ছবি: সংগৃহীত
তাঁর অপসারণ নিয়ে বৈঠক ডেকে বসে আছেন খোদ পুরপ্রধানই। সে বৈঠক হওয়ার কথা জানুয়ারির ২০ তারিখ। সেই একই বিষয়ে বৈঠক ডাকলেন ভাটপাড়া পুরসভার তিন কাউন্সিলর। সেই বৈঠক হওয়ার কথা বৃহস্পতিবার।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপির কাউন্সিলরেরা ওই বৈঠকে হাজির হবেন না। তার ফলে তৃণমূলের এক তরফা ভোটে অপসারিত হতে পারেন পুরপ্রধান সৌরভ সিংহ। কিন্তু তৃণমূলের ডাকা ওই বৈঠকের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।
ভাটপাড়া পুরসভা নিয়ে অচলাবস্থা শুরু হয়েছে মাস দেড়েক আগে। লোকসভার আগে পর্যন্ত পুরসভা তৃণমূলের দখলে ছিল। পুরপ্রধান ছিলেন এলাকার বিধায়ক অর্জুন সিংহ। লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে ব্যারাকপুর কেন্দ্রের প্রার্থী হয়ে যান তিনি। তারপরেই অনাস্থা এনে পুরপ্রধানের পদ থেকে অপসারিত করা হয় অর্জুনকে।
সেই সময়ে নতুন করে পুরপ্রধান নির্বাচন হয়নি। কিন্তু লোকসভা ভোটে বিজেপি জিতে যাওয়ার পরে এলাকার রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে যায়। পুরপ্রধান নির্বাচনের তৃণমূল আর হালে পানি পায়নি। গত জুনে ভোটে জিতে পুরপ্রধান হন অর্জুনের ভাইপো সৌরভ। কিন্তু মাস কয়েক যেতে না যেতেই তৃণমূল ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। হাতছাড়া হওয়া সবকটি পুরসভাই দখল করে তাঁরা। বাকি রয়েছে ভাটপাড়া। সেখানেও তাঁরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে দাবি তৃণমূলের। সৌরভের বিরুদ্ধে অপসারণের চিঠিও জমা দিয়েছে তাঁরা।
নিয়ম অনুযায়ী, অপসারণের চিঠি জমা পড়লে তার ১৫ দিনের মধ্যে পুরপ্রধানকে সভা ডাকতে হয়। তিনি না ডাকলে পরের সাত দিনের মধ্যে সভা ডাকতে পারেন উপপুরপ্রধান। তিনি সভা না ডাকলে তিন কাউন্সিলর আরও তিন দিন সময় পান ওই সভা ডাকার।
তিন কাউন্সিলরের ডাকা সভার যে চিঠি প্রশাসনের কাছে জমা পড়েছে, তাতে বলা হয়েছে যে পুরপ্রধান এবং উপপুরপ্রধান কেউই সময়ে বৈঠক ডাকেননি। প্রশ্ন ছিল সভা ডাকায় সৌরভের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে। সৌরভ বৈঠক ডাকার যে চিঠি কাউন্সিলরদের পাঠান, তার কয়েক দিনের মধ্যে উপ পুরপ্রধান সোমনাথ তালুকদার পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে সচিবকে চিঠি পাঠিয়ে বলেন, ‘‘এই ধরvsর বিশেষ বৈঠক ডাকার জন্য এক মাস সময় কোনও অবস্থাতেই পাওয়া যায় না। পুর ও পঞ্চায়েত আইনের কোথাও এমন নজির নেই। ফলে পুরপ্রধানের ওই চিঠিকে অবৈধ ঘোষণা করে তাঁকে তলবি সভা ডাকার অনুমতি দেওয়া হোক।’’ কিন্তু সেই চিঠির জবাব আসেনি।
লোকসভা ভোটের পরে সিংহভাগ তৃণমূল কাউন্সিলর বিজেপির দিকে ভিড়লে সোমনাথও বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তিনিই উপ পুরপ্রধান থেকে যান। বর্তমানে তিনি ফের বিজেপি সঙ্গ ছেড়ে তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর কথাও হয়েছে। যে কোনও সময় তিনি তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন। ফলে কাউন্সিলরের সংখ্যায় তৃণমূল বিজেপির থেকে অনেকটাই এগিয়ে যাবে।
আবার নিয়ম অনুযায়ী, পুরপ্রধান নির্বাচনের তলবি সভা উপ পুরপ্রধানকেই ডাকতেই হয়। সোমনাথ যোগ দিলে তৃণমূলের সেই পথ আরও সহজ হবে বলে মনে করছে দলের নেতৃত্বের একাংশ। অর্জুন সোমবারই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তৃণমূলের ডাকা বৈঠককে তাঁরা চ্যালেঞ্জ জানাবেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আইনি পথেই এর মোকাবিলা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy