কর্মীদের বেতন বাবদ মাসিক ৮০ হাজার টাকা খরচ করছেন পুজো কমিটির কর্তারা। আপাতত পাঁচ জনই চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে কর্মরত। একটি ঘরেই আপাতত অফিস চলছে। কিছু দিনের মধ্যেই অফিস সংস্কারের কাজ শেষ হওয়ার কথা। তার পরেই পূর্ণাঙ্গ অফিস তৈরি হবে।

কিন্তু কী এমন প্রয়োজন হল যে একটি গোটা অফিস খুলতে হল পুজোর জন্য? এক কর্তার মতে, ‘‘লাগাতার পরিকল্পনা না থাকলে বড় পুজো করা যায় না। তাই কর্মী নিয়োগ করে অফিস করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, কর্মীদের শেষ কয়েক মাসে অন্যতম প্রধান কাজ ছিল, কোন কর্পোরেট সংস্থা কোথায়, কেমন বিজ্ঞাপনে কত অর্থ খরচ করেছে, তার হিসেব করা। বিভিন্ন নামী পুজোর বিজ্ঞাপনের ছবি তুলে সম্ভাব্য বিজ্ঞাপনদাতাদের নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছেন তাঁরা। তার পরে বিভিন্ন পুজোয় অর্থ ঢালা ওই সব সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। বোঝানো হয়েছে, শহরের মানচিত্রে টালার এই পুজোর গুরুত্ব।

বিজ্ঞাপন টানতে পুজো কমিটির এই প্রস্তুতিতে পেশাদারিত্বের ছোঁয়া রয়েছে বলে মনে করছেন বিপণন বিশেষজ্ঞ রাম রায়। তাঁর মতে, কোন সংস্থার কারা ‘টার্গেট অডিয়েন্স’ বা নির্দিষ্ট ক্রেতা, তা জানতে পারলে কাজটা সহজ হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘‘পুজোর বিজ্ঞাপন বাজারেও প্রতিযোগিতা ক্রমশ বাড়ছে। সেখানে পুজো কমিটির এই পেশাদারি মনোভাব কাজে আসবে।’’

গত কয়েক বছরে তরুণ প্রজন্ম পুজোয় সে ভাবে উঠে আসেনি। বরং সেই প্রজন্ম তাদের নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। ফলে ‘বড়’ পুজো করতে গেলে টাকা খরচ করেই লোকবল বাড়াতে হবে। সে কারণেই অফিসের প্রয়োজন পড়ছে— তেমনই মত পুজো কমিটির কর্তা অঞ্জন বসুর। পাশাপাশি, বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার সামাজিক কর্মসূচি পালনের দায়িত্ব নিচ্ছেন তাঁরা। তাতে এক দিকে যেমন সামাজিক দায়িত্ব পালন হচ্ছে, তেমনই ওই সব সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কও তৈরি করা যাচ্ছে। এরই সঙ্গে তাঁরা বিভিন্ন জায়গার জন্য ডিজাইনিংয়ের কাজও করছেন। তা থেকেও উপার্জন করছে পুজো কমিটি। যা পুজোর অর্থনৈতিক তহবিলকে শক্তি জোগাচ্ছে। অফিস প্রসঙ্গে কো-অর্ডিনেটর রঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘পুজো বাঁচিয়ে রাখতে এমন সব ‘কনসেপ্ট’ই ভরসা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Puja Office Corporate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE