প্রতীকী ছবি।
আমপানের দাপটে নদীবাঁধ ভেঙে বা কূল ছাপিয়ে বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। নোনা জলে গাছপাতা, গবাদি পশুর দেহ মিলেমিশে পড়ে থেকে দূষিত হয়েছে জল। বহু গ্রামে এখনও জলকাদা পুরো শুকোয়নি। এই পরিস্থিতিতে চর্মরোগ, বমি, পায়খানার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর থেকে রোগের ওষুধ দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। পানীয় জলের জন্য বিভিন্ন এলাকায় টিউবওয়েল পোঁতার কাজ শুরু হয়েছে।
বসিরহাট মহকুমা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আমপান পরবর্তী অবস্থায় এখনও সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অনেক গ্রামে মানুষ বাঁধ বা উচুঁ রাস্তার উপরে দিন কাটাচ্ছেন। নোংরা জল-কাদা মাখার ফলে চর্মরোগের শিকার হচ্ছেন। হাসনাবাদের ঘূর্ণি গ্রামের বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘বাঁধ মেরামত হলেও জলকাদায় ঘরে ঢোকা যাচ্ছে না। রাস্তার উপরে পলিথিনের নীচে কাটাতে হচ্ছে। টিউবওয়েল নোনা জলের তলায় থাকায় জল পানের অযোগ্য। জল আনতে নোংরা জলকাদা ভেঙে দেড় কিলোমিটার দূরের গ্রামে যেতে হচ্ছে।’’ মিনাখাঁর বিদ্যাধরী নদীর বাঁধ ভেঙে আটপুকুর, মিনাখাঁ, মোহনপুরে পুকুর নোনা জলে ভাসে। ডুবেছিল নলকূপ। বাঁধ মেরামতি হলেও এখনও ডুবে যাওয়া পুকুরে রয়ে গিয়েছে নোনা জল। গাছের পাতা-লতা পড়ে সেই জল দূষিত হয়েছে। চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে এই সব এলাকাতেও। শোভন হালদার বলেন, ‘‘পুকুর এবং নলকূপের জল ব্যবহার করায় চর্মরোগ দেখা দিচ্ছে।’’ মিনাখাঁ বিডিও শেখ কামরুল ইসলাম জানান, ‘‘প্লাবিত এলাকায় পানীয় জলের নলকূপ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে।’’
রূপমারি, ন্যাজাট, বাউনিয়া, বিশপুর-সহ প্লাবিত এলাকায় দূষিত জলবাহী রোগের লক্ষণ, চর্মরোগ দেখা যাচ্ছে। হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সুদীপ মণ্ডল, সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো জানান, গ্রামে গ্রামে স্বাস্থ্যকর্মীরা ওষুধ দিচ্ছেন। স্বাস্থ্যশিবির করে রোগী দেখা হচ্ছে। দক্ষিণ রূপমারির আশাকর্মী মানসী মণ্ডল বলেন, ‘‘জমা জলের মধ্যে দিয়ে যাওয়া আসা করায় প্রচুর পরিমাণে মানুষের শরীরে ঘা হতে দেখা যাচ্ছে।’’ হিঙ্গলগঞ্জের বিএমওএইচ অঙ্কুর কর্মকার জানান, ‘‘চর্মরোগ এবং ডায়েরিয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে ওষুধ মজুত আছে। স্বাস্থ্য শিবিরে চিকিৎসক গিয়ে রোগী দেখছেন। মানুষকে সচেতন করতে মাইকে প্রচারও করা হচ্ছে।’’ বসিরহাট জেলা হাসপাতালের সুপার শ্যামল হালদার জানান, নানা চর্মরোগ নিয়ে বহির্বিভাগে দিনে অন্তত দেড়শো রোগী আসছেন। দেড় বছরের একটি শিশুর রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি পজ়িটিভ মিলেছে বলেও জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy