গত কয়েক মাসে জেলায় বন্ধ করে দেওয়া নার্সিংহোমগুলির তালিকার শীর্ষে রয়েছে কাকদ্বীপ মহকুমা। অগ্নি নির্বাপণ লাইসেন্স এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র না থাকায় বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে একাধিক নার্সিংহোমকে। কিন্তু শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে তাঁদেরও কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেন নার্সিংহোম মালিকেরা।
প্রশাসনিক বৈঠকে আগেও কাটমানি খাওয়ার অভিযোগ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে নার্সিংহোম মালিকদের অভিযোগ, অগ্নি নির্বাপণ দফতরের ঠিক করে দেওয়া ঠিকাদারেরাই প্রচুর টাকা চাইছে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। আর সেখানেই চলছে কাটমানির রাজত্ব।
মুখ্যমন্ত্রী অবিলম্বে নার্সিংহোম মালিকদের এই সমস্যা দেখার কথা বলেছেন দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। একই সঙ্গে, মানবিক হয়ে কম টাকায় চিকিৎসা পরিষেবা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। নার্সিংহোমগুলিকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা আপনাদের শত্রু নই, বন্ধু। ঠিক মতো চালান, যাতে বাচ্চা বিক্রির চক্র গজিয়ে না ওঠে, সে দিকে নজর রাখুন।’’
স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ হল, ১০টি শয্যার বেশি নার্সিংহোমগুলিতে ৪০ হাজার লিটারের জলের ট্যাঙ্ক বসাতে হবে। সঙ্গে থাকতে হবে আধুনিক অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা। কিন্তু অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা বসাতে গিয়েই বিপদে পড়ছেন অনেক নার্সিংহোম মালিক, অভিযোগ এমনটাই। তাঁদের দাবি, আড়াই থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দাবি করছে দমকল দফতরের তালিকাভুক্ত ঠিকাদারেরা।
কাকদ্বীপ নার্সিংহোম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা সুনীল খাঁড়া বলেন, ‘‘আমরা বাইরে থেকে হিসেব নিয়ে দেখেছি, ছোট ছোট হাসপাতালগুলিতে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকায় সরকারের বলে দেওয়া নিয়মেই এই ব্যবস্থা করা সম্ভব। কাটমানির জন্য কোনও টাকা আমরা দিতে পারব না।’’ নার্সিংহোম মালিকদের অভিযোগ, তাঁরা বিধি মেনেই নিজেদের ঠিকাদার দিয়ে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা বসাতে আগ্রহী। তা দমকল দফতর খতিয়ে দেখেই ছাড়পত্র দিক। না হলে দফতরের ঠিকাদার কম টাকায় কাজ করুক।
ও দিকে, ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট আইনের নতুন সংশোধনী অনুসারে, উপকূল এলাকার নার্সিংহোমগুলির জন্য আলাদা করে একটি নো অবজেকশন সার্টিফিকেট চাওয়া হচ্ছে। জীববৈচিত্র্যের জন্য বিপদ সংকুল এলাকায় হাসপাতালের বর্জ্য নিক্ষেপ করার ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে। অভিযোগ এসেছে, মহকুমার বেশিরভাগ নার্সিংহোম তাদের হাসপাতাল বর্জ্য বিভিন্ন খালে ফেলে দেওয়ায় সেগুলিতে দূষণ ছড়াচ্ছে। তবে নার্সিংহোম মালিকদের দাবি, কারা এই শংসাপত্র দেবে, তা বোঝা যাচ্ছে না। তাই বার বার আবেদন করেও লাইসেন্স মিলছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy