Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

পুড়ে মৃত্যু বধূর, পাকড়াও স্বামী এবং দেওর

মাঠে দগ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে এক তরুণীর দেহ। রবিবার সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ নাদিয়াল থানা এলাকার ভাঙা খালের কাঞ্চনতলায় ওই দৃশ্য দেখে চমকে উঠেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

শুক্লা কর্মকার

শুক্লা কর্মকার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯ ০১:৪২
Share: Save:

মাঠে দগ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে এক তরুণীর দেহ। রবিবার সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ নাদিয়াল থানা এলাকার ভাঙা খালের কাঞ্চনতলায় ওই দৃশ্য দেখে চমকে উঠেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই খবর দেন থানায়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা ওই তরুণীকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতার নাম শুক্লা কর্মকার (২০)। তাঁর পরিবারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে বধূ হত্যার দায়ে পুলিশ শুক্লার স্বামী রবি কর্মকার ও দেওর সমীর কর্মকারকে গ্রেফতার করেছে। আজ, সোমবার ধৃতদের আদালতে তোলা হবে। তবে ওই তরুণী গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন না কি কেউ তাঁকে পুড়িয়ে মেরেছে, তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার নোদাখালির বাসিন্দা রবির সঙ্গে সেখানকারই বাসিন্দা শুক্লার বিয়ে হয় বছর চারেক আগে। ওই দম্পতির এক বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। পেশায় কাঠগোলার কর্মী রবি নাদিয়াল থানার কাঞ্চনতলায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। শুক্লার বাবা সমীর ঘোষ পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকে পণের দাবিতে জামাই-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেয়ের উপরে প্রায়ই অত্যাচার চালাতেন।

স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, এ দিন ভোরে তাঁদেরই কয়েক জন নুরউদ্দিন মাঠের কাছে আগুনের শিখা দেখতে পান। কাছে গিয়ে তাঁরা দেখেন, পড়ে রয়েছে শুক্লার দেহ। ডিসি (বন্দর) ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘মৃতদেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে পুরো ঘটনা পরিষ্কার হবে।’’

শুক্লার জ্যাঠামশাই শঙ্কর ঘোষের অভিযোগ, ‘‘জামাইয়ের অত্যাচারে বছর দেড়েক আগে শুক্লা বাপের বাড়ি এসে দীর্ঘদিন ছিল। আমরা বুঝিয়ে ওকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে আসি। কিন্তু সেখানে যাওয়ার কয়েক দিন পরে মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেও রবি চিকিৎসা করায়নি। যার জন্য ফের শুক্লাকে আমরা নোদাখালিতে নিয়ে আসি।’’ তার পরে তাঁকে ফের শ্বশুরবাড়ি পাঠান বাড়ির লোক। শঙ্করবাবুর আরও অভিযোগ, ‘‘জামাইয়ের অত্যাচারে ঘনঘন বাড়ি চলে আসত মেয়েটা। শান্তিতে সংসার করতে জামাইকে অনেক বুঝিয়ে ছিলাম। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল।’’

শুক্লার বাবা সমীরবাবু বলেন, ‘‘জামাইয়ের কাছে ফিরে গেলেও অনেক লাঞ্ছনা সহ্য করতে হত মেয়েকে। জামাই ও তার বাড়ির লোকেদের জন্যই অকালে চলে যেতে হল ওকে। শুধু চাইব, ধৃতদের কঠোর শাস্তি হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Woman Fire Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE