দিনের পর দিন রোগী নিয়ে ঢোকার সময়ে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতাল চত্বরে যত্রতত্র বসা বাজারের জন্য নাজেহাল হচ্ছিলেন সাধারণ মানুষ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাঁরা উদাসীনতার অভিযোগও তুলতেন। শুক্রবারই এ নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছিল। তার পর এ দিন পুলিশের সাহায্য নিয়ে সেই বাজার এবং হকারদের সরিয়ে দিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়াও, রোগী এবং তাঁদের সঙ্গে আসা লোকজনের সুবিধার জন্য আরও কয়েকটি পদক্ষেপ তাঁরা করতে চলেছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
দীর্ঘদিন পরে হাসপাতালের মূল গেট থেকে জরুরি বিভাগের গেট পর্যন্ত এলাকাকে অন্য চেহারায় দেখলেন রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা। স্বচ্ছন্দে যাতায়াত করতে পারায় তাঁরা খুশি। হাসপাতালের সুপার তথা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক আনোয়ার হোসেন বলেন, “আমরা এর আগেও চেষ্টা করেছি। এ দিন আরও একবার হাসপাতালের ভিতর থেকে হকারদের তুলে দেওয়া হল। পুলিশকে বলা হয়েছে নজর রাখতে।”
তবে, রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়-স্বজনেরা চান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে ভাবে হকারদের সরিয়ে দিলেন, একই ভাবে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স এবং দালালের দাপটের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হোক। শহর জুড়ে অসংখ্য নার্সিংহোম রয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য রোগীর সঙ্গে আসা লোকজনকে মগজধোলাই করে দালালেরা নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ।
সমস্যার কথা মেনে নিয়েছে হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি। এ নিয়ে এ দিনই সমিতির বৈঠকও হয়। সমিতির চেয়ারম্যান তথা ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক দীপক হালদার বলেন, “আমরা হাসপাতাল চত্বর পুরোপুরি দালাল এবং হকারমুক্ত করতে চাই। তার জন্য পদক্ষেপ করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। পুলিশ মোতায়েন করা হবে। বিধায়কের তহবিল থেকে কেনা আরও দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স মার্চ মাস থেকে হাসপাতালে চালু করা হবে। তা হলে রোগীর পরিবারকে আর বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের উপরে ততটা নির্ভর করতে হবে না।”
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, বর্তমানে সেখানে একটি নতুন রাত্রিকালীন বিশ্রামাগার তৈরি হচ্ছে। অগস্টের মধ্যে তা চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তা হয়ে গেলে হাসপাতালের ভিতরে বর্তমানে পুরসভার তত্ত্বাবধানে যে বিশ্রামাগারটি চলে তা পুলিশকর্মীদের ছেড়ে দেওয়া হবে। যাতে হাসপাতালে হকার এবং দালালদের উপর নজরদারি করা পুলিশের পক্ষে সহজ হয়। বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের দাপট কমাতেও শীঘ্রই একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাতে ওই সব অ্যাম্বুল্যান্স-মালিকদের বলা হবে, অসুস্থ মা ও শিশুকে পরিবহণের জন্য সরকারি প্রকল্প ‘নিশ্চয় যান’ হিসেবে রাখতে চাইলে ওই সব অ্যাম্বুল্যান্স হাসপাতাল চত্বরে রাখা হবে। না হলে তাদেরও সরতে হবে। হাসপাতাল চত্বরে একটি এটিএম কাউন্টার তৈরির জন্য বিভিন্ন ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা চলছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সুপার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy