প্রতীকী ছবি
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাটির জিনিসের বিকল্প এসে যাওয়ায় ক্রমশ কমছিল কুমোরপাড়ায় মানুষের আনাগোনা। লকডাউনের পর থেকে ব্যবসার করুণ অবস্থা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিশ্বকর্মা পুজো। অথচ এখনও বিক্রি তলানিতে। হাসনাবাদ থানার বিশপুর গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ হরিপদ পাল অল্প বয়স থেকেই কুমোরের কাজ করে সংসার চালান। তাঁর ছেলে দিনবন্ধুও বাবার থেকে কাজ শিখে দশ বছর ধরে ঠাকুর গড়ছেন। দীনবন্ধুর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, মাটির প্রদীপ, দেবীঘট, হাঁড়ি, সরা, ধুনুচি-সহ বিভিন্ন সামগ্রী ভর্তি। দিনবন্ধু জানান, প্রতি বছর মার্চ মাস থেকে বিশ্বকর্মা পুজো পর্যন্ত যা মাটির জিনিস বিক্রি হত, এ বার তার তিন ভাগের এক ভাগও হয়নি। বিশেষ করে মার্চ মাসের পর থেকে বিভিন্ন পুজো, বিয়ে লেগেই থাকত। ফলে এক একটা অনুষ্ঠান বা পুজোতে কয়েকশো টাকার জিনিস বিক্রি হত। এ বার অনুষ্ঠান বা পুজো তেমন হয়নি। অথবা যা হয়েছে, যা হোক করে সেরে ফেলা হয়েছে। দিনবন্ধু বলেন, “এখন জ্বালানি, রঙের দাম বেড়েছে। মাটিও এখন কয়েক হাজার টাকা খরচ করে কিনতে হয়। ভেবেছিলাম, এ বার বিশ্বকর্মা পুজোর আগে মালের দাম একটু বাড়াবো। তবে এখনও ক্রেতাই পেলাম না। এ দিকে, এত মাটির সামগ্রী জমে আছে যে দাম না বাড়িয়ে বিক্রি করতে পারলে বাঁচি।”
দিনবন্ধুরা জানান, তাঁরা হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ ও সন্দেশখালি থানা এলাকায় বিভিন্ন দোকানে মাটির জিনিস সরবরাহ করতেন। সেখানেও এ বার চাহিদা নেই। তাই মাল সরবরাহ বন্ধ। কলেজ পড়ুয়া ছেলের পড়ার খরচ ও সংসার খরচ চালাতে ধারদেনা করতে হচ্ছে দিনবন্ধুকে। হাসনাবাদের বায়লানি বাজারে সোমবার সকালে চণ্ডীচরণ পাল, ধ্রুব পালরা পসরা সাজিয়ে নিজেদের তৈরি বিশ্বকর্মা পুজোর সামগ্রী বিক্রি করতে বসেন। তাঁরা বলেন, “সকাল থেকে বসে ২০০ টাকারও বিক্রি হল না। অন্যবার বিশ্বকর্মা পুজোর আগের হাটবারে বেশ কয়েক হাজার টাকার বিক্রি হত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy