ফাঁদে-পা। আব্দুল।— নিজস্ব চিত্র।
প্রথমবার প্রেমিকার সঙ্গে দেখা হবে বলে কথা!
রীতিমতো ফিটফাট হয়ে এসেছিল প্রেমিক। পরনে নীল রঙের গেঞ্জি, জিন্স। কথা ছিল, প্রেমিকাকে নিয়ে কাছেপিঠে কোনও সিনেমা হলে যাবে। ঠিক ছিল, প্রথমবার চার চোখের মিল হবে বনগাঁ স্টেশন চত্বরে। কী ভাবে প্রেমিকাকে চিনবে সে? তা-ও ঠিক ছিল। প্রেয়সী বলেছিল, সে পরে আসবে নীল রঙের চুড়িদার।
নির্দিষ্ট সময়ের অনেকটা আগেই স্টেশন চত্বরে চলে এসেছিল যুবক। উৎকণ্ঠা আর আগ্রহ তার চোখেমুখে। খুঁজতে খুঁজতে নীলাম্বরী তরুণীর পাশে দাঁড়িয়ে কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলে, ‘‘তুমি কি রিয়া?’’
এরপরেই অ্যান্টি ক্লাইম্যাক্স।
হঠাৎই ‘প্রেমিকা’ ও তাঁর সঙ্গে থাকা এক বান্ধবী যুবকের কলার চেপে ধরলেন। আরও কয়েকজন মুশকো লোক হাজির। সকলে মিলে টানতে টানতে যুবককে তোলা হল গাড়িতে। ততক্ষণে আব্দুল মণ্ডল বুঝে ফেলেছে, প্রেমের ফাঁদে পা দিয়ে আসলে সে পড়েছে পুলিশের জালে।
মঙ্গলবার আব্দুলকে গ্রেফতার করেছে বনগাঁ থানার পুলিশ। থানার এক মহিলা কনস্টেবলকে দিয়ে ফাঁদ পেতেছিল পুলিশ। তারা জানায়, একটি বাড়িতে চুরির অভিযোগে ধরা হয়েছে পূর্বপাড়ার আব্দুলকে। অগস্ট মাসের ওই ঘটনায় কয়েক ভরি সোনা-রুপোর গয়না, লক্ষাধিক টাকা, মোবাইল নিয়ে পালিয়েছিল সে, অভিযোগ এমনটাই।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, চুরি করা মোবাইলের সিম বদলে ফেলেছে দুষ্কৃতী। মোবাইলের আইএমইআই থেকে সেই নতুন নম্বরের সন্ধান পান তদন্তকারীরা। সেই মতো শুরু হয় নজরদারি।
আইসি সতীনাথ চট্টরাজের নির্দেশে, থানার এক মহিলা কনস্টেবল কাজে লেগে পড়েন। আব্দুলের মোবাইলে তিনি দু’বার মিস্ড কল দেন। শুরু হয় কথোপকথন।
ও প্রান্তের মহিলা কণ্ঠ নিজের পরিচয় দেয়, ‘রিয়া অধিকারী’ বলে। বাড়ি তার হাবরায়। এ প্রান্তের সেয়ানা যুবক নিজের নাম বলে ‘রাজু বিশ্বাস।’ তারও বাড়ি নাকি হাবরায়।
এই করতে করতেই পরিচয় গাঢ় হয়। দিন তিনেক আশনাই চলার পরে প্রেমিক প্রবর তখন প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করার জন্য উতলা। ঠিক হয়, মঙ্গলবার বনগাঁ স্টেশন চত্বরে দেখা হবে দু’জনের।
এ দিন বনগাঁ থানায় দাঁড়িয়ে আব্দুল বলে, ‘‘এটটুসখানি প্রেমই তো চেয়েছিলাম। বদলে মিলল হাতকড়া!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy