—ফাইল চিত্র।
ক্যানিংয়ের হাটপুকুরিয়া গ্রাম থেকে উদ্ধার করা সাত সদ্যোজাত শেয়াল ছানাকে অবশেষে গ্রামেই ফিরিয়ে দিলেন বনকর্মীরা।
বুধবার সন্ধ্যায় বনকর্মীরা হাটপুকুরিয়া পঞ্চায়েত অফিসের পাশের মাঠে যেখান থেকে শেয়াল ছানাগুলিকে উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছিলেন, সেখানেই ছেড়ে দিয়ে যান তাদের। গ্রামবাসীদের দাবি, বুধবার রাত থেকে প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছে শেয়ালের কান্না।
গত শনিবার সকালে পঞ্চায়েতের পাশে একটি মাঠ থেকে সাতটি সদ্যোজাত শেয়ালের ছানা উদ্ধার হয়। গ্রামবাসীরা মাঠের মাঝে তাদের দেখে প্রথমে কুকুর ছানা ভেবেছিলেন। পরে অবশ্য ভুল ভাঙে। শেয়াল ছানা উদ্ধারের জন্য খবর দেওয়া হয় বন দফতরকে। মাতলা রেঞ্জের বনকর্মীরা হাটপুকুরিয়া পৌঁছে শেয়াল ছানাদের উদ্ধার করে নিয়ে যান। তাদের পাঠানো হয় ঝড়খালি বিট অফিসে। সেখানেই পশু চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে গত চার দিন ছিল শেয়াল শাবকগুলি।
এ দিকে, সন্তানদের হারিয়ে গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে ভয়ানক চিৎকার শুরু করেছিল মা শেয়াল। কার্যত সন্ধ্যা নামলেই শেয়ালের ডাকে এলাকায় কান পাততে পারছিলেন না মানুষজন। শেয়ালের এমন কান্না আগে কখনও শোনেননি গ্রামের মানুষ।
বুধবার সংবাদপত্রে সন্তান হারানো মা শেয়ালের আর্তনাদের খবর প্রকাশিত হয়। এরপরেই বন দফতর সিদ্ধান্ত নেয়, শেয়াল ছানাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে মায়ের কাছে। কিন্তু কোথায় পাবেন মা শেয়ালকে? ঠিক হয়, যেখান থেকে শেয়াল ছানাদের তুলে নিয়ে আনা হয়েছিল, সেখানেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে। সেই মতোই ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে জানান দক্ষিণ ২৪ পরগনা বিভাগীয় বন দফতরের ডিএফও সন্তোষা জে আর।
বুধবার রাতে গ্রামে শেয়াল ছানাগুলিকে রেখে আসার পর থেকে গত কয়েক দিনের মতো শেয়ালের ডাক আর শোনা যায়নি বলে জানাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদেরই একজন সামসুদ্দিন লস্কর বলেন, “শনিবার রাত থেকেই শেয়ালের অদ্ভূত চিৎকারে কান পাতা দায় হয়ে উঠেছিল। কিন্তু বুধবার আর সে ভাবে কোনও আওয়াজ পাওয়া যায়নি।’’ মনসুর লস্কর, সিরাজ ঘরামিদের অনুমান, সন্তানদের হারিয়েই মা শেয়াল কান্নাকাটি করছিল। সম্ভবত বুধবার রাতে সন্তানদের ফিরে পেয়ে শান্ত হয়েছে মা। ক্যানিংয়ের পশুপ্রেমী রাকেশ শেখ বলেন, “বন দফতর দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করায় ভাল হয়েছে। মা ও শাবক— সকলেই স্বস্তি পেয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য বন দফতরকে ধন্যবাদ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy