Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

যখন তখন হাজির হব, বললেন মন্ত্রী

সোমবার সকাল থেকে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে নিয়ে দেগঙ্গার বিভিন্ন এলাকায় ঘোরেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

পরিদর্শন: দেগঙ্গায় খাঁপুড়ে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। নিজস্ব চিত্র

পরিদর্শন: দেগঙ্গায় খাঁপুড়ে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। নিজস্ব চিত্র

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
দেগঙ্গা  শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৭ ০২:০৫
Share: Save:

জ্বরের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয় বলে নিজের বক্তব্যে অনড় মুখ্যমন্ত্রী। তবে নবান্নের উপর মহল থেকে যে তৎপরতার বার্তা পৌঁছচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনার প্রশাসনিক মহলে, তাতে ক্রমশই স্পষ্ট, জ্বর নিয়ে আর হেলাফেরা করতে রাজি নন তাঁরা।

সোমবার সকাল থেকে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে নিয়ে দেগঙ্গার বিভিন্ন এলাকায় ঘোরেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা এই এলাকাতেই সব থেকে বেশি। রোজই একাধিক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। খুব কম ক্ষেত্রেই ‘ডেঙ্গি’ বলে মানছে স্বাস্থ্য দফতর। তবে মৃত্যুমিছিল যে অব্যাহত, তা অস্বীকার করার উপায় নেই।

চিকিৎসকের অভাব, রক্তের রিপোর্ট দেরিতে আসা নিয়ে এ দিন মন্ত্রীকে ক্ষোভ জানান এলাকার মানুষ। বিকেলে উত্তর ২৪ পরগনা জেলাপরিষদে প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করে মন্ত্রী নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন, ‘‘সকলকে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে নামতে কাজে হবে। বুধবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমি এলাকায় থাকব। জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েতের সদস্য এবং কাউন্সিলরদের ঘরে-ঘরে যেতে হবে, স্বাস্থ্য শিবিরে উপস্থিত থাকতে হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘যখন-তখন যেখানে সেখানে আমি হাজির হব। একজন মানুষও যেন চিকিৎসা নিয়ে কোনও অভিযোগ যেন না করতে পারেন।’’

এ দিন সকালে সোয়াই শ্বেতপুরের খা’পুর স্কুলের একটি স্বাস্থ্যশিবিরে গিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়বাববু। দিন কয়েক আগে এখানে জ্বরে আক্রান্ত কাবেদুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য শিবিরের দায়িত্বে থাকা সীমা সরকার বলেন, ‘‘তিন দিনে চারশোর বেশি মানুষ এখানে চিকিৎসা করাতে এসেছেন।’’ জ্যোতিপ্রিয়বাবু ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রাঘবেশ মজুমদারকে ঘিরে আবেদ আলির মতো বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, ‘‘রক্ত পরীক্ষা করার পরে রিপোর্ট পেতে ৩-৪ দিন লেগে যাচ্ছে। তার মধ্যে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে।’’

বিশ্বনাথপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও যান জ্যোতিপ্রিয়বাবু। সেখানে এ ক’দিনে প্রায় ৬ হাজার মানুষ রক্ত পরীক্ষা করেছেন বলে জানতে পারেন। মহমম্দ কুতুবউদ্দিন অভিযোগ করেন, ‘‘প্রতিদিন দু’হাজার করে রোগী আসছে। অথচ চিকিৎসক এক-দু’জন।’’ আরও চিকিৎসক আনা দরকার বলে দাবি তোলেন সকলে।

বারাসতে জেলা পরিষদে বৈঠকে ক্ষোভ চাপা রাখেননি জ্যোতিপ্রিয়বাবু। রাঘবেশবাবু জানান, বারাসত জেলা হাসপাতাল ছাড়া ডেঙ্গি পরীক্ষার জন্য এলাইজা মেশিন কোথাও নেই। এ কথা শুনে নিজের বিধায়ক তহবিলের টাকায় হাবরা হাসপাতালে একটি এলাইজা মেশিন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লাগানোর ব্যবস্থা করতে বলেন মন্ত্রী। জেলা পরিষদের টাকায় বিশ্বনাথপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও একটি মেশিন লাগানোর ব্যবস্থা করেন সভাধিপতি রেহেনা খাতুন।

এ দিনের বৈঠকে অতিরিক্ত জেলাশাসক জানান, উপদ্রুত এলাকায় ১৫টি স্বাস্থ্যশিবির চলছে। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষদের সেই সব স্বাস্থ্য শিবিরে দেখভাল করার জন্য দায়িত্ব বণ্টন করেন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ গোস্বামী।

এরই মধ্যে এসেছে রাজনীতির প্রসঙ্গ। জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘দেগঙ্গা ব্লকে ১৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৩টি ছাড়া সবই বিরোধীদের। টাকা দেওয়া সত্ত্বেও তারা মশা মারার কামান কেনেনি। ব্লিচিয়ের বদলে আটা ছড়িয়েছে। তাই মানুষের এই বিপদ। এ বার কারও উপর ভরসা না করে নিজেরাই সব দেখভাল করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jyotipriya Mallick Deganga Dengue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE