পথে-পথে: চলছে আগাছা পরিষ্কার। নিজস্ব চিত্র
ঘরের খেয়ে বনের মশা তাড়াচ্ছেন বসিরহাটের বিকু।
ভোর হলেই স্প্রে মেশিন নিয়ে মুখে মাস্ক বেঁধে বেরিয়ে পড়ছেন বনে-বাদাড়ে। কখনও তাঁকে দেখা যাচ্ছে নিকাশি নালার সামনে, কখনও বা জঙ্গলে আগাছায় ভরা এলাকায়। বসিরহাটের সাঁইপালায় দেশবন্ধু পাড়ার বাসিন্দা ওই যুবকের নাম সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় ওরফে বিকু এখন একাই একটি বাহিনী।
মশা মারতে নিজের গাঁটের কড়ি খরচ করে চুন, ব্লিচিং, তেল কিনে স্প্রে করেন তিনি। বছর আটচল্লিশের বিকুর এই উৎসাহ যুবকদেরও হার মানায়। এলাকায় জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে দেখে স্বাস্থ্য দপ্তরের ঠিকাদারি কাজে যুক্ত বিকু মশা মারতে স্প্রে মেশিন নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ডেঙ্গিতে আক্রান্ত অনেকেই। গ্রাম ছেড়ে ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে পুরসভা এলাকায়। তাই আর চুপ করে বসে থাকতে পারলাম না।’’
এই অবস্থায় পুর এলাকার নিকাশি নালার পাশে থাকা জঙ্গল সাফ করা জরুরি। জরুরি মশা মারার ব্যবস্থা করা। তাই কারও সাহায্যের তোয়াক্কা না করে নিজেই মশা মারতে নেমে পড়েছেন সিদ্ধার্থবাবু। পুরসভার যে সব এলাকায় জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন মানুষ, সেখানেই মশা নিধনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা রাজীব দাশগুপ্ত, সঞ্জিত সেন, বিমল বসু, অমিত সরকার জানান, শুধু মশা মারাই নয়, অসুস্থ কারও জন্য হাসপাতালে রাত জাগতে হলে, কারও আপদে-বিপদে এক ডাকে পাশে পাওয়া যায় বিকুকে। ক’দিন আগে ইছামতী নদীর পাড়ে স্থানীয় টাউনহল এলাকায় একটি সিনেমা হলে আগুন লাগে। ধোঁয়া দেখে আগুন নেভাতে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা যায় বিকুকে।
কিন্তু একা কি পারবেন গোটা শহরের মশার বংশ শেষ করতে? মশা মারার তেল স্প্রে করতে করতে বিকু বললেন, ‘‘রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্লাবগুলিকে লাখ টাকা দেওয়ার পাশাপাশি যদি একটি যদি একটি করে স্প্রে মেশিন দেওয়া হত, তা হলে স্থানীয় যুবকদের অনেকেই এই কাজ করতে পারতেন। তা হলে হয়তো এত মানুষকে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মরতে হত না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy