Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

টাকা নিতে এসে ধৃত নকল অফিসার

পুলিশ জানিয়েছে, ওই জালিয়াত দলের বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। একটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ওই চক্রের সদস্যেরা বেশ কয়েকটি জায়গায় এ ভাবেই টাকা তুলেছে। অশোকবাবুর বাড়ি নোয়াপাড়া থানার গারুলিয়া নিরঞ্জন নগরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৮ ০১:২৬
Share: Save:

নীলবাতি লাগানো গাড়ি। সুট-টাই পরা কেতাদুরস্ত চেহারা। তারা নাকি নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর অফিসার। তাদের চালচলন দেখে একটুও সন্দেহ হয়নি নোয়াপাড়ার ব্যবসায়ী অশোক বর্মার। তাঁর ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড— সবই হাতিয়ে নিয়েছিল তারা। ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়া মিললেও ওই নথিপত্র ফেরত পাননি অশোকবাবু। শর্ত ছিল, আরও সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দিলে তবেই তা ফেরত পাবেন তিনি। বৃহস্পতিবার সেই টাকা নিতে এসেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেল ওই নকল ‘অফিসারদের’ এক জন। আপাতত শ্রীঘরে ঠাঁই হয়েছে সেই রাজেন্দ্র ভুঁইয়ার।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই জালিয়াত দলের বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। একটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ওই চক্রের সদস্যেরা বেশ কয়েকটি জায়গায় এ ভাবেই টাকা তুলেছে। অশোকবাবুর বাড়ি নোয়াপাড়া থানার গারুলিয়া নিরঞ্জন নগরে। তিনি মাছ এবং ছাঁট লোহার ব্যবসা করেন। ঘটনার সূত্রপাত গত ৯ জুন। পুলিশ জানিয়েছে, সেই রাতে নীলবাতি লাগানো দু’টি গাড়ি এসে দাঁড়ায় অশোকবাবুর বাড়ির দরজায়। সুট-টাই পরা ‘অফিসারেরা’ সটান বাড়ির মধ্যে ঢুকে তাঁর কাছে ব্যবসার কাগজপত্র দেখতে চাইতেই প্রবল ঘাবড়ে যান তিনি। কী ব্যাপার? গাড়ি থেকে নামা লোকেরা জানায়, তারা নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর অফিসার। কিন্তু তাঁর কাছে কেন? কোনও কথা না শুনে সমস্ত ব্যক্তিগত কাগজপত্র-সহ অশোকবাবুকে গাড়িতে তুলে চম্পট দেয় তারা।

অশোকবাবু জানান, বীজপুরের একটি ধাবায় গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাঁকে মারধর করে ওই দুষ্কৃতীরা। তাঁকে হেরোইন পাচারের ‘কেস’ দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। তবে টাকা দিলে রেহাই মিলতে পারে বলে ইঙ্গিত দেয় দুষ্কৃতীরা। কত টাকা? অশোকবাবুকে তারা জানায়, ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। অশোকবাবুর স্ত্রীকে ফোন করে টাকা নিয়ে আসতে বলা হয়। তাঁর স্ত্রী জানান, বাড়িতে ৫০ হাজার টাকা রয়েছে। তখনকার মতো সেই টাকা নিয়েই তাদের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়। সেই টাকা এলে ছাড়া পান অশোকবাবু। কিন্তু কোনও কাগজপত্র ফেরত পাননি তিনি। তাঁকে বলা হয়, আরও সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দিলে তবেই তা ফেরত পাবেন তিনি। কোনও ‘চালাকি’ করলে তাঁকে মাদক পাচারের কেসে ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে।

ভয়ে পুলিশকে কিছু জানাননি অশোকবাবু। বৃহস্পতিবার ফের ফোন করে অশোকবাবুকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা নিয়ে জগদ্দল রেল স্টেশনের চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসতে বলা হয়। এ বার নোয়াপাড়া থানার দ্বারস্থ হন তিনি। এ দিন এক পুলিশকর্মীকে সাধারণ পোশাকে অশোকবাবুর সঙ্গে পাঠায় পুলিশ। আরও কয়েক জন পুলিশকর্মী অপেক্ষা করতে থাকেন আড়ালে। দুপুরে অশোকবাবুর কাছে টাকা নিতে আসে রাজেন্দ্র। হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় সে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arrest Fake officer Fake
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE