নজরে-নিরাপত্তা: পরিদর্শনে জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র
জুনের শেষ দিকে বকখালি বেড়াতে এসে দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন এক সেনা ডাক্তার, এক পুলিশ অফিসার ও এক শিশু। বকখালি ট্যুরিস্ট স্পটের পাশেই হেনরি আইল্যান্ডে ওই দুর্ঘটনার পরে নিরাপত্তা ঢেলে সাজতে চাইছে জেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বকখালির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং উপকূলরক্ষী বাহিনীর জওয়ানেরাও। পর্যটকদের নিরাপত্তা বরাবরই অবহেলিত হওয়ার অভিযোগ উঠছে বকখালিতে। জেলাশাসক এ দিন বলেন, ‘‘বকখালিতে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। ওই দুর্ঘটনার পরে নবান্ন থেকে এ রকমই নির্দেশ এসেছে। তাই এই পরিদর্শন।’’
বকখালিতে নজরদারির দায়িত্ব ছিল সিভিক ভলান্টিয়ারদের। জোয়ারে জল বাড়তে শুরু করলে বা সন্ধ্যা হয়ে গেলে পর্যটকদের সমুদ্র থেকে উঠে পড়ার জন্য বাঁশি বাজানো হয়। কিন্তু সেগুলি যথেষ্ট হচ্ছে না বলেই এ দিন পরিদর্শনের পরে মনে করছে জেলা প্রশাসন। আগামী দু’প্তাহের মধ্যে নিরাপত্তার পুরো বিষয়টিতে বড়সড় পরিবর্তন আনা হবে বলে সূত্রের খবর। পরিদর্শনের পরে ১৭ দফা নিরাপত্তা বিধি তৈরি করেছেন জেলাশাসক। পর্যটন উন্নয়ন পর্ষদের আর্থিক সাহায্যে এই নিরাপত্তা বাড়ানো হবে।
কী কী হবে?
প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রথমেই নজরদারি কয়েক গুণ বাড়ানো হচ্ছে। এ জন্য সিভিক ভলান্টিয়ার ছাড়াও বাড়তি সিভিল ডিফেন্সের স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়োগ করা হবে। উপকূলে দিনরাত নজরদারি চালাবেন এঁরা। হেঁটে এবং সাইকেলেও চলবে উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকায় নজরদারি। মাইকে প্রচার হবে। জলে ডুবে গিয়ে দমবন্ধ হলে কী ভাবে কাউকে বাঁচানো যায়, তা-ও শেখানো হবে কর্মীদের। সঙ্গে দেওয়া হবে প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম। একই সঙ্গে লাইফ জ্যাকেট থেকে শুরু করে জীবন বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় কিছু যন্ত্রপাতি মজুত রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে উপকূলে। সিভিল ডিফেন্সের স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগে অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে স্থানীয় মৎস্যজীবী এবং তাঁদের পরিবারগুলিকে।
বকখালি উপকূলে কোথায় কোথায় বিপজ্জনক এলাকা রয়েছে, তারও সমীক্ষা করে সেই সব জায়গায় তিনটি ভাষায় সঙ্কেত চিহ্ন ও সতর্ক বার্তা দেওয়া থাকবে। জোয়ার এবং ভাটার সময়ে নিয়মিত ভাবে সাইরেন বাজানো হবে। ভাটার সময়ে ঢেউ উপকূল থেকে সরে গেলে সেখানে চলে যান পর্যটকেরা। মাঝখানের এলাকা নিচু। জোয়ার এলে পরে ফেরার সময়ে জল বেড়ে গেলে দুর্ঘটনা ঘটে। তাই এ বার সেই সব বিপজ্জনক জায়গায় জাল দিয়ে ঘেরা থাকবে। হেনরি আইল্য্যান্ড এবং বকখালি সৈকতে একটি করে ওয়াচ টাওয়ার করারও প্রস্তাব রাখা হচ্ছে। পুলিশ সুপার ও এসডিপিও-র দফতরের কন্ট্রোলরুমের ফোন নম্বর দিয়েও প্রচার করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy