প্রস্তুতি: হ্যাম রেডিয়োর
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে যোগাযোগ তৈরি করা, নিখোঁজদের বাড়ি খুঁজে দেওয়ার কাজ এর আগে তাঁরা অনেক করেছেন। এ বার ভোটের কাজেও ডাক পড়েছে তাঁদের। তবে নির্বাচনী দায়িত্ব সামলাতে হবে না। ভোট চলাকালীন যোগাযোগ ব্যবস্থা সামলাবেন হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবের সদস্যেরা।
বাংলাদেশ সীমান্তের বেশ কিছু জায়গায় মোবাইলের নেটওয়ার্ক নেই। অথচ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ, ঘণ্টায় ঘণ্টায় বুথ থেকে রিপোর্ট পাঠাতে হবে জেলাশাসকের দফতরে। এ ছাড়াও, যে কোনও অবস্থাতেও জেলাশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা দরকার। আগামী রবিবার এমন ৩১টি জায়গায় অস্থায়ী রেডিয়ো স্টেশন তৈরি করে কাজ করবে ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাব।
শেষ দফায় ভোট হবে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রের বেশ কিছুটা অংশ বাংলাদেশ সীমান্ত এবং সুন্দরবন এলাকায় পড়ে। এ রকম মোট ৩১টি জায়গাকে মোবাইল ‘শ্যাডো জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জেলা প্রশাসন। তার মধ্যে রয়েছে, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি, মিনাখাঁর বেশ কিছু এলাকা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ভোটের অনেক আগেই জেলা প্রশাসন হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে জানতে চেয়েছিল, মোবাইল শ্যাডো জোনে অস্থায়ী রেডিয়ো স্টেশন তৈরি করে বার্তা আদান প্রদান করা সম্ভব কিনা। ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস জানান, তার পরেই নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন জেলাশাসক।
উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক অন্তরা আচার্য জানান, মোবাইল শ্যাডো জোনের বুথগুলি থেকে জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরিতে অস্থায়ী রেডিয়ো স্টেশন তৈরিতে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে কমিশন। ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাব সেই ব্যবস্তা তৈরি করছে। ইতি মধ্যে বনগাঁ কেন্দ্রের বাগদায় ওই ব্যবস্থা সফলও হয়েছে।
তবে এ বারের ভোটে মোবাইল শ্যাডো জোন সব থেকে বেশি। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলিয়াখালি, লেবুখালি, মিনাখাঁ, ভান্ডারখালি, হিঙ্গলগঞ্জ এলাকার বুথ চত্বরে তৈরি হবে অস্থায়ী রেডিয়ো স্টেশন। একটি লম্বা বাঁশের মাথায় নিজেদের তৈরি অ্যান্টেনা বসিয়ে রেডিয়ো স্টেশন বানান অম্বরীশরা।
বারাসতে জেলাশাসকের দফতরে তৈরি হচ্ছে প্রধান কন্ট্রোল রুম। এ ছাড়া মিনাখাঁ বিডিও অফিসেও তৈরি হচ্ছে একটি কন্ট্রোল রুম। শুক্রবারই ৩১টি জায়গায় পৌছে যাবে হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবের দলগুলি। ভোটকর্মীরা বুথে পৌঁছনোর পর থেকে কাজ শুরু হবে অম্বরীশদের। সেই রিপোর্ট পাঠানো হবে জেলা সদরে। ভোটের দিন প্রতি ঘণ্টায় রিপোর্ট পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে মক পোল থেকে শুরু করে প্রচুর রিপোর্ট পাঠানো হবে প্রধান কন্ট্রোল রুমে। ইভিএম খারাপ হলে সব থেকে বেশি কাজে আসবে এই ব্যবস্থা। সঙ্গে সঙ্গে সেই খবর পাঠাতে হবে। তা না হলে সময়ে ভোট শুরু করা যাবে না।
সে জন্য পারিশ্রমিক নিচ্ছে না রেডিয়ো ক্লাবটি। বরং অস্থায়ী রেডিয়ো স্টেশন পিছু যোগাযোগ মন্ত্রকের অনুমতি নিয়ে হয়েছে। রেডিয়ো ক্লাবের কর্মীদের যাতায়াত এবং থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করছে জেলা প্রশাসন। স্টেশন পিছু লাইসেন্সের খরচ পড়েছে ২০০ টাকা। অম্বরীশ বলেন, ‘‘ওই টাকা আমরাই দিচ্ছি। ভোট উৎসবের শরিক হতে পারছি সেটাই যথেষ্ট।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy