Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
book review

শঙ্কু সম্বন্ধে যা কিছু জানতে চান

প্রোফেসর শঙ্কু কে? কী তাঁর পিতৃপরিচয়? তাঁর জন্মদিন কবে? তিনি কোন কোন দেশে গিয়েছেন? তাঁর প্রিয় বন্ধু কারা?

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২১ ০৫:০১
Share: Save:

শঙ্কু অভিযান
প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত
৪০০.০০

৯ঋকাল বুক্‌

প্রোফেসর শঙ্কু কে? কী তাঁর পিতৃপরিচয়? তাঁর জন্মদিন কবে? তিনি কোন কোন দেশে গিয়েছেন? তাঁর প্রিয় বন্ধু কারা? কত সংখ্যক অত্যাশ্চর্য বস্তু আবিষ্কার করেছেন তিনি? প্রোফেসর শঙ্কুর ডায়েরিগুলো যাঁরা গুলে খেয়েছেন, তাঁদের হয়তো এই সব উত্তরই ঠোঁটস্থ। কিন্তু এই প্রশ্নাবলি সামলানোর মতো ক্যাটালগজাতীয় কিছু সাধারণ পাঠকের হাতের নাগালে থাকলে চরিত্রটাকে চিনতে-জানতে আরও সুবিধা হয়। সেই অভাব পূরণ করল প্রসেনজিৎ দাশগুপ্তের শঙ্কু অভিযান।

বাংলা ভাষায় শঙ্কু নিয়ে বই আগেও লেখা হয়েছে। তবে, এমন পূর্ণাঙ্গ কোনও গবেষণাগ্রন্থ ছিল না, বলাই যায়। প্রোফেসর শঙ্কু ও তাঁর বিচিত্রকর্মা জীবন সম্পর্কে কোনও প্রশ্ন মনে জাগলে, কিংবা কোনও তথ্য নিয়ে ধন্দ জাগলে এই বইয়ের পাতা উল্টালেই হল, হাতের কাছে মিলে যাবে উত্তর। এই বইয়ের আর এক মস্ত গুণ, শঙ্কুর ডায়েরিগুলি থেকে তথ্য সংগ্রহ করে কিছু ‘যুক্তিসঙ্গত অনুমান’-এর চেষ্টাও রয়েছে। শঙ্কু বিষয়ক অনেকগুলো কাহিনির মধ্যে যে যোগসূত্র ছিল, তা খুঁজে দেখার চেষ্টা করেছেন লেখক। তিনি জানিয়েছেন, বিলিতি অধ্যাপক জর্জ এডওয়ার্ড চ্যালেঞ্জার বা দেশি বিজ্ঞানী হেঁসোরাম হুঁশিয়ার বা নিধিরাম পাটকেলের আদলে মোটেই তৈরি নন শঙ্কু। তিনি আদ্যন্ত স্বকীয় এবং রক্ত-মাংসে গড়া এক মানুষ। উল্লেখ্য, এর আগে ফেলুদা নিয়েও এমন চমৎকার, মৌলিক, অলঙ্করণসমৃদ্ধ গবেষণাগ্রন্থ লিখেছিলেন প্রসেনজিৎ, এ বার সত্যজিতের আর এক স্মরণীয় চরিত্র শঙ্কু বিষয়ক এই বইটিও পাঠককে যথেষ্ট আনন্দ দেবে।

দ্য ফাইনাল অ্যাডভেঞ্চার্স অব প্রফেসর শঙ্কু
সত্যজিৎ রায়
২৯৯.০০

পাফিন ক্লাসিকস

অনুবাদে কি মূলের স্বাদ পাওয়া যায়? সমস্ত অনুবাদকেই, বিশেষত মহৎ সাহিত্যের অনুবাদকে তাড়া করে ফেরে এ প্রশ্ন। পাফিন বুকস-এর শঙ্কু সিরিজ়ের এই শেষ বইয়ে মূলের স্বাদ মোটের উপর অক্ষুণ্ণ। পড়তে পড়তে মনে পড়ে যায় বহু দিন আগে পড়া মূল বাংলা গল্পের কথা, সব বাক্য ও সংলাপ-সহ। ছোটবেলা থেকে যাঁরা শঙ্কু-কাহিনি পড়েছেন, এই বই তাঁদের টেনে নিয়ে যাবে স্মৃতির রঙিন পাতায়। ভূমিকায় পর্দার শঙ্কু, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায় লেখেন, “শঙ্কু অনুবাদের ক্ষেত্রে চরিত্রটা ফুটিয়ে তোলাই কঠিন। এবং সেখানেই সাঙ্ঘাতিক কাজ করেছেন ইন্দ্রাণী মজুমদার।”

সত্যজিৎ রায়ের ফিকশনের মধ্যে শঙ্কু-কাহিনিই সবার আগে ইংরেজিতে অনূদিত হয়। ১৯৮৩ সালে ক্যাথলিন এম ও’কোনেল প্রকাশ করেন ব্রাভো! প্রফেসর শঙ্কু। এর পর দ্য স্টোরিজ় (১৯৮৭) বইয়ে সে কাজে হাত দেন স্বয়ং স্রষ্টাই। সেই সংগ্রহে ঠাঁই পায় ‘কম্পু’-র অনুবাদ ‘টেলুস’। এ বইয়ের প্রথম কাহিনি সেটি। সঙ্গে ইন্দ্রাণী মজুমদারের আটটি অনুবাদ, যেখানে আছে ‘প্রফেসর রন্ডির টাইম মেশিন’, ‘নেফ্রুদেৎ-এর সমাধি’, ‘স্বর্ণপর্ণী’, ‘ডন ক্রিস্টোবাল্ডির ভবিষ্যদ্বাণী’-র মতো টানটান অ্যাডভেঞ্চার-কাহিনিগুলি।

গিরিডিবাসী হলেও শঙ্কু বিশ্বনাগরিক। তাঁর ডায়েরি বৃহত্তর পাঠক-অনুরাগীর কাছে পৌঁছে দেওয়া জরুরি একটি কাজ। ২০০৪ সাল থেকে ধারাবাহিক ভাবে তা করে এসেছে পাফিন। সাম্প্রতিক বইটির বাড়তি পাওনা ‘পরিশিষ্ট’ অংশে সঙ্কলিত বিজ্ঞানী শঙ্কুর যাবতীয় তথ্য, ঐতিহাসিক ঘটনার খুঁটিনাটি এবং অবশ্যই বিজ্ঞানী শঙ্কুর আশ্চর্য আবিষ্কারের তালিকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

book review Satyajit Ray
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE