পরিকাঠামো-বেহাল: মাথার উপরে বিপজ্জনক বিদ্যুতের তার। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
আগুন লেগেছে বাজারের ভিতরের দোকানে। ঘটনাস্থলে দ্রুত হাজির হয়েছে দমকল। কিন্তু আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে পারছেন না তাঁরা। কারণ, ঘিঞ্জি পরিবেশ আর সংকীর্ণ গলি দিয়ে ভিতরে যাওয়ার রাস্তা নেই দমকলের গাড়ির। বড় পাইপ লাগিয়ে যতক্ষণে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করলেন কর্মীরা, ততক্ষণে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাই মেনে পড়েছেন ময়দানে। আর আগুনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।
বেশ কিছু দিন আগে ওই পরিস্থিতি দেখা গিয়েছিল বনগাঁ শহরের ট বাজারে। বাজারের সঠিক পরিকাঠামোর অভাবে কাজ করতে গিয়ে পদে পদে ধাক্কা খেয়েছিলেন দমকলকর্মীরা। আয়ত্তের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসায় সেদিন বড়সড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ঘটনার এতদিন পরেও শিক্ষা নেয়নি ট বাজার।
একদিকে বনগাঁ-চাকদহ সড়ক। অন্যদিকে ইছামতী নদী। এর মাঝে অবস্থিত ট বাজারের প্রায় ৩০০টি দোকান রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় হাজার চারেক মানুষ ওই বাজারে যান। বাজারে ঢোকার তিনটি গলি। ওই গলির মধ্যেই পসরা সাজিয়ে বসেছেন মাছ এবং আনাজ ব্যবসায়ীরা। আপৎকালীন পরিস্থিতি সেখান দিয়ে কী করে ঢুকবে দমকলের গাড়ি, কীভাবেই বা বেরিয়ে আসা যাবে, তা জানেন না ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই।
বহুদিনের পুরনো ওই বাজারে এখনও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। পরিষ্কার হয়নি বাজারের ভিতরের ঘিঞ্জি পরিবেশ। সম্প্রতি বাজারের গিয়ে দেখা গেল, গোটা পরিবেশ এখনও রয়েছে ঘিঞ্জি। পাশপাশি সব দোকানপাট। বাজারের ভিতরে রয়েছে মাছ এবং চালের দোকান। চাল নিয়ে যাওয়ার জন্য ভ্যানরিকশা ঢুকলে যাতায়াতের জায়গা থাকে না।
অনেক দোকানের উপরেই প্লাস্টিকের ছাউনি দেওয়া। সূর্যের আলো ঠিকমতো প্রবেশ করতে না পারায় দিনের বেলাতেই আলো জ্বালিয়ে ব্যবসা করছেন ব্যবসায়ীরা। বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে বিদ্যুতের তার। আর সেখানেই গ্যাস ওভেন এবং স্টোভ জ্বালিয়ে চা তৈরি হচ্ছে। কেউ কেউ দাহ্য পদার্থের পাশেই বিড়ি-সিগারেটে সুখটান দিচ্ছেন।
বাজার সংলগ্ন এলাকায় কয়েকটি পরিবার বসবাস করেন। স্থানীয় বাসিন্দা তথা দমদম বিভাগের কর্মী রাধারমণ পাল বলেন, ‘‘সব সময় আতঙ্কে থাকি। দমকলের গাড়ি বাজারের মধ্যে ঢোকানো যায় না। একমাত্র ভরসা পাইপ লাইন।’’
তাঁর পরামর্শ, ‘‘নদীর পাশে চাতাল তৈরি করে স্থায়ী পাম্পসেট বসানো গেলে সমস্যা অনেকটাই মিটে যেত।’’
তবে সম্প্রতি বাজার সংলগ্ন বনগাঁ-চাকদহ সড়কের অস্থায়ী দোকান পাট বসত। বনগাঁ পুরসভার তরফে সে সব তুলে দিয়ে পুর্নবাসন দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, রাস্তাটি সংস্কার করে আরও চওড়া করা হয়েছে। ফলে আগে যে রাস্তায় বড় গাড়ির যাতায়াতে সমস্যা হতো, এখন তার সুরাহা হয়েছে। বাজারের ভিতরে ঢুকতে না পারলেও সলগ্ন বড় রাস্তায় দমকলের গাড়ি যেতে পারবে।
ট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুভাষ পোদ্দার বলেন, ‘‘পুরসভার তরফে বাজারের বাইরের রাস্তা থেকে দোকানপাট তুলে দেওয়া হয়েছে । ফলে অনেক সহজেই মানুষ বাজারে যেতে পারছেন। তবে বাজারে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এখনও নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy