টেক্সটাইলস অব রাজস্থান: অ্যাট দ্য জয়পুর কোর্ট
বন্দনা ভান্ডারি
১৪৯৫.০০
নিয়োগী বুকস
নাকে নথ, পরনে ঘাগরার লহর তুলে নৃত্যের ছন্দে গ্রামবালারা, পেখম তুলেছে ময়ূর। উট বসা পথে আরাবল্লী, তার পর জঙ্গলদৃশ্য। হাতির পিঠে পার্ষদ পরিবৃত রাজপুরুষ, সে দিকে তাকিয়ে ডোরাকাটা। রাজপুতানার রূপকথা মেলে ধরে রাত্রিনীল বাঁধনি ওড়না, যার শরীরে হলদে লাল সাদা ছবির ছাপ। সে দেশের জমি যত ঊষর, তত রঙিন তার মানবের বেশ। জয়পুর সিটি প্যালেসে মহারাজা দ্বিতীয় সোয়াই মান সিংহ জাদুঘরের ‘কাপড় দ্বারা’ ঘরে, ৩০০ বছর ধরে মরুজীবনে ব্যবহৃত পোশাক, উড়ানি, পাগড়ি, শীতবস্ত্র, তাঁবু, আসবাবের ঢাকনির প্রায় ২,৫০০ নিদর্শন মজুত। জাদুঘরের সংগ্রহের খবর পৌঁছে দিতে বই প্রকাশ করছেন কর্তৃপক্ষ। বস্ত্রসঙ্কলন বিষয়ক দ্বিতীয় বইটি লিখেছেন বন্দনা ভান্ডারি।
অভিজ্ঞ লেখক তিনি। ফ্যাশন শিক্ষাকেন্দ্রে পড়ান ত্রিশ বছরেরও বেশি। হয়তো সে কারণে তাঁর উপস্থাপনা প্রকরণ মেনে এগোয়। ব্লক প্রিন্টিং, বাঁধনি, লহেরিয়া, ডোরি কা কাম, কুইল্টিং, খাদি, গোটা, জ়ারদৌসি— প্রতিটি অধ্যায়ে বিশেষ ধারাটির রাজস্থানে আগমন বা উৎপত্তির ইতিহাস, রং রসায়ন ও বুনন কৌশলের ব্যাখ্যা, শেষে নজর কাপড়ের নকশা, মোটিফে। জয়পুরের পুরনো তালুকে রংরেজ়দের রাস্তা, মহল্লা নীল গরন, বয়নশিল্পীর কড়ে আঙুলের লম্বা নখের রহস্য, নামগানের ছন্দে নামাবলি ছাপানোর প্রথা, ফুল রাঙ্গাই বা পোকার রস চোঁয়ানো রং পাকানোর ৫,০০০ বছরের প্রাকৃতিক ডাই-কৌশল— প্রভূত তথ্যসমাবেশ। সময়, জীবনচক্র, ঐশ্বর্য-প্রতিপত্তি, সম্মান, উৎসব, ধর্মের প্রতীক হয়ে ওঠে পোশাক— ছুঁয়ে যান বন্দনা।