Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

স্বাস্থ্য শিবির চালু, মশা নিয়ে ক্ষোভ

গোপালনগর থানা এলাকায় মোট পঞ্চায়েতের সংখ্যা ন’টি। এলাকায় দু’টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু সেখানে জ্বর-ডেঙ্গির যথাযথ পরিষেবা মেলে না বলে অভিযোগ উঠেছিল আগেই।

পরিষেবা: গোপালনগরে। নিজস্ব চিত্র

পরিষেবা: গোপালনগরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোপালনগর শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৪৩
Share: Save:

বেশ কিছুদিন ধরে এলাকায় জ্বর-ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যে জ্বরে পাঁচ জনের মৃত্যুও হয়েছে। অবশেষে শনিবার থেকে গোপালনগরের গুরুপদ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বাস্থ্য শিবির চালু করল প্রশাসন। তাতে গ্রামবাসীরা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন। কিন্তু মশা নিধনের কাজ নিয়ে তাঁদের ক্ষোভ যাচ্ছে না। মশা মারতে যথাযথ ব্যবস্থা না-নেওয়া হলে কী ভাবে রোগ প্রতিরোধ করা যাবে, উঠছে সে প্রশ্নও।

গোপালনগর থানা এলাকায় মোট পঞ্চায়েতের সংখ্যা ন’টি। এলাকায় দু’টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু সেখানে জ্বর-ডেঙ্গির যথাযথ পরিষেবা মেলে না বলে অভিযোগ উঠেছিল আগেই। পাল্লা পঞ্চায়েত এলাকায় ইতিমধ্যে চার জন জ্বরে মারা গিয়েছেন। জ্বরে আক্রান্ত বহু মানুষ এতদিন ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছিলেন, কেউ বা হাতুড়ে চিকিৎসকের উপরে নির্ভর করছিলেন। গুরুপদ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বাস্থ্য শিবির চালু হওয়ায় সমস্যা অনেকটাই কমবে বলে মনে করছেন গ্রামবাসীরা। শনিবার ওই শিবিরে ৬৮ জনের চিকিৎসা হয়। কয়েক জনের রক্তের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়।

বনগাঁর বিএমওএইচ মৃগাঙ্ক সাহা রায় জানিয়েছেন, শিবিরটি সাত দিনই সকাল এগারোটা থেকে দুপুর দু’টো পর্যন্ত খোলা থাকবে। অ্যালাইজা পরীক্ষায় যাঁদের রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ হবে, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।

একটি সমস্যার কিছুটা সুরাহা হলেও মশা মারার কাজে কবে গতি আসবে, এটাই এখন প্রশ্ন গ্রামবাসীদের। তাঁদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত বা ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে মশা মারার কাজ নিয়মিত হচ্ছে না। মাঝেমধ্যে শুধু চুন-ব্লিচিং ছড়ানো হচ্ছে। বনগাঁর মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মশা মারার ক্ষেত্রে কোথাও কোনও গাফিলতি রয়েছে কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে শ্রমিকদের পাঠানো হচ্ছে জঙ্গল সাফাই ও জমা জল পরিষ্কার করতে।’’

রবিবার দিঘারি পঞ্চায়েতের চিনিলি গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, সড়কের পাশে অসংখ্য ডোবা মশার আঁতুরঘরের চেহারা নিয়েছে। জমা জলে মশার লার্ভা ভেসে বেড়াচ্ছে। কিছু বাড়ির মধ্যে এবং সামনের ডোবারও একই অবস্থা। নানা জায়গা ঝোপ-জঙ্গলে ভরা। সুশান্ত সরকার নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘এখানে এখনও চুন-ব্লিচিং বা মশা মারার তেল ছড়ানো হয়নি।’’ চৌবেড়িয়া-১ পঞ্চায়েতের সেহালাপাড়া গ্রামের উত্তম দেবনাথও বলেন, ‘‘এখানে মশা মারা হয়নি। স্বাস্থ্যকর্মীদেরও সে ভাবে দেখা মিলছে না। ডেঙ্গি নিয়ে গ্রামবাসীদের সচেতন করবে কে?’’

অনেকেরই অভিযোগ, পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা রাস্তা বা কালভার্ট তৈরি করতে যতটা উৎসাহী, মশা মারতে ততটা নন। ভোটের আগে তাঁদের গ্রামে দেখা গেলেও এখন তাঁদের সময় নেই। যদিও গোপালনগর-১ পঞ্চায়েতের প্রধান স্মরজিৎ বিদ্য, বৈরামপুর পঞ্চায়েতের প্রধান হায়দার আলি মোল্লা বা গঙ্গানন্দপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জাফর আলি মণ্ডলের দাবি,, এলাকায় নিয়মিত চুন-ব্লিচিং, কেরোসিন, পোড়া মোবিল ছড়ানো হচ্ছে। জম জলও পরিষ্কার করা হচ্ছে। মশা মারার কামানের বরাত দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই তা পাওয়া যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Camp Dengue Gopalnagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE