Advertisement
০৫ মে ২০২৪

গুলিতে মৃত্যু যুবকের, ধৃত মামাতো ভাই

কয়েক দিন আগেই কামারহাটি এলাকায় ধার শোধ করা নিয়ে বচসার জেরে গুলি করে খুন করা হয়েছিল এক যুবককে। ঘটনাটি ঘটেছিল একেবারে পুলিশ ফাঁড়ির সামনেই।

অনিল আগরওয়াল

অনিল আগরওয়াল

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছিল দুই ভাইয়ের মধ্যে।

আচমকাই সেখান থেকে গুলির শব্দ শুনতে পান প্রতিবেশীরা। তাঁরা গিয়ে দেখেন, মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এক ভাই। তাঁর মাথা ফুঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছে গুলি।সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কামারহাটির গ্রাহাম রোডে। পুলিশ জানায়, নিহত যুবকের নাম অনিল আগরওয়াল (৪৫)। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে অনিলের মামাতো ভাই বিজয় সিংহানিয়াকে।

কয়েক দিন আগেই কামারহাটি এলাকায় ধার শোধ করা নিয়ে বচসার জেরে গুলি করে খুন করা হয়েছিল এক যুবককে। ঘটনাটি ঘটেছিল একেবারে পুলিশ ফাঁড়ির সামনেই। অতীতেও কামারহাটি এলাকায় অনেক অপরাধমূলক ঘটনা ঘটেছে। তাই সোমবার ওই খুনের পরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কামারহাটিতে কী ভাবে

পৌঁছচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র?

ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী বলেন, ‘‘কামারহাটি-সহ ব্যারাকপুরের বিভিন্ন

এলাকায় মাঝেমধ্যেই তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ভোট ঘোষণার পর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এলাকায় দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য আগের থেকে এখন অনেকটাই কমেছে। সব জায়গাতেই কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে।’’ তবে সোমবারের ঘটনাটি পারিবারিক সমস্যা থেকেই ঘটেছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার।

পুলিশ সূত্রের খবর, বেলঘরিয়ার ষষ্ঠীতলার বাসিন্দা অনিল পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ছিলেন। তাঁর মামাতো ভাই বিজয়ের বাড়ি গ্রাহাম রোডে। বিজয় পারিবারিক তেলের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। বাড়ির কাছেই তাঁদের তেলের মিল রয়েছে। পরিবারের লোকেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, ব্যবসা সংক্রান্ত সমস্যার জেরে বেশ কিছু দিন ধরেই মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন বিজয়। তা নিয়েই ওই রাতে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছিলেন অনিল। সেই সময়ে ঘরে ওই দু’জন ছাড়া অন্য কেউ ছিলেন না। বেশ কিছু ক্ষণ দু’জনের মধ্যে কথাবার্তা চলে। তার পরেই ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শব্দ শুনে তাঁরা গিয়ে দেখেন ওই কাণ্ড! তখন সবাই মিলে বিজয়কে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে কামারহাটি ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। আসে বেলঘরিয়া থানার

পুলিশও। অনিলকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত

বলে ঘোষণা করেন। এর পরেই গ্রেফতার করা হয় বিজয়কে। পুলিশ সূত্রের খবর, জেরায় ওই যুবক দাবি করেছেন, তিনি অনিলকে লক্ষ্য

করে গুলি চালাননি। বরং আলোচনার মাঝে নিজের কপালে রিভলভার ঠেকিয়ে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে অনিল রিভলভারটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তখনই কোনও ভাবে তা থেকে গুলি ছিটকে অনিলের কপালে ঢুকে যায়।

তবে ওই তেলের ব্যবসায়ী কোথা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র পেলেন, সেটা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, জেরায় বারবার তিনি ‘প্রকৃত ঘটনা’ বলে যা দাবি করছেন, তা-ও কতটা সত্যি, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশকর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Violence Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE