Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বাগদায় যুবক খুনে ধৃত মূল অভিযুক্ত

এক আত্মীয়কে খুন করে মাটিতে পুঁতে ফেলার অভিযোগে পুলিশ খুঁজছিল তাঁর ছেলেকে। আর এক আত্মীয়ার সঙ্গে ত্রিকোণ প্রেমের জেরেই খুন করেছে ছেলে, এমনটাই দাবি করছে পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে ছেলেকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিতে সাহায্য করলেন মা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাগদা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৫ ০১:৪৩
Share: Save:

এক আত্মীয়কে খুন করে মাটিতে পুঁতে ফেলার অভিযোগে পুলিশ খুঁজছিল তাঁর ছেলেকে। আর এক আত্মীয়ার সঙ্গে ত্রিকোণ প্রেমের জেরেই খুন করেছে ছেলে, এমনটাই দাবি করছে পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে ছেলেকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিতে সাহায্য করলেন মা।

বাগদার রাঘবপুরের বাসিন্দা কার্তিক বারুইয়ের খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত অভিজিত্‌ রায়কে শুক্রবার রাতে স্থানীয় কমলাবাস গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিজিতের বাড়ি ওই এলাকাতেই। শনিবার তাকে বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনার পরে অভিজিত্‌ বাঁকুড়ায় পালিয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘ দিন বাবা-মায়ের সঙ্গে তার কথা হচ্ছিল না। বাড়ির লোকজনকে নিয়ে তার চিন্তা বাড়ছিল। বাবা-মার খোঁজ নিতেই সে শুক্রবার রাতে বাড়িতে ফেরে। বাবাকে দেখতে না পেয়ে মা অনিতার কাছে জানতে চায়, বাবা কোথায় গিয়েছেন। মা জানান, অভিজিতের বাবা গিয়েছেন পিসির বাড়িতে। কিন্তু সে সময়ে পুলিশ অভিজিতের বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। সে কথা অভিজিতের মা জানাননি ছেলেকে। সে কথা গোপন করায় পুলিশের অভিজিত্‌কে ধরতে সুবিধা হয় বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে এলাকার বাসিন্দারা তাকে ধরে পুলিশকে খবর দেয়।

খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ আগেই চম্পা রায় ও সুকান্ত রায় নামে স্থানীয় দুই বাসিন্দাকে গ্রেফতার করেছিল। শনিবার অভিজিতের পাশাপাশি সুকান্ত ও চম্পাকেও আদালতে তোলা হয়। বিচারক সুকান্তকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে ও চম্পাকে জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

১৩ মার্চ সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন কার্তিক। তদন্তে নেমে পুলিশ সুকান্ত ও চম্পাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জেরায় সুকান্ত জানায়, কার্তিককে খুন করা হয়েছে। গত ১৫ মার্চ পুলিশ সুকান্তের সহযোগিতায় স্থানীয় হুলোরঘাট গ্রামের একটি বাগান থেকে মাটি চাপা দেওয়া অবস্থায় কার্তিকের দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, চম্পার সঙ্গে বিবাহ বর্হিভূতি সম্পর্ক ছিল অভিজিত্‌ ও কার্তিকের। ওই দুই যুবক সম্পর্কে চম্পার দেওর। ত্রিকোণ প্রেম নিয়ে দুই যুবকের মধ্যে তিক্ততা চরমে পৌঁছয়। পুলিশের দাবি, কার্তিককে সরিয়ে দেওয়ার ফন্দি আঁটে অভিজিত্‌। সেই মতো, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় কার্তিককে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় দত্তফুলিয়া থেকে মদ কিনে আনে তারা। বাগানে বসে মদ খাওয়ানো হয় কার্তিককে। অভিযোগ, কার্তিক নেশার ঘোরে বেসামাল হয়ে পড়লে মাথায় হাতুড়ির ঘা মেরে তাঁকে খুন করা হয়। দেহ পুঁতে ফেলা হয় মাটিতে। গোটা ঘটনার সময়ে অভিজিতের সঙ্গেই ছিল সুকান্ত।

অভিজিত্‌ খুনের কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি তদন্তকারী অফিসারদের। বনগাঁর এসডিপিও বিশ্বজিত্‌ মাহাতো বলেন, “অভিজিত্‌ পুলিশকে জানিয়েছে, চম্পার সঙ্গে তার আট বছরের সম্পর্ক। কার্তিক কিছু দিন ধরে মোবাইলে চম্পার সঙ্গে কথা বলছিল। তা রেকর্ড করে পরে অভিজিত্‌কে শোনাত কার্তিক। যা মেনে নিতে পারেনি অভিজিত্‌।” পুলিশ জানিয়েছে, শুধু মোবাইলে কথা বলা নয়, চম্পাকে সাইকেলে চাপিয়ে অভিজিতের সামনে দিয়েও কার্তিক যাতায়াত করত। ঘটনার দিন মদ খাওয়ার সময়েও কার্তিক মোবাইলে অভিজিতের সামনেই চম্পার সঙ্গে কথা বলে। এ সব আর সহ্য করতে পারেনি অভিজিত্‌।

দুর্ঘটনায় মৃত্যু। পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল স্বাস্থ্যকর্মীর। মৃতার নাম নবনীতা বিশ্বাস রায় (৩৬)। বাড়ি বহরমপুরের মধুপুর এলাকায়। গত শুক্রবার কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে নবগ্রাম থানার শেখদিঘির কাছে নিয়ন্ত্রণ হারায় তাঁদের গাড়ি। তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে শনিবার সকালে বারাসতের কাছে তাঁর মৃত্যু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE