উদ্যোগ: পাশাপাশি দুই সম্প্রদায়ের মানুষ। ছবি: সুজিত দুয়ারি
রক্তদানে মহিলাদের উপস্থিতি পুরুষের তুলনায় এখনও কম। তবু দুর্গাপুজো উপলক্ষে রক্ত দিলেন মহিলারা। সামিল হলেন সংখ্যালঘু ঘরের মেয়ে-বৌরাও।
ছোট একফালি মাঠের মধ্যে দুর্গা পুজোর মণ্ডপ করা হয়েছে। পাশে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘরে পরপর শয্যা পাতা। পাশাপাশি শয্যায় রক্তদান করছেন মহম্মদ মাসুদ হাসান, আয়েশা বিবি, শঙ্করী পাল, শিবনাথ পাল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সম্প্রীতির রক্তদান শিবিরে এমনই ছবি দেখা গেল। শিবিরের আয়োজক ছিল, গুমা বালুইগাছি পালপাড়া অধিবাসীবৃন্দ। তারাই দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছে। গত আট বছর ধরে পালপাড়া অধিবাসীবৃন্দ দুর্গাপুজোর পাশাপাশি পঞ্চমীর দিন রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে আসছে। সম্প্রীতির রক্তদান শিবিরের মাধ্যমে সূচনা হয় দুর্গাপুজোর। পুজোর উদ্বোধন করেন সিদ্দিক হোসেন নামে এক ব্যক্তি। উদ্যোক্তারা জানান, এ দিন দুপুর পর্যন্ত দুই সম্প্রদায়ের ৭১ জন রক্তদান করেছেন। আরও অনেকে অপেক্ষা করছেন রক্তদান করার জন্য। গত আট বছর ধরে রক্তদান করে আসছেন আয়েশা বিবি। তিনি বলেন, ‘‘আমার দান করা একফোঁটা রক্ত মানুষের জীবন দান করতে পারে। রক্তের কোনও বিভেদ হয় না। এই বার্তা দিতেই আমি রক্ত দিতে এসেছি।’’ বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এলাকায় দুই সম্প্রদায় মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির ভিত দৃঢ় করতে এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হল। রক্তদাতা মহম্মদ মাসুদ হাসান, শঙ্করী পাল বলেন, ‘‘আমরা দুই সম্প্রদায়ের মানুষ এখানে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করি। একে অন্যের বিপদে-আপদে ছুটে যাই।’’ দুর্গাপুজো, ইদ-সহ সমস্ত সামাজিক কর্মকাণ্ডে এখানে সকলে একে অন্যকে সাহায্য করেন বলে জানালেন। পুজো কমিটির সম্পাদক বিপ্লব পাল বলেন, ‘‘আমরা এখানে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ ভাই-ভাই হিসাবেই বসবাস করে আসছি। সম্প্রীতির ভিত আরও মজবুত করতে আমাদের এক সঙ্গে রক্তদান কর্মসূচি পালন করা হল। পুজোয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ আমাদের সহযোগিতা করেন।’’
রক্তদাতারা জানালেন, বাংলার ঐতিহ্য দুই সম্প্রদায়ের মানুষ এক সঙ্গে বসবাস করা। রক্তের কোনও জাতি ধর্ম যেমন হয় না তেমনি, আমাদের মধ্যেও কোনও বিভেদ নেই।’’ বিপ্লব বলেন, ‘‘দুর্গাপুজো সম্প্রীতির উৎসব, সেই উৎসবে মিলেমিশে রক্তদান করলে সম্প্রীতির ভিত মজবুত হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy