Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূলের গোষ্ঠীসংঘর্ষ বাসন্তী-ভাঙড়ে

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি বাসন্তী পঞ্চায়েতের মোট তেরোটি খাল সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাসন্তী ও ভাঙড়  শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২০ ০২:২৯
Share: Save:

একশো দিনের কাজের প্রকল্পে খাল কাটাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে জখম হলেন তিনজন। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে বাসন্তী থানার মঠগরান গ্রামে। দু’পক্ষের ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি বাসন্তী পঞ্চায়েতের মোট তেরোটি খাল সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সেই মতো কাজ শুরুও করেছে তৃণমূলের হাতে থাকা পঞ্চায়েত। কিন্তু এলাকার যুব তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, একশো দিনের কাজে শ্রমিকদের দিয়ে খাল কাটার কথা থাকলেও তা না করে পঞ্চায়েত যন্ত্র ব্যবহার করে খাল কাটার কাজ করছে। ফলে এলাকার জব কার্ডধারী মানুষ কাজ পাচ্ছেন না। এ বিষয়ে এলাকার কিছু মানুষ বাসন্তীর বিডিওকে লিখিত ভাবে অভিযোগও জানিয়েছেন। তারই ভিত্তিতে আপাতত মঠগরান এলাকায় প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার খাল সংস্কারের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ব্লক প্রশাসনের তরফে।

এ নিয়েই এ দিন দু’পক্ষের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। প্রশাসনের দফতরে অভিযোগ জানিয়েছিলেন সেকেন্দার মোল্লা ও আকতার সর্দার। তাঁদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের বাসন্তী ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তৃণমূল কর্মী তথা পঞ্চায়েত সদস্য রমজান মোল্লার উপরেও চড়াও হয়ে তাঁকে মারধরের পাল্টা অভিযোগ উঠেছে যুব তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।

এলাকার যুব তৃণমূল নেতা ফারুক খান, কুতুব মণ্ডলদের দাবি, ‘‘দিনের পর দিন বাসন্তী পঞ্চায়েত নানা কিছু নিয়ে দুর্নীতি করছে। সরকারি খাল সংস্কারের নামেও দুর্নীতি চলছে। এলাকার জবকার্ডধারীরা কাজ পাচ্ছেন না। পরিবর্তে যন্ত্র দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। বিডিওকে অভিযোগ জানানোয় নিরীহ গ্রামবাসীদের উপরে হামলা হয়েছে।”

অভিযোগ মানতে চাননি এলাকার তৃণমূল নেতা তথা বাসন্তী পঞ্চায়েত প্রধান পারুল মণ্ডলের স্বামী শ্রীদাম মণ্ডল। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “এলাকায় খাল কাটার জন্য যুব তৃণমূলের নেতারা কমিশন দাবি করেন। সেই কমিশন দিতে অস্বীকার করায় পরিকল্পনা করে কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে।”

পঞ্চায়েত প্রধান পারুল মণ্ডল বলেন, “মাইকে প্রচার করে জবকার্ডধারীদের খাল কাটার কাজ করতে আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু অনেকেই কাজ করতে আসেননি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খাল কাটার কাজ শেষ করার জন্য কিছু ক্ষেত্রে যন্ত্রের সাহায্য নেওয়া হয়েছে।”

অন্য দিকে, সরকারি প্রকল্পের ঘর নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মারামারিতে গুরুতর জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন। দু’পক্ষের ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে ভাঙড়ের কাশীপুর থানার ভগবানপুর এলাকায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ভগবানপুর পঞ্চায়েতের প্রধান রেহেনা বিবির স্বামী তথা অঞ্চল সভাপতি ইব্রাহিম মোল্লা (বাপি) গোষ্ঠীর সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে বিবাদ রয়েছে ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য খয়রুল ইসলাম গোষ্ঠীর। শুক্রবার দু’পক্ষের মারামারি বেধে যায়। পঞ্চায়েত অফিসের কম্পিউটার, চেয়ার, টেবিল সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ। পুলিশ লাঠি চালিয়ে দু’পক্ষকে পঞ্চায়েত অফিস থেকে বের করে দেয়। পাকাপোল বাজারে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই গোষ্ঠীর লোকজন। পুলিশ আবারও লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

ইব্রাহিম বলেন, ‘‘সরকারি প্রকল্পের ঘরের তালিকা পঞ্চায়েত অফিসে জমা দেওয়া হচ্ছিল। সে সময়ে খাইরুল কিছু দুষ্কৃতীদের সঙ্গে নিয়ে পঞ্চায়েত অফিসে এসে চড়া হয়ে গালিগালাজ করতে থাকে। প্রতিবাদ করলে মারধর করে। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরও করেছে।’’

অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে খয়রুল বলেন, ‘‘প্রধান নিজে পঞ্চায়েতে আসেন না। বদলে তাঁর স্বামী সব কিছু করেন। আমি পঞ্চায়েত সদস্য। আমাকে না জানিয়ে আমার বুথের ঘর নিয়ে দুর্নীতি করছেন। প্রতিবাদ করতে গেলে আমাকে গালিগালাজ করে মারধর করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE