এই বাড়ির ছাদ থেকেই পড়ে গিযে মারা যান রিকি শর্মা। সোমবার, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে। নিজস্ব চিত্র
চারতলার ছাদ ঘিরে প্রায় সাড়ে চার ফুট উঁচু পাঁচিল। সেই ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে রিকি শর্মা নামে বছর তিরিশের এক যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। রিকির পরিবারের দাবি, দুর্ঘটনাবশত পড়ে গিয়েছেন রিকি। পুলিশ অবশ্য সব দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করেছে।
মহাত্মা গাঁধী রোড ও চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের সংযোগস্থলে চারতলা পুরনো বাড়ির ছাদের ঘরে থাকতেন রিকি। একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করতেন তিনি। সঙ্গে থাকতেন মা-বাবা। বছর খানেক আগে মারা গিয়েছেন স্ত্রী।
পুলিশ ও রিকির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল সওয়া ন’টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। রিকির এক কাকা পবন শর্মা বলেন, ‘‘রিকির মা ছাদে বাসন মাজছিলেন। রিকি ছাদেই পায়চারি করছিল। হঠাৎ রাস্তায় ভারী কিছু পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনতে পাই। পাঁচিল দিয়ে ঝুঁকে দেখি, রিকির রক্তাক্ত দেহ রাস্তায় পড়ে রয়েছে।’’ যদিও অত উঁচু পাঁচিল থেকে বিপদজ্জনক ভাবে না-ঝুঁকলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। রিকির এক জামাইবাবু রঞ্জিত শর্মা বলেন, ‘‘রিকি মাঝেমধ্যে ছাদ থেকে ঝুঁকে রাস্তার গাড়ি দেখত। এ দিন ওই ভাবেই গাড়ি দেখতে গিয়ে পড়ে গিয়ে থাকতে পারে।’’
এমজি রোড ও চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের মুখে বাস ধরার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন দমদমের বাসিন্দা অজয় দাস। অজয়বাবু বলেন, ‘‘ব্যস্ত রাস্তার মাঝে হঠাৎ ওই যুবকের দেহ এসে পড়ে। সব গাড়ি থেমে যাওয়ায় চাপা পড়েননি তিনি। মোড়ের মাথায় কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু তত ক্ষণে মারা গিয়েছেন তিনি।’’
সব দিক খতিয়ে দেখে রিকির আত্মঘাতী হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। পুলিশ জানায়, স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকেই তিনি অবসাদে ভুগছিলেন। রিকির এক আত্মীয় জানান, স্ত্রীর মৃত্যুর পরে ভেঙে পড়লেও, গত কয়েক মাস ধরে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছিলেন রিকি। এ দিন যখন ঘটনাটি ঘটে তখন ঘরে ছিলেন রিকির ভাগ্নে শিবম শর্মা। তিনি বলেন, ‘‘শনিবারই মামিমার (রিকির স্ত্রীর) বাৎসরিক কাজ হল। মামা ঠিকই ছিলেন। গত কাল রাতে আমার একসঙ্গে সিনেমাও দেখতে গিয়েছিলাম। আজ সকালেও ওঁর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা টের পাইনি। কী ভাবে কী হল, বুঝতে পারছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy