Advertisement
E-Paper

পল্লিবাংলাই সৃজনশীল গদ্যে আজ নির্বাসিত

অমলেন্দু চক্রবর্তীর মতো বিশিষ্ট সাহিত্যিককে নিয়ে ক্রোড়পত্র নতুন মাত্রা যোগ করেছে কথা সোপান-এ (সম্পা: অমর মিত্র)। সম্পাদক-সহ তাঁকে নিয়ে লিখেছেন স্বপ্নময় চক্রবর্তী ও রুশতী সেন। সাক্ষাৎকারের সঙ্গে ছাপা হয়েছে তাঁর প্রবন্ধও।

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৬ ০০:০০

অমলেন্দু চক্রবর্তীর মতো বিশিষ্ট সাহিত্যিককে নিয়ে ক্রোড়পত্র নতুন মাত্রা যোগ করেছে কথা সোপান-এ (সম্পা: অমর মিত্র)। সম্পাদক-সহ তাঁকে নিয়ে লিখেছেন স্বপ্নময় চক্রবর্তী ও রুশতী সেন। সাক্ষাৎকারের সঙ্গে ছাপা হয়েছে তাঁর প্রবন্ধও। যেমন ‘উপন্যাসের বিষয়ভাবনা’-য় লিখছেন তিনি: ‘জনজীবন থেকে সামগ্রিক বিচ্ছিন্নতাই বাংলা উপন্যাসের সাম্প্রতিক সংকট।... সে-অর্থে আর কোনো পল্লিবাংলা নেই আমাদের। এতাবৎকালে যে-গ্রামীণ জীবনই বাংলা গল্প উপন্যাসের প্রধানতম পটভূমি ছিল, সেই পল্লিবাংলাই আমাদের সৃজনশীল গদ্যে আস্তে আস্তে নির্বাসিত আজ।’ রয়েছে হাসান আজিজুল হকের গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকার: ‘একজন কামারের কাস্তে তৈরি করা অথবা একটা কোদাল তৈরি করা দেখো তখন ভাববে এটাই শিল্প আর এটাই জীবন। কোথা থেকে একটা টুকরো ছিল সেই টুকরোটাকে পিটিয়ে পিটিয়ে ঠাণ্ডা করে শেষ পর্যন্ত একটা অসাধারণ লাঙলের ফাল হল। ভাবা যায়? সাহিত্য তো এরকমই কাজ করে।’ এ ছাড়াও ভাবনা উসকে-দেওয়া প্রবন্ধাদি, গ্রন্থ সমালোচনা, গল্প-কবিতা।

আমাদের জীবনযাপনের আচার-অনুষ্ঠান, নৈতিকতা, চরিত্রের বিচিত্র উপকরণ ইত্যাদি নানাবিধ খুঁজে পাওয়া যাবে মঙ্গলকাব্যে। আবার মধ্যযুগের ব্যবসা-বাণিজ্য, শাসন-শোষণ তথা সমাজ-ইতিহাসের অনুপুঙ্খও আছে তাতে। সঙ্গে আখ্যান বর্ণনার বিশিষ্ট শৈলী, যা আজ আমাদের উপন্যাসের আদি ও অ-ইউরোপীয় শিল্পরীতি হিসেবেও রীতিমতো আলোচিত। সেই ‘মঙ্গলকাব্য ও মঙ্গলকাব্য চর্চা’-ই কোরক-এর (সম্পা: তাপস ভৌমিক) বিষয়। প্রথম পর্বে বিভিন্ন মঙ্গলকাব্যের কবি, কাব্যবৈশিষ্ট্য এবং উপাদান বিষয়ে আলোকপাত। দ্বিতীয় পর্বে আধুনিক সাহিত্যসংস্কৃতিতে মঙ্গলকাব্যের প্রভাব বিষয়ে তথ্যনিষ্ঠ প্রবন্ধ-নিবন্ধ। বিশিষ্ট প্রাবন্ধিকদের পাশাপাশি ডেভিড কার্লের ইংরেজি প্রবন্ধটিও প্রয়োজনীয়।

১৯৬৬-র খাদ্য আন্দোলনে কোনও রাজনৈতিক উদ্যোগ ছাড়াই সাধারণের সঙ্গে জড়ো হয়েছিলেন বহু বিশিষ্ট মানুষ। ‘শুধু চলচ্চিত্র শিল্পী নয়, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, অধ্যাপক, গায়ক, চিত্রশিল্পী প্রমুখ মানুষের এক ঐতিহাসিক মৌন মিছিল বের হয়। মিছিলটি মৌন হলেও তাৎপর্যে বাঙ্ময়। কে নেই সেদিন মিছিলে?’ মুখবন্ধ-এ লিখেছেন গৌতম নিয়োগী। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সুবোধ রায় সংকলিত ও সম্পাদিত মৌন-মিছিল শিরোনামে যে পুস্তিকাটি বেরিয়েছিল স্বাধীনতা দিবসে, সেটি পঞ্চাশ বছর পর পুনর্মুদ্রিত হল পরিচয়-এ (সম্পা: বিশ্ববন্ধু ভট্টাচার্য)। জনপ্রিয় এই সংকলনটি ৩৫ পয়সা দামে বিক্রি করে লাভ হয় যে ২৫ টাকা তা ‘শহীদ ত্রাণ তহবিল কমিটি’র সভাপতি বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া নরেন্দ্রনাথ মিত্র সমর সেনকে নিয়েও ক্রোড়পত্র, তাতে লিখেছেন অভিজিৎ মিত্র অভ্র ঘোষ ধূর্জ্জটিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় মঙ্গলাচরণ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। কালীপ্রসন্ন সিংহ, রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবেশ-প্রযুক্তির শিল্পকর্ম, বা পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি মুসলমানের সংকট নিয়ে জরুরি রচনা।

‘আমি সামাজিক ন্যায়ে (social justice) বিশ্বাস করি এবং মনে করি যে বা যিনি এই সামাজিক ন্যায়ে বিশ্বাসী তিনিই একজন বামপন্থী, কমিউনিস্ট বা স্তালিনবাদীদের সঙ্গে তাঁর যতই বিরোধ থাক। সেই অর্থে অম্লান দত্ত ছিলেন একজন বামপন্থী। এই বামপন্থার সঙ্গে গণতন্ত্রের বিরোধ নেই।... উনি একজন সামাজিক গণতন্ত্রপন্থী (Social Democrat) যিনি সমবায় ও গণতন্ত্রের ভিত্তিতে সামাজিক ন্যায়ের পথ অনুসরণ করার কথা ভেবেছেন।’ প্রণব বর্ধনের ‘গণতন্ত্র, মর্যাদা ও উন্নয়ন’ গোঁড়া পাঠককে মুক্ত চিন্তার দিশা দেখাবে। এমন প্রবন্ধাদিতেই ঋদ্ধ অনুষ্টুপ (সম্পা: অনিল আচার্য)। সুদীপ্ত কবিরাজের ‘মার্কস ও গণতন্ত্র’, বা অরিন্দম চক্রবর্তীর ‘জরামর্শ’। রাজস্থানের এক যাযাবর গোষ্ঠীর কঠিন দুরূহ চলমান জীবনের দিনলিপি অনিতা অগ্নিহোত্রীর কলমে। শাশ্বতী ঘোষের ‘মেয়ে কিনা দ্যাখো’, মোহিত রায়ের ‘পরিবেশ রাফখাতা’, শ্রীপর্ণা দত্তের ‘বাঙালির হিন্দুত্ব’, অবন্তিকা পালের ‘প্রসঙ্গ ইউথেনেশিয়া: অরুণা শানবাগ ও ভারত’ নতুন ভাবনা উসকে দেবে। রবীন্দ্রনাথ এবং স্পেনের সাহিত্যিক ও রবীন্দ্রনাথের কবিতার স্পেনীয় অনুবাদক খুয়ান রামোন খিমেনেস’কে নিয়ে মালবিকা ভট্টাচার্য শুক্তি রায় সম্পাদিত ক্রোড়পত্র।

মদনমোহন তর্কালঙ্কারের দ্বিশতবর্ষ উপলক্ষে শ্যামল মৈত্র, প্যারীচাঁদ মিত্রকে নিয়ে অশোককুমার রায়ের, আর মেঘনাদবধকাব্য ও তিলোত্তমাসম্ভবকাব্য সম্পর্কে সায়ন্তন মজুমদারের রচনা-সহ সুলিখিত প্রবন্ধাদিতে পূর্ণ অপরাজিত (সম্পা: সমর ঘোষ অরুণকুমার মুখোপাধ্যায়)।

অভিনেতা থেকে নির্দেশকদের অনেকেই কী ভাবে ভারতীয় সিনেমা-থিয়েটারে এক সঙ্গে কাজ করছেন, তা কতটা সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ তৈরি করছে, আবার সমস্যাও, সে সব নিয়েই প্রেমেন্দ্র মজুমদারের প্রবন্ধ ‘ভারতীয় সিনেমায় থিয়েটারি রাজ’। ব্রাত্যজন নাট্যপত্র-এর (প্রধান সম্পা: ব্রাত্য বসু) সম্পাদকীয়-তে জরুরি কথা তুলেছেন ব্রাত্য: ‘যতই কালজয়ী নাটক হোক,...আধুনিকতম ফর্ম হোক, অভিনয়টা দর্শককে না ছুঁলে সে নাট্যপ্রযোজনা অচল... মঞ্চের ওপরে নাট্যের মালিক অভিনেতাই।’ ব্রাত্য নির্দেশিত সাম্প্রতিক সাড়াতোলা প্রযোজনাগুলি নিয়ে ক্রোড়পত্র। গোলটেবিল-এ ব্রাত্য আর তরুণ প্রজন্মের নাট্যকর্মীরা মুখোমুখি।

শূদ্রক-এ (সম্পা: দেবাশিস মজুমদার) অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অপ্রকাশিত নাটক জুগিয়ে দিয়ে শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন ‘অজিতেশের ভাবনাজগতের কোনো কোনো অভিমুখ এখানে পাওয়া সম্ভব।’ রূপান্তরিত ও স্বকীয় নাটকে ঋদ্ধ এই নাট্যপত্রটির স্বগত-তে দেবাশিস জানিয়েছেন ‘আমরা চাই মূল ভাষা থেকে সরাসরি বাংলা অনুবাদ। তা না হলে কোথাও সম্পূর্ণতার ক্ষেত্রে অনেকাংশেই একটা দূরত্ব থেকে যায়।’

বহুরূপী-র দেবেশ রায়চৌধুরীর দীর্ঘ সাক্ষাৎকার অংশুমান ভৌমিক-কৃত, পূর্ব পশ্চিম-এ (সম্পা: সৌমিত্র মিত্র)। প্রয়াত পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে সম্পাদক-সহ অরুণ মুখোপাধ্যায় ও দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণলেখ। বিষ্ণু বসুকে নিয়ে ক্রোড়পত্র। বিভাস চক্রবর্তীকে নিয়ে সৌমিত্র বসুর চমৎকার রচনা। স্বদেশি আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গিরিশচন্দ্রকে নিয়ে প্রভাতকুমার দাসের আলোচনা।

Democracy Social justice
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy