Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

কামারহাটিতে সংক্রমণ, মানছেই না পুরসভা

সোমবার পর্যন্ত কামারহাটি পুর এলাকায় ডেঙ্গিতে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। আর এক জনের রক্তে এনএস-১ পজিটিভ। পুরকর্তারা অবশ্য দাবি করছেন, তাঁদের কাছে এ রকম কোনও তথ্যই নেই।

অভিষেক তিওয়ারির ডেথ সার্টিফিকেট। যেখানে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি হেমারেজিক শক। নিজস্ব চিত্র

অভিষেক তিওয়ারির ডেথ সার্টিফিকেট। যেখানে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি হেমারেজিক শক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৪০
Share: Save:

গোটা উত্তর ২৪ পরগনা জুড়েই থাবা বসিয়েছে ডেঙ্গি। তা থেকে বাদ নেই কামারহাটিও।

সোমবার পর্যন্ত কামারহাটি পুর এলাকায় ডেঙ্গিতে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। আর এক জনের রক্তে এনএস-১ পজিটিভ। পুরকর্তারা অবশ্য দাবি করছেন, তাঁদের কাছে এ রকম কোনও তথ্যই নেই। পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, ‘‘যাঁর ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে বলা হচ্ছে, তাঁর ডেথ সার্টিফিকেট এখনও পুরসভার হাতে আসেনি। তাই কারও কথা শুনে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। আর তাই পুর নথিতে এখনও ডেঙ্গিতে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্য।’’

স্থানীয় সূত্রের খবর, ২৭ অক্টোবর কামারহাটি পুরসভার আড়িয়াদহ এলাকার শিবপদ পাল পল্লির বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাস (৪১) মারা যান। বাইপাসের একটি হাসপাতাল ডেথ সার্টিফিকেটে লেখে, রক্ত পরীক্ষায় বিশ্বজিৎবাবুর এনএস-১ পজিটিভ এসেছিল। মাল্টি অর্গ্যান ফেলিওর এবং রেসপিরেটরি শকের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এর পরে রবিবার দুপুরে বাইপাসের আর একটি হাসপাতালে মারা যান আড়িয়াদহের উত্তরণ এলাকার কলেজ পড়ুয়া অভিষেক তিওয়ারি। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা রয়েছে, ডেঙ্গি শকে আক্রান্ত হয়ে সেপসিস ও মাল্টি অর্গ্যান ফেলিওর মৃত্যুর কারণ।

২২ বছরের যুবক অভিষেকের দেহ রবিবার বাড়িতে আসার পরে সেখানে যান কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপালবাবু। তখনই ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। স্থানীয়েরা অভিযোগ করেন, এলাকার বিভিন্ন জায়গায় জঞ্জাল জমে থাকলেও তা ঠিক মতো সাফ হচ্ছে না। কিছু জায়গায় জমে রয়েছে জল। নিকাশি নালার অবস্থাও তথৈবচ। বাসিন্দাদের বিক্ষোভ চলাকালীনই সেখানে হাজির হন কামারহাটির প্রাক্তন বিধায়ক মদন মিত্র। ‘‘ডেঙ্গি মোকাবিলায় পুরসভা সব রকমের ব্যবস্থা নেবে। এ নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও করা হচ্ছে—’’ বলে বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেন মদন।

সোমবার গোপালবাবু বলেন, ‘‘এখন ডেঙ্গির প্রকোপ চলছে। কোনও এলাকায় কারও জ্বরে বা অন্য কারণে মৃত্যু হলেও মানুষ ডেঙ্গি-আতঙ্কে ভুগছেন। তাই বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।’’ তবে পুর চেয়ারম্যানের দাবি, এলাকা সাফাইয়ের বিষয়ে কাউন্সিলরদের আরও তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘চার মাস ধরে ডেঙ্গি প্রতিরোধে কাজ চলছে। মশা মারার তেল, ধোঁয়া সবই দেওয়া হচ্ছে।’’

কামারহাটির সিপিএম বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য অভিযোগ, গোটা পুর এলাকা জুড়ে অসংখ্য মানুষ জ্বরে আক্রান্ত। কয়েক জন এখনও আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। কিন্তু পুরকর্তা থেকে কাউন্সিলর, কারও কোনও হেলদোল নেই। মানসবাবু বলেন, ‘‘দু’বার পুর চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু ডেঙ্গি মোকাবিলা নিয়েও রাজনীতি চলছে। এখন সকলের একসঙ্গে রাস্তায় নামা উচিত।’’

যদিও ডেঙ্গি মোকাবিলার কাজে কোনও রাজনীতি করা হচ্ছে না বলে দাবি করে পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) বিমল সাহা বলেন, ‘‘মানসবাবু এ সব বলে নিজেই রাজনীতি করছেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিটি বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছেন। সরকারি নির্দেশিকা মেনে সব কাজ চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE