সহপাঠীর বিয়ে ঠিক হয়েছে শুনে এগিয়ে এসেছিল বন্ধুরাই। সমস্বরে বলে উঠেছিল, “সবে ক্লাস এইট। এখনই বিয়ে হয় নাকি!”
শুধু বিস্ময় নয়, স্থানীয় কোস্টাল থানায় ফোন করে তাদের আর্তি ছিল, অষ্টম শ্রেণির সহপাঠীর বিয়ে পাকা, ‘একটা কিছু করুন স্যার!’
সাড়া দিয়েছিল পুলিশ। সন্ধ্যার মুখেই ছোট মোল্লাখালির রজতজুবিলি পাড়ায় পৌঁছে গিয়েছিলেন ওসি হিমাংশু বিশ্বাস। তার পর মেয়ের বাবা আর তার হবু শ্বশুরকে থানায় তুলে এনে মুচলেকা লিখিয়ে নিয়েছিলেনএখনই নয়। প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পরেই বিয়ে হবে ওই নাবালিকার।
ঘটনাটি বুধবার রাতের। সুন্দরবনের ছোট মোল্লাখালির রজতজুবিলি পাড়ায় বিয়ের তোড়জোড় সারা। সন্ধ্যার মুখে দু-একজন করে আসতেও শুরু করেছিলেন নিমন্ত্রিতরা। সেজেগুজে কনে তখন বরের অপেক্ষায়। কিন্তু বর নয়, সন্ধ্যায় বাড়ির সামনে এসে দাঁড়াল পুলিশের জিপ। যা শুনে পড়শি গ্রাম লাহিড়িপুরের সাধুপুর থেকে রওনা দেওয়া বছর পঁচিশের বর ফিরে গেলেন মাঝপথ থেকেই। পুলিশ অবশ্য পাত্রের বাবাকে থানায় তুলে এনে লিখিয়ে নেয় মুচলেকা।
রজতজুবিলি হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীটির অবশ্য এ বিয়েতে তেমন আপত্তি ছিল না। সে জানায়, “পড়াশোনা করার ইচ্ছা ছিল ঠিকই কিন্তু বাড়ির অবস্থার কথা ভেবে বিয়েতে আপত্তি জানাইনি।” পাত্রীর বাবা বলেন, “আমি এত নিয়মকানুন জানতাম না। ভেবেছিলাম চোদ্দ বছর বয়স হয়েছে, মেয়ে বড় হয়ে গিয়েছে। তাই বিয়ে ঠিক করেছিলাম।” তবে পুলিশের কাছে তিনি অবশ্য জানিয়েছেন, আপাতত মেয়ের বিয়ে দেওয়ার ‘ঝক্কি’ আর নেবেন না তিনি। বলছেন, “এত ঝক্কি জানলে কী আর মেয়ের বিয়ে দিতাম। আঠারো বছর হোক তখন ভাবা যাবে।” বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয় ওই ছাত্রীকে। আপাতত তাকে কাউন্সিলিংয়ের জন্য হোমে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy